‘আর কখনো নয়’ গাজায় প্রযোজ্য নয় কেন

অন্যান্য আন্তর্জাতিক

সুবর্ণবাঙলা অনলাইন ডেস্ক

সম্প্রতি গাজাবাসীর ওপর ইসরায়েলের সর্বশেষ আগ্রাসনের শততম দিন অতিক্রান্ত হয়েছে। বিশ্বের বুকে এই দিনটি একটি হতাশাজনক মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হবে। এই একশ দিন ধরে বিভিন্ন নৃশংস উপায়ে ফিলিস্তিনিদের নির্দয়ভাবে নির্মূল করা হয়েছে। ইসরায়েলিদের নিক্ষেপ করা বোমা গাজাবাসীকে ছিন্নভিন্ন করে চলেছে। ইসরায়েলি সেনাদের বুলেট আজও ছিদ্র করে চলেছে ফিলিস্তিনিদের মাথার খুলি, কোনোরকমের কোনো কিছুকে তোয়াক্কা না করেই। ইসরায়েল আরোপিত অবরোধের কারণে ক্ষুধার্ত, অসুস্থ ও সংক্রমণের মাধ্যমে কাবু ফিলিস্তিনিরা অকাতরে প্রাণ হারাচ্ছে, যাদের অনেককেই চিকিৎসা দিয়ে এমন মৃত্যু থেকে বাঁচানো সম্ভব ছিল।

এই একশ দিনে প্রায় ৮০ বছর আগে যে দেশগুলো ‘আর কখনো নয়’ ইসরায়েলি আগ্রাসন হবে না বলে নিশ্চিত করেছিল, সেসব দেশ আজ আমাদের এভাবে ধ্বংস হওয়া বন্ধ করতে কিছুই করেনি। একশ দিন ধরে আমরা আবেদন করেছি, মানবিক সংস্থাগুলো আবেদন করেছে, জাতিসংঘ আবেদন করেছে এবং সারা বিশ্বে রাস্তায় রাস্তায় সাধারণ মানুষ আবেদন করেছে; কিন্তু সবাই আমাদের উপেক্ষা করেছে। তাদের নীরবতায় অবাক হওয়া উচিত নয়। কারণ তাদেরই চোখের সামনে ইসরায়েলের নৃশংস এবং অবৈধ দখলকে কয়েক দশক ধরে চলতে দেওয়া হয়েছিল। এই দখলদারিত্ব ও নৃশংসতা অতীতের সব রেকর্ড অতিক্রম করা ও আধুনিক ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী হওয়া পর্যন্ত চলতে থাকে।

এই ১০০ দিন ধরে দখলদার রাষ্ট্র ইসরায়েল, দেশটির সরকার এবং সেনাবাহিনী মিলে ফিলিস্তিনিদের জীবনের প্রতিটি দিক, যেমন—রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক কর্মকাণ্ড; এমনকি তাদের প্রেম ও যৌন জীবনও (লাভ লাইফ) নিয়ন্ত্রণ করেছে, যা আপনি হয়তো বিশ্বাসও করতে পারবেন না। ইসরায়েল আমাদের বলে আসছে আমরা কী খেতে পারি, কী পান করতে পারি, কী কিনতে পারি, কোথায় যেতে পারি, কোথায় বেড়াতে পারি, কোথায় থাকতে পারি, কোথায় বাগান করতে পারি, কোথায় গবাদি পশু চরাতে পারি, কোথায় মাছ ধরতে পারি, কোথায় আমরা স্কুলে যেতে পারি, কোথায় আমরা স্বাস্থ্য পরিষেবা পেতে পারি (যদি পাওয়া যায়) এবং হ্যাঁ, আমরা কার প্রেমে পড়তে পারি, কাকে বিয়ে করতে পারি এবং কার সঙ্গে বসবাস করতে পারি।

এমনকি জাতি হিসেবে আমাদের পরিচয় কী, তা-ও ইসরায়েল বলার চেষ্টা করেছে। ইসরায়েল ফিলিস্তিনিদের বলেছে, তারা (ফিলিস্তিনিরা) আরব, মুসলিম, খ্রিষ্টান, দ্রুজ বা সার্কাসিয়ান, কিন্তু ফিলিস্তিনি নয়। ইসরায়েল ফিলিস্তিনের সামাজিক কাঠামোকে ভেঙে ফেলার জন্য যে কোনো কিছু এবং সবকিছুই করেছে।

১৫ বছর ধরে ইসরায়েল ফিলিস্তিনের নিজস্ব রাজনৈতিক শক্তির মধ্যে ক্রমাগত বিভেদের বীজ বপন করেছে। তারা ফিলিস্তিনি দুটি বৃহত্তম দল হামাস এবং ফাতাহের মধ্যে মধ্যস্থতা ও ঐক্যবদ্ধ সরকারের জন্য প্রচেষ্টা যেন ব্যর্থ হয়, তা নিশ্চিত করেছে। রাজনৈতিক অনৈক্য ফিলিস্তিনি সম্প্রদায়ের অপরিমেয় ক্ষতি করেছে, যা শেষ পর্যন্ত দ্বন্দ্ব ও দুর্বলতার দিকে নিয়ে গেছে।

শুধু ক্রমাগত দখল বা ভূমি চুরি, বহিষ্কার এবং বাড়ি ধ্বংসের মাধ্যমেই নয়, অর্থনৈতিক নির্ভরতার মাধ্যমেও আমরা যেন দরিদ্র এবং অরক্ষিত থাকি, ইসরায়েল তা নিশ্চিত করেছে। ইসরায়েল এটাও নিশ্চিত করেছে যে, আমরা যেন শুধু ক্রমাগত বাস্তুচ্যুতি, ভূমি দখল, বিতাড়িত হওয়া ও ঘরবাড়ি ধ্বংসের মধ্য দিয়েই নয়, অর্থনৈতিক নির্ভরশীলতার কারণেও দরিদ্র ও ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় দিনাতিপাত করি। উদ্দেশ্যমূলকভাবে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড এবং ব্যক্তিগত ব্যবসার দম (পথ) বন্ধ করে ইসরায়েলিরা ফিলিস্তিনের অর্থনীতিকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে রেখেছে। এর ফলে বেকারত্বের হার বেড়েছে এবং অনেক ফিলিস্তিনি বস্তুত দখলদারদের জন্য কাজ করতে বাধ্য হয়েছে। এমনকি কখনো কখনো ফিলিস্তিনিদের থেকে চুরি বা জবরদস্তি করে নিয়ে যাওয়া জমিতে ইহুদিরা আক্ষরিক অর্থে অবৈধ বসতি নির্মাণ করেছে।

ঐতিহ্যগতভাবে ফিলিস্তিনের অন্যতম শক্তিশালী অর্থনৈতিক খাত হলো কৃষি। অথচ ইসরায়েল ক্রমাগতভাবে ফিলিস্তিনি কৃষিকেও অবজ্ঞা করেছে। ভূমি ও পানিসম্পদে সীমিত প্রবেশাধিকারের কারণে ফিলিস্তিনের কৃষি উৎপাদন নাটকীয়ভাবে হ্রাস পেয়েছে, যা মৌলিকভাবে কৃষির মতো ঐতিহ্যগত জীবিকাকে ব্যাহত করেছে।

ইসরায়েল আরোপিত ১৭ বছরের দীর্ঘ অবরোধের কারণে গাজায় অর্থনৈতিক বিপর্যয় আরও খারাপ অবস্থায় পৌঁছেছে। এ অবরোধ আমদানি ও রপ্তানিকে মারাত্মকভাবে সীমিত করেছে। বহির্বিশ্বের সঙ্গে কার্যকর বাণিজ্যকে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে স্তব্ধ করে দিয়েছে এবং শিল্প উৎপাদন ও কৃষি খাতকে ধ্বংস করেছে। ইসরায়েল এমনকি ক্যালরি হিসাব করে আমাদের শুধু বেঁচে থাকার জন্য যতটুকু প্রয়োজন, ততটুকু খাবার গাজায় প্রবেশের অনুমতি দিচ্ছে।

আমরা শান্তিপূর্ণভাবে বা অন্য যে কোনো পন্থায় যখনই প্রতিরোধ করেছি, ইসরায়েলি দখলদার বাহিনী আমাদের হত্যা করেছে, পঙ্গু করেছে, কারারুদ্ধ করেছে এবং সম্মিলিতভাবে নির্যাতন ও শাস্তি দিয়েছে। গাজা স্ট্রিপে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে চলমান আগ্রাসন জনগণকে ধ্বংস করার মধ্য দিয়ে কার্যত গণহত্যার রূপ ধারণ করেছে।

বিগত ১০০ দিনে গাজার বধ্যভূমিগুলোতে ইসরায়েল কমপক্ষে ৩১ হাজার ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে; এর মধ্যে ২৬ হাজার জনের মৃত্যুকে আনুষ্ঠানিকভাবে গণনা করা হলেও কমপক্ষে ৮ হাজার ফিলিস্তিনিকে গণনা করা হয়নি, যাদের মৃতদেহ এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে রয়েছে এবং তাদের বের করে আনার মতো কেউ নেই। ইসরায়েলের নির্বিচার বোমাবর্ষণ ও সম্পূর্ণ অবরোধের মধ্যে আমরা যারা বেঁচে গেছি, তারা ভয়, ক্ষুধা-তৃষ্ণার মারাত্মক সংমিশ্রণের মুখোমুখি হয়েছি।

গত ১০০ দিনে ইসরায়েলি দখলদারিত্ব গাজা উপত্যকায় খাদ্য, জল ও ওষুধ প্রবেশ করতে বাধা সৃষ্টি করেছে। শুধু তাই নয়, জীবনধারণের জন্য অত্যাবশ্যকীয় প্রতিটি উৎস লক্ষ্য করে ইসরায়েলিরা বিমান হামলা চালিয়েছে। পানির কূপ ও পানি শোধনাগার থেকে শুরু করে বেকারি, খামার, বিদ্যুৎ জেনারেটর ও সোলার প্যানেল পর্যন্ত সবকিছুর ওপর তারা বোমা ফেলেছে। ইসরায়েল গাজার জনগণের জন্য ত্রাণের যে কোনো ব্যবস্থাপনা পরিকল্পিতভাবে লক্ষ্যবস্তু বানিয়েছে ও ধ্বংস করেছে।

একটি বিষয় লক্ষ করা গুরুত্বপূর্ণ যে, এই মুহূর্তে গাজা উপত্যকায় যে সাহায্য আসছে, তা সেখানকার জনসংখ্যার একটি ক্ষুদ্র অংশের চাহিদাও পূরণ করতে পারে না। ক্ষুধা ও তৃষ্ণার কারণে মানুষ এতটাই মরিয়া হয়ে উঠেছে যে, সাহায্যকারী ট্রাকগুলোকে মাঝেমধ্যে আক্রমণের স্বীকার হতে হয় এবং তা লুটপাট করা হয়। তারপর এ পণ্যগুলো নিয়মিত দামের তিন থেকে পাঁচগুণ বেশি দামে রাস্তায় বিক্রি করা হয়। এভাবে সবচেয়ে দুর্বলদের কাছে কখনোই ত্রাণ পৌঁছায় না, যা তাদের খুব প্রয়োজন।

অবরোধের অন্যতম উদ্দেশ্যই ছিল এমনটা ঘটানো। অক্টোবরে নেসেটের তালি গটলিবের আরেকটি রূপরেখা দেওয়া হয়। এতে বলা হয় যে, ‘গাজার জনসংখ্যার মধ্যে ক্ষুধা ও তৃষ্ণা না থাকলে আমরা তাদের সহযোগীরূপে নিয়োগ করতে সক্ষম হব না, বুদ্ধিমানদের নিয়োগ করতে সক্ষম হব না এবং আমরা বুদ্ধিমত্তা অর্জনের জন্য মানুষকে খাদ্য, পানীয়, ওষুধ দিয়ে ঘুষ দিতে সক্ষম হব না।’ তিনি আরও বলেন, ইসরায়েলি কর্মকর্তারা জনসমক্ষে তাদের গণহত্যামূলক কার্যক্রম প্রদর্শনে তারা কতটা সাহসী হয়েছেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনে নিশ্চিত দায়মুক্তিতে তারা কতটা নিরাপদ তা প্রদর্শন করছেন।

‘গোয়েন্দা তথ্য প্রাপ্তির’ প্রক্রিয়ায় সহায়তা করতে ইসরায়েলি দখলদার বাহিনী নিয়মিত আকাশ থেকে লিফলেট ফেলেছে এবং তাদের ‘সহযোগিতা’র বিনিময়ে ফিলিস্তিনিদের খাদ্য, ওষুধ এবং নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে আরও একটি অশুভ লক্ষ্য রয়েছে, যা ইসরায়েল অনুসরণ করছে। গাজার দৈনন্দিন জীবনের অপ্রত্যাশিত কঠোরতা ও অসহায়ত্ব গাজাবাসীর মধ্যে হতাশার সৃষ্টি করেছে। অনেক ফিলিস্তিনি, বিশেষ করে শিশুরা বিষণ্নতা, উদ্বেগ এবং স্ট্রেস ডিজঅর্ডারে ভুগছে। এমন পরিস্থিতি শুরু হওয়ার আগে অনেকেই অতীতের আগ্রাসনের কারণে সৃষ্ট ট্রমা থেকে নিরাময় লাভ করেনি। ইসরায়েল শুধু আমাদের দেহকে বিনাশ করতে চায় না; তারা আমাদের মন এবং আত্মার ধ্বংস চায়।

আমরা যদি ইতিহাসের একটু গভীরে যাই, তবে আমরা দেখতে পাব যে, এই নৃশংস কৌশলগুলো আগেও ব্যবহৃত হয়েছে। ইসরায়েলি জনসংখ্যার অংশের পূর্বপুরুষরা হলোকাস্টের সময় এমন অভিজ্ঞতা লাভ করেছিল। ১৯৪০-এর দশকে ইউরোপজুড়ে ইহুদি নিধন ও বন্দিশিবিরে যেতে বাধ্য করা হয়, যেখানে তারা অনাহার, অনাচার এবং ব্যাপক মৃত্যুর মুখোমুখি হয়। নাৎসিরা ক্ষুধাকে ইহুদিদের নিয়ন্ত্রণ এবং একটি এলাকা মানবশূন্যকরণের পদ্ধতি হিসেবে ব্যবহার করে। তখন সহিংসতা, নির্বাসন এবং মৃত্যুর ক্রমাগত হুমকি দেহ ও আত্মাকে ধ্বংস করে দেয়।

আমরা এতদিন ইহুদি নিধন ও বন্দিশিবিরের যে গল্প শুনেছি, আজ তা গাজায় প্রতিধ্বনিত হচ্ছে। আমাদের মধ্য থেকে ২ দশমিক ৩ মিলিয়ন নিরন্তর ক্ষয়িষ্ণু মানুষ সেই এলাকায় আটকে আছে এবং বসবাসের অযোগ্য অবস্থা সহ্য করতে বাধ্য হয়েছে। আপনি যখন এই উভয় জনগণের মুখোমুখি হওয়া নৃশংসতার বিবরণ পাশাপাশি রাখবেন, দেখতে পাবেন যে ইতিহাস নিজেই পুনরাবৃত্তি করছে, পার্থক্য শুধু এই সময় পুরো বিশ্ব দেখছে এবং এটি থামাতে বলতে গেলে কেউ কিছু করছে না।

হলোকাস্টের ছাই থেকে জন্ম নেওয়া ‘আর কখনো নয়’-এর মতো গৌরবময় শপথটি এমন ভয়াবহতার পুনরাবৃত্তি রোধ করার জন্য প্রণীত হয়েছিল। বিশ্বজুড়ে দুর্বল মানুষদের প্রতি বিশ্বের সম্মিলিত বিবেকের প্রতিশ্রুতি ছিল, যে দুর্বলরা সুরক্ষিত থাকবে এবং তাদের নির্যাতনকারীদের কার্যক্রম বন্ধ করা হবে। তবুও আমরা যখন চলমান ফিলিস্তিনি সংগ্রামের দিকে দৃষ্টিপাত করি, তখন বিশ্ব বিবেকের এ অঙ্গীকার ফাঁকা হয়ে যায়। অতীতের নৃশংসতার ছায়া ফিলিস্তিনের বর্তমান সময়ের মানুষদের অভিজ্ঞতায় রয়ে গেছে।

তবুও আমরা বিরামহীনভাবে আমাদের গণহারে হত্যার ১০০ দিন চিহ্নিত করার কালে আশার স্ফুলিঙ্গ অনুভব করি। দক্ষিণ আফ্রিকা ‘আর কখনো নয়’ নীতির পক্ষে দাঁড়িয়েছে এবং ইসরায়েল রাষ্ট্রকে আদালতে নিয়ে গেছে। পুরো বিশ্বের সামনে গণহত্যার অভিযোগ এনেছে। আমরা যখন হতাশার মধ্যে পড়েছিলাম, তখন আমাদের মধ্যে আশার সঞ্চার করার জন্য যা সঠিক, তার পক্ষে দাঁড়ানোর জন্য দক্ষিণ আফ্রিকার প্রতি আমাদের চিরন্তন ভালোবাসা ও কৃতজ্ঞতা থাকবে।

এই অন্ধকার সময়ে ‘আর কখনো নয়’ শুধু স্মরণের শব্দগুচ্ছ হতে পারে না; এটি করণীয় বিষয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্য একটি ডাক বলে বিবেচিত হতে হবে। বিশ্বের প্রতিটি কোনায় সব মানুষের মর্যাদা ও অধিকার সমুন্নত রাখার অঙ্গীকারে বিশ্বকে অবশ্যই কাজ করতে হবে এবং আরেকটি গণহত্যা সংঘটিত হতে বাধা দিতে হবে।

লেখক: গাজায় বসবাসকারী ফিলিস্তিনি সাংবাদিক ও অ্যাকটিভিস্ট। আলজাজিরার মতামত বিভাগে প্রকাশিত নিবন্ধটি ঈষৎ ভাষান্তর করেছেন মেজর নাসির উদ্দিন আহাম্মেদ (অব.) পিএইচডি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *