আশ্রয়কেন্দ্র থেকে বাড়ি ফিরছে মানুষ

জাতীয় পরিবেশ ও জলবায়ু

সুবর্ণবাঙলা প্রতিবেদন

কক্সবাজার জেলায় ৬৩৬টি আশ্রয়কেন্দ্রে দুই লক্ষাধিক মানুষ আশ্রয় নিয়েছিলেন।

অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোকা’ কক্সবাজার-উত্তর মিয়ানমার উপকূল অতিক্রম করে মিয়ানমারের দিকে চলে যাওয়ার পর আশ্রয়কেন্দ্রে থেকে বাড়ি ফিরতে শুরু করেছেন কক্সবাজার উপকূলের লোকজন। ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশ অতিক্রম করার পর আজ রোববার বিকেল পাঁচটা থেকে আশ্রয়কেন্দ্র ত্যাগ করতে শুরু করেন তারা।

সন্ধ্যায় কক্সবাজার শহরের পৌর প্রিপ্যারেটরি উচ্চ বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, আশ্রয় নেওয়া লোকজন দল বেঁধে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন।

এ সময় কথা হয় শহরের সাগর তীরবর্তী এলাকা সমিতি পাড়া থেকে আসা আলী আহমেদের (৪৫) সঙ্গে। তিনি বলেন, নিজের এবং পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে শনিবার সকালেই সপরিবারে আশ্রয়কেন্দ্রে চলে এসেছি। ঘূর্ণিঝড় বাংলাদেশ অতিক্রম করে মিয়ানমারে চলে গেছে বলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। তাই এখন বাড়ি ফিরে যাচ্ছি।

আছিয়া খাতুন (৪০) নামের আশ্রয় নেওয়া এক নারী বলেন, ঘূর্ণিঝড় শুরু হওয়ার আগে প্রশাসনের লোকজন আমাদেরকে গাড়িতে করে এনেছিল। কিন্তু ঝড় চলে যাওয়ার পর এখন আর কাউকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বাড়িতে পৌঁছে দিতে। তাই নিজ উদ্যোগে বাড়িতে যাচ্ছি।

এ প্রসঙ্গে কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বিভীষণ কান্তি দাশ বলেন, কক্সবাজার জেলায় ৬৩৬টি আশ্রয়কেন্দ্রে দুই লক্ষাধিক মানুষ আশ্রয় নিয়েছিলেন। ঘূর্ণিঝড় বাংলাদেশ অতিক্রম করার পর লোকজন আশ্রয়কেন্দ্র থেকে বাসায় চলে যাচ্ছেন। তাদের অধিকাংশই নিজ উদ্যোগে বাড়ি ফিরতে শুরু করেছেন। যারা যেতে পারছেন না তাদেরকে পৌঁছে দেওয়ার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত পরিবহনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

এর আগে মোকার প্রভাব থেকে জানমাল রক্ষায় কক্সবাজার উপকূল এলাকার লোকজন আশ্রয়কেন্দ্রে ছুটে এসেছিলেন শনিবার রাত পর্যন্ত।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় জেলার টেকনাফ, উখিয়া, মহেশখালী, কুতুবদিয়া, পেকুয়া, চকরিয়া, ঈদগাঁও, রামু ও কক্সবাজার সদর উপজেলাতে ৬৩৬টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছিল। উপকূল ও দুর্গত এলাকা থেকে লোকজনকে সরিয়ে নেওয়ার জন্য অন্তত ১০ হাজার স্বেচ্ছাসেবী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য কাজ করেছেন। এসব আশ্রয়কেন্দ্রের ধারণক্ষমতা প্রায় পাঁচ লাখ ছয় হাজার। দুর্যোগকালীন সময়ের জন্য ১০ লাখ ৩০ হাজার টাকা, ৪৯০ মেট্রিক টন চাল, ১৯৪ বান্ডিল ঢেউটিন প্রস্তুত ছিল। লোকজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসার জন্য ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কমিটির (সিপিপি) ৮ হাজার ৬০০ জন স্বেচ্ছাসেবী, বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি, রোভার স্কাউট সদস্য, ফায়ার সার্ভিসসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর আরও অন্তত দেড় হাজার সদস্য কাজ করেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *