ছলে বাহিনীর প্রধানকে গ্রেপ্তারে টেকনাফের পাহাড়ে র‍্যাবের অভিযান

আইন আদালত জাতীয় মফস্বল

বিশেষ প্রতিনিধি

কক্সবাজারের টেকনাফের দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় ছলে বাহিনীর প্রধানকে গ্রেপ্তারে চলছে র‍্যাবের অভিযান। শুক্রবার রাতে এই তথ্য জানান র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

তিনি বলেন, টেকনাফের বাহারছড়া পাহাড় এলাকায় ডাকাত বাহিনীর প্রধান হাফিজুর রহমান ওরফে ছলে উদ্দীনকে গ্রেপ্তারে অভিযান চালাতে গেলে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের সঙ্গে র‍্যাবের গোলাগুলি শুরু হয়। যা এখনও চলমান রয়েছে।

অপহরণ ও ডাকাতির ঘটনায় কক্সবাজারের আতঙ্ক এখন ‘ছলে বাহিনী’। পরপর বেশ কয়েকটি ঘটনায় এই বাহিনীর জড়িত থাকার বিষয়টি সামনে আসে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একাধিক সংস্থাও এই বাহিনীর প্রধান হাফিজুর রহমান ওরফে ছলেহ উদ্দিন ও তার সঙ্গীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালিয়ে আসছে।

আরসার ছায়ায় তৎপর সশস্ত্র ‘ছলে বাহিনী’

গত মঙ্গলবার পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন কক্সবাজার সফরে যান। তিনি মাঠ পর্যায়ের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানে রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও কক্সবাজার এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির বিষয় উঠে আসে।


ছলে বাহিনীর প্রধান ছলে উদ্দীন। ছবি-সংগৃহীত

একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, ছলে বাহিনীর প্রধান ছলে উদ্দিনের বাবা মো. শফি ও মা লতি বানু বেগম। মিয়ানমারের নাগরিক হলেও তিনি গোপনে ক্যাম্পে এসে নানা অপরাধে জড়ান। স্থানীয়দের কাছে সে সালেহ উদ্দিন নামেও পরিচিত। এক সময় তার ঠিকানা ছিল জামতলী ক্যাম্পের এইচ-ব্লকে। আরাকান স্যালভেশন আর্মির (আরসা) ছায়ায় অপহরণ, ডাকাতি ও মাদক কারবারে জড়িত ছলে বাহিনী।

আরেক কর্মকর্তা জানান, কক্সবাজারের বেশ কিছু এলাকায় ছলে উদ্দিনের একক আধিপত্য। সে এলাকাগুলো হলো– বাহারছড়ার নোয়াখালী পাড়া, জাহাজপুরা, বড় ডেইল পাড়া, কচ্ছপিয়া পাড়া, হলবনিয়া পাহাড় ও শিলখালী পাহাড়। ছলে বাহিনীতে সশস্ত্র সদস্য রয়েছে ১২-১৫ জন। তাদের মধ্যে কেউ কেউ জুম্মাপাড়া ও নেচারি পার্কে থাকে। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রায়ই কক্সবাজারে মহড়া দেয় ছলের সশস্ত্র বাহিনী।

আরেকটি দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, ছলে উদ্দিন মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডে মানব পাচারেও জড়িত। মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে সে সমুদ্রপথে কক্সবাজার থেকে মানব পাচার করছে। সে তালিকাভুক্ত রোহিঙ্গা নয়। মিয়ানমার থেকে অবৈধ পথে গোপনে বাংলাদেশে আসে। দলবলসহ অপরাধ ঘটানোর পর ফের মিয়ানমার পালায়। একাধিকবার তাকে গ্রেপ্তারে অভিযান চালানো হলেও ধরা যায়নি। একাধিক সংস্থার নিশানায় দুর্র্ধষ এই রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *