পাইকগাছা (খুলনা) সংবাদদাতা
ছবি: ইত্তেফাক
খুলনার পাইকগাছা উপজেলার ঘোষাল গ্রামে কওসার গাজীর ছেলে সাকাত গাজী মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) ভোর ৪টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় একটি হাসপাতালে মারা যান। তার মৃতদেহ বাড়িতে নিয়ে আসা হয় এবং সাকাত গাজীর ছেলে মামুন মৃতদেহ দাফন করার ব্যবস্থা করলে তার বোনেরা বাধা দেয়।
জানা গেছে, সাকাত গাজী তার পাঁচ কন্যাকে সম্পত্তি ফাঁকি দিয়ে ছেলের নামে সব সম্পত্তি লিখে দেওয়ায় বাবার মরদেহ দাফন করতে দিচ্ছেন না তার মেয়েরা। বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় পুলিশ ও এলাকার জনপ্রতিনিধিদের চেষ্টায় মরহুমের দাফন সম্পন্ন করা হয়। এদিকে একমাত্র ছেলে মামুন পিতার মরদেহ বাড়িতে রেখে স্ত্রী সন্তানকে নিয়ে পালিয়েছেন। দুদিন ধরে মরদেহ বাড়ির উঠানে পড়ে ছিল। সাকাত গাজী কিডনিজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে ছেলে মামুন গাজী পিতাকে নিয়ে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। সাকাত গাজী হাসপাতালে থাকাকালে সুকৌশলে সকলের অগোচরে মামুন (ছেলে) চুরি করে সব সম্পত্তি লিখে নেয়। মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) ভোর ৪টায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান সাকাত গাজী। তার মরদেহ বুধবার (২৯ নভেম্বর) সকাল ৮টায় বাড়িতে নিয়ে আসেন। মরদেহ বাড়িতে নিয়ে দাফন করার ব্যবস্থা করলে মামুনের পাঁচ বোন মরদেহ দাফনে বাধা দেন। গোসলের সময় মৃত সাকাত গাজীর হাতের বুড়ো আঙুলে টিপ দেওয়ার ছাপ পাওয়া যায়। খবর পেয়ে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পুলিশ এলে মামুন তার পরিবার নিয়ে কৌশলে পালিয়ে যান।
সাকাত গাজী ১ ছেলে ৫ মেয়ে ও স্ত্রীকে রেখে গেছেন। সাকাত গাজীর কন্যা লাবনী আক্তার জানান, আমার ভাই আব্বার অসুস্থতার সুযোগে আমাদের না জানিয়ে সব সম্পত্তি লিখে নিয়েছেন।
ঘোষাল জামে মসজিদের ইমাম বেলাল হোসেন জানান, সাকাত গাজীর মৃত্যুর সংবাদ শুনে মঙ্গলবার বাদ জোহর জানাজার ঘোষণা দেওয়া হয়। কিন্তু মৃতের ৫ কন্যা এসে জনাজা এবং মরদেহ দাফনে বাধা দেওয়ায় মুসল্লিসহ গ্রামবাসী সিদ্ধান্ত নেন যে-মৃত সাকাত গাজী তার মেয়েদের হক নষ্ট করায় জানাজা পড়াবেন না।
পাইকগাছা থানার ওসি মো. রফিকুল ইসলাম জানান, শরিক ফাঁকি দেওয়ায় মৃত গাজীর মরদেহ দাফন করতে দিচ্ছেন না কন্যারা এমন সংবাদ পেয়ে সেখানে গিয়ে আলোচনার মাধ্যমে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মরদেহ দাফন করা হয়েছে।