গাজায় ‘আর কোনো জায়গা নিরাপদ নেই’: জাতিসংঘ

আন্তর্জাতিক

অনলাইন ডেস্ক

গাজায় ইসরাইলি হামলা চলমান থাকায় সেখানে আর কোনো জায়গাই নিরাপদ নেই বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী বিষয়ক সংস্থার পরিচালক টমাস হোয়াইট মন্তব্য করেছেন সেখানকার বাসিন্দাদের বাঁচাতে জাতিসংঘের প্রায় কোনো কিছুই করার নেই।

গাজায় ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় এরই মধ্যে ৯ হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছে বলে জানিয়েছে গাজার হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। তাদের হিসাব অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত ২২ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।

সবশেষ ইসরাইলি বিমান হামলার শিকার হয়েছে মধ্য গাজার আল শিফা হাসপাতাল থেকে রাফাহ ক্রসিংয়ে যেতে থাকা একটি অ্যাম্বুলেন্সের বহর। ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে ওই হামলায় অন্তত ১৩ জন মারা গেছে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, হাসপতাাল থেকে আহতদের নিয়ে রাফাহ সীমান্ত পার করছিল ওই অ্যাম্বুলেন্সের বহরটি। হামাস দাবি করেছে যে ইসরাইলি বাহিনী এই হামলা করেছে।

ইসরাইলি ডিফেন্স ফোর্সেসও নিশ্চিত করেছে যে তারা একটি অ্যাম্বুলেন্সে হামলা করেছে। তবে তারা বলছে, ওই অ্যাম্বুলেন্সটিতে হামাস সদস্যরা ছিল।

বিবিসি এরই মধ্যে কয়েকটি ভিডিও ফুটেজ যাচাই করেছে যেগুলো আল শিফা হাসপাতালের বাইরে বিস্ফোরণের জায়গা থেকে নেওয়া হয়েছে। একটি ভিডিওতে দেখা যায়, হাসপাতালের বাইরে রাস্তায় বিপুল পরিমাণ রক্তের মধ্যে কয়েকজন মানুষ পড়ে আছে, যাদের মধ্যে কেউ কেউ নিথর হয়ে পড়ে আছে। আবার কেউ আহত হয়ে ছটফট করছেন। কয়েকটি ভিডিও যাচাই করে দেখা যায় ওই ঘটনায় অন্তত ২০ জন আহত বা নিহত হয়েছেন।

ব্লিঙ্কেন-নেতানিয়াহু বৈঠক
ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেন বৈঠক করেন এবং মানবিক যুদ্ধবিরতির আহ্বান করেন। কিন্তু নেতানিয়াহু বলেছেন, জিম্মিদের মুক্তি না দেওয়া পর্যন্ত হামলা বন্ধ হবে না।

তেলআবিবে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠকে ব্লিঙ্কেন প্রস্তাব তোলেন যেন জরুরি ত্রাণ ও সহায়তা গাজায় প্রবেশ করার জন্য মানবিক বিরতির আহ্বান মেনে নেওয়া হয়। কিন্তু নেতানিয়াহু জানান যে হামাসের কাছে জিম্মি থাকা বন্দিদের তারা মুক্তি না দেওয়া পর্যন্ত যুদ্ধবিরতির কোনো চুক্তি করবেন না তিনি।

যুদ্ধবিরতি আর মানবিক বিরতির মধ্যে প্রধান পার্থক্য হলো মানবিক বিরতি অপেক্ষাকৃত কম সময়ের জন্য কার্যকর হয়। কখনো কয়েক ঘণ্টার জন্যও কার্যকর করা হয়ে থাকে মানবিক বিরতি। শুধুমাত্র মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করার জন্যই মানবিক বিরতি আহ্বান করা হয়ে থাকে।

হামাসের হাতে এখনও ২০০ জনের বেশি মানুষ জিম্মি রয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরাইলি সেনাবাহিনী।
হামাস ও ইসরাইলি বাহিনীর মধ্যে সংঘাত শুরু হওয়ার পর শুক্রবার প্রথমবারের মত লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হেজবুল্লাহর নেতা হাসান নাসরাল্লাহ বক্তব্য দেন। তার বক্তব্যে ইসরাইলের ওপর হামাসের চালানো হামলার প্রশংসা করেন তিনি।

তিনি যখন বক্তব্য দিচ্ছিলেন সে সময় লেবানন সংলগ্ন ইসরাইলের সীমান্তে অইডিএফ ‘অত্যন্ত সতর্ক’ অবস্থায় ছিল বলে জানায় তারা। তাদের আশঙ্কা ছিল হেজবুল্লাহ নেতা তার বক্তব্যে যুদ্ধের ইঙ্গিত দিলে হেজবুল্লাহ সদস্যরা ইসরাইলের ওপর হামলা শুরু করতে পারে।

তবে হেজুবল্লাহ প্রধান তার বক্তব্যে দলটির পরবর্তী পদক্ষেপের বিষয়ে কোনো ইঙ্গিত দেননি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *