স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর
গ্রেপ্তারকৃত প্রতারক
জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) পরিচয়ে ভুয়া নিয়োগ, আইডি কার্ড প্রশিক্ষণ প্রদান করে বিভিন্ন জেলা থানায় পোস্টিং, বদলী ও পদোন্নতি দিয়ে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে এক দম্পতি ও দুই শ্যালিকাসহ ৬ প্রতারককে গ্রেপ্তার করেছে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) গোয়েন্দা টিম। এসময় তাদের কেন্দ্র থেকে প্রতারণার শিকার দুই কিশোরীকে উদ্ধার এবং ইলেকট্রিক শক মেশিন, বায়োমেট্রিক ফিঙ্গার প্রিন্ট ডিভাইস, নিয়োগপত্র, ল্যাপটপ ও প্রশিক্ষণ মডিউল বইসহ বিভিন্ন সামগ্রী জব্দ করা হয়েছে।
সোমবার জিএমপি’র সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত প্রেসব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানিয়েছেন উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিবি-দক্ষিণ) মোহাম্মদ নাজির আহমেদ খান।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- নীলফামারীর রনচন্ডি উত্তরপাড়া এলাকার দেলোয়ার হোসেনের ছেলে প্রতারকচক্রের দলনেতা মোঃ লিয়ন ইসলাম (২৫), লিয়নের স্ত্রী একই এলাকার রিয়াজুল ইসলামের মেয়ে রাজিয়া সুলতানা (২২), দুই শ্যালিকা রিপা আক্তার (২১) ও রিখা মনি (১৭), একই জেলার রনচন্ডি দালালপাড়া এলাকার এবাইদুল হকের ছেলে মোজাহিদুল ইসলাম ওরফে পায়েল (২৩) এবং লালমনিরহাটের দই খাওয়া এলাকার মৃত আনসার আলীর ছেলে হুমায়ুন কবির প্রিন্স (৩৬)।
জিএমপি’র ওই কর্মকর্তা জানান, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) গোপন তথ্যের ভিত্তিতে গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গী পশ্চিম থানা এলাকার ভাদাম পশ্চিম পাড়ার শহীদ মিয়ার ৫ তলা ভবনের ফ্ল্যাটে সোমবার ভোররাতে অভিযান চালায় জিএমপি’র গোয়েন্দা পুলিশ ও এনএসআই’র যৌথ টিম। এসময় সেখান থেকে ওই ৬জনকে আটক করা হয়। আটককৃতদের হেফাজত থেকে প্রতারণার শিকার দুই কিশোরী আসিক সিনথি (১৯) ও কানিজ ফাতেমাকে (১৮) উদ্ধার এবং বিভিন্ন সরঞ্জামাদি জব্দ করা হয়। উদ্ধার হওয়া কিশোরী দুইজনকে কেন্দ্রে প্রশিক্ষণের নামে ওই বাড়িতে কৌশলে আটকে রেখেছিল প্রতারকরা। এঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
তিনি আরো জানান, আটককৃতরা প্রতারক চক্রের সদস্য। তারা এনএসআই’য়ের পরিচয়ে জালিয়াতির মাধ্যমে ভুঁয়া কাগজপত্র তৈরী করে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে চাকরি প্রত্যাশী যুবক যুবতীদের কাছ থেকে জনপ্রতি ১৫ হতে ২০ লাখ টাকা হাতিয়ে আসছিল। তারা ফেইসবুক আইডি ব্যবহারের মাধ্যমে চাকুরি প্রত্যাশীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে টঙ্গীতে এনে ভুঁয়া নিয়োগপত্র ও আইডি কার্ড প্রদান করে এবং বিভিন্ন জেলা থানায় পোস্টিংয়ের চিঠি দেয়। পরে চাকরির প্রশিক্ষণ দেওয়ার কথা বলে কৌশলে টঙ্গীর ওই বাড়িতে এনে ৬মাসেরও বেশি সময় ধরে আটকে রাখে।
এসময় প্রশিক্ষণের নামে নিজেদের বিধি মোতাবেক নানাভাবে নির্যাতন করে। তারা বদলী ও পদোন্নতি দেওয়ার কথা বলে ভুঁয়া কাগজপত্র দিয়ে টাকা হাতিয়ে নেয়। টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পর তারা প্রশিক্ষণ কেন্দ্র/ঠিকানা পরিবর্তন করে গা ঢাকা দিয়ে আসছিল বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে আটক প্রতারক চক্রের সদস্যরা।