সুবর্ণবাঙলা প্রতিবেদন
প্রতীকী ছবি
বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশি নাগরিকের ব্যক্তিগত সংবেদনশীল তথ্য ফাঁসের ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে সরকার। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো এর রহস্য উদঘাটনে কাজ করছে।
ইতোমধ্যে তথ্য ফাঁস হওয়া সরকারি দপ্তর চিহ্নিত হয়েছে। ওয়েবসাইটের কোনো ত্রুটিকে কাজে লাগিয়ে তথ্যগুলো বেহাত হয়েছে তাও জানা গেছে। তবে তথ্যগুলো কারা নিয়েছে সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। রোববার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পুলিশের একাধিক ইউনিট, আইসিটি বিভাগ, নির্বাচন কমিশন ও অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানে এ নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক হয়েছে। তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, তারা তথ্যগুলো বেহাত হওয়ার চ্যানেল খুঁজছেন। এটি কেবলই ওয়েবসাইটের কারিগরি দুর্বলতা নাকি এর পেছনে ভিন্ন কোনো উদ্দেশ্য আছে সেটিও খতিয়ে দেখছেন। নির্বাচন কমিশন ইতোমধ্যে তাদের পুরো সার্ভার সিস্টেম চেক করেছে। তারা নিশ্চিত হয়েছে তাদের সার্ভার থেকে কোনো ধরনের তথ্য ফাঁস হয়নি। জাতীয় পরিচয়পত্রের সার্ভার থেকে তথ্য ব্যবহার করা সবগুলো প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তার খুঁটিনাটি দেখা হচ্ছে।
পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশনের অতিরিক্ত ডিআইজি সৈয়দা জান্নাত আরা বলেন, যে সংস্থা নাগরিকের তথ্য নেবে তাকে এর সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। হ্যাকিং হলে এক বিষয়। কিন্তু কারিগরি ত্রুটি বা দুর্বলতা থেকে এমন হলে তা গ্রহণযোগ্য নয়। সর্বশেষ ঘটনায় আমরা আমাদের দিক থেকে গ্রাউন্ড ওয়ার্ক করছি। সমস্যাটা কোথায় সেটা শনাক্ত করছি। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, নাগরিকদের নাম, ফোন নম্বর, ই-মেইল, ঠিকানা, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বরসহ কয়েক ধরনের তথ্য রয়েছে। এগুলোর অপব্যবহার হচ্ছে কিনা-তাও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ বিষয়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদেরও প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। পুলিশের সাইবার ইউনিটগুলোকেও বিশেষভাবে কাজ করতে বলা হয়েছে।
এই ঘটনার তদন্তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে বিজিডি ই-গভ সার্ট। এর জনসংযোগ কর্মকর্তা সুকান্ত চক্রবর্তী যুগান্তরকে বলেন, তথ্য ফাঁসের পর থেকে আমাদের কারিগরি টিম সম্ভাব্য সবগুলো বিষয় নিয়ে কাজ করেছে। এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি রয়েছে। আমরা সবার আগে তথ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করছি।
নতুন করে যেন কোনো তথ্য বেহাত না হয়। সাইটগুলো নিরাপদ করে আমরা পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করব।
প্রসঙ্গত, দক্ষিণ আফ্রিকাভিত্তিক সাইবার নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান বিটক্র্যাক সাইবার সিকিউরিটির গবেষক ভিক্টর মার্কোপোলোস ২৭ জুন বাংলাদেশি নাগরিকদের তথ্য ফাঁসের বিষয়টি দেখতে পান। তাকে উদ্ধৃত করে বিষয়টি সামনে নিয়ে আসে মার্কিন অনলাইন পোর্টাল টেকক্রাঞ্চ। যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় শুক্রবার চাঞ্চল্যকর এ তথ্য নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে টেকক্রাঞ্চ। এদিকে এসব তথ্যের অপব্যবহার হলে ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়তে হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।