সুবর্ণবাঙলা অনলাইন ডেস্ক
সচিবালয়ে প্রবেশের অস্থায়ী সব পাস বাতিল করছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো. খোদা বখস চৌধুরীর সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশ সচিবালয়ের সার্বিক নিরাপত্তা বৃদ্ধির স্বার্থে সচিবালয়ে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনুকূলে ইস্যুকৃত স্থায়ী প্রবেশ পাস (ডিজিটাল অ্যাক্সেস কন্ট্রোল সিস্টেম) এবং সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ইস্যুকৃত অস্থায়ী প্রবেশ পাস ছাড়া সব ধরনের অস্থায়ী (বেসরকারি ব্যক্তিদের জন্য) সচিবালয় প্রবেশ পাস বাতিল করা হলো।
এতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, সাংবাদিকদের অনুকূলে ইস্যুকৃত অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড দিয়ে সচিবালয়ে প্রবেশাধিকার পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এতদ্বারা বাতিল করা হলো।
বাতিলকৃত বিভিন্ন ক্যাটাগরির সচিবালয় প্রবেশ পাসধারীরা আগামী ১৫ দিনের মধ্যে বাংলাদেশ পুলিশ, ক্রাইম কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টার, ডিএমপি, ১৫ আব্দুল গণি রোড, ঢাকায় স্থাপনকৃত বিশেষ সেলের মাধ্যমে নতুন করে অস্থায়ী প্রবেশ পাসের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সচিবালয়ের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ জারি করা হলো বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
উল্লেখ্য, বড়দিনে সরকারি ছুটিতে বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয় বন্ধ ছিল। দিন যাওয়ার পর গভীর রাতে অতি গুরুত্বপূর্ণ এই স্থাপনার ৭ নম্বর ভবনটি পড়ে টানা ১০ ঘণ্টা। কীভাবে এই আগুনের সূত্রপাত তা নিয়ে সারাদিন দেশব্যাপী মানুষের মনে প্রশ্ন ছিল। উত্তর না পাওয়ায় রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। দেখা দিয়েছে নানা প্রশ্ন। সরকারের উপদেষ্টা আর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা এই আগুনকে পরিকল্পিত নাশকতা হিসেবে অভিহিত করেছেন। তবু প্রশ্ন উঠেছে, অতি গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় আগুন নেভাতে এত সময় লাগার রহস্য কী? রহস্য উদ্ঘাটনে ৭ সদস্যের একটি উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি করেছে সরকার। পাশাপাশি ক্ষতি নিরূপণে মন্ত্রণালয়ভিত্তিক একাধিক কমিটি গঠন করা হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিসের তথ্যানুযায়ী, বুধবার রাত ১টা ৫২ মিনিটে ৭ নম্বর ভবনে আগুন লাগে। খবর পেয়ে রাত ১টা ৫৪ মিনিটে ঘটনাস্থলে পৌঁছান ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা। আগুন নিয়ন্ত্রণে প্রথমে আটটি ইউনিট কাজ করে। শেষ পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিসের ১৯টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। পরদিন সকাল ৮টা ৫ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও তা বেলা পৌনে ১২টায় পুরোপুরি নেভানো সম্ভব হয়।
আগুন নেভাতে গিয়ে ট্রাকচাপায় মো. সোয়ানুর জামান নয়ন নামে একজন ফায়ার ফাইটার নিহত হন। ট্রাকটির পেছনে কোনো রহস্য আছে কি না সেই প্রশ্ন তুলেছেন কেউ কেউ।
আগুনে ১০ তলা ভবনের প্রতিটি তলা কম-বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হলেও ৬ থেকে ৯ তলা পর্যন্ত প্রায় পুরোটাই পুড়েছে। এসব তলায় যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়; শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়; অর্থ মন্ত্রণালয়; ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়; স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়; অর্থ মন্ত্রণালয় এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন বিভাগ অবস্থিত।
এর মধ্যে ছাত্র নেতৃত্ব থেকে অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের উপদেষ্টা হওয়া আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার দায়িত্বপ্রাপ্ত যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়; পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং নাহিদ ইসলামের দায়িত্বপ্রাপ্ত ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ও ওই ভবনে অবস্থিত।