সুবর্ণবাঙলা প্রতিবেদন
যোগাযোগ সহজ করতে দেশের চার অঞ্চলে চারটি বড় সেতু করার প্রস্তাব দিয়েছেন ডিসিরা। যেগুলোর মধ্যে পদ্মা ও যমুনা নদীতে দ্বিতীয় সেতুর প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন তারা। পদ্মা নদীতে রাজবাড়ী-পাটুরিয়া ঘাটে দ্বিতীয় সেতু এবং যমুনায় বাহাদুরাবাদ-বালাসী ঘাটে আরেকটি সেতুর পাশাপাশি কক্সবাজার ও মহেশখালীকে যুক্ত করতে বাঁকখালী নদী এবং বরগুনার বেতাগী নদীর উপর সেতু করার প্রস্তাব ডিসিরা। সোমবার চলমান ডিসি সম্মেলনে সেতু বিভাগের সঙ্গে পূর্ব নির্ধারিত কর্ম-অধিবেধন শেষে সচিব মনজুর হোসেন সাংবাদিকদের এ সব কথা বলেন।
এ অধিবেশন শেষে রেলমন্ত্রী জিল্লুল হাকিম গণমাদ্যমকে বলেন, দেশকে রেল যোগাযোগের আওতায় আনতে সরকারের পরিকল্পনার পাশাপাশি সেবা বাড়াতে রেলওয়েকে চারটি অঞ্চলে বিভক্ত করার চিন্তা-ভাবনার কথা তুলে ধরেন। সম্মেলনে ডিসিদের পক্ষ থেকে চারটি বড় সেতু করার প্রস্তাব এসেছে জানিয়ে সেতু সচিব বলেন, অধিবেশনে দুই মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সাতটি প্রস্তাব দিয়েছেন ডিসিরা। এর মধ্যে ময়মনসিংহের ডিসি দুটি ও অন্যরা পাঁচটি প্রস্তাব দেন। বরগুনার বেতাগী নদীর উপর সেতু করার প্রস্তাব দিয়েছেন এক জেলা প্রশাসক।
যোগাযোগ বাড়াতে অন্য তিন সেতুর প্রস্তাবের মধ্যে রয়েছে পদ্মায় রাজবাড়ী জেলার রাজবাড়ী ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাটে দ্বিতীয় সেতু যমুনা নদীতে জামালপুরের বাহাদুরাবাদ ও গাইবান্ধার বালাসী ঘাটে এবং কক্সবাজার ও মহেশখালীকে সড়ক পথে যুক্ত করতে বাঁকখালী নদী ও সমুদ্রের মোহনার একাংশের উপর সেতু।
সাংবাদিকদের সচিব বলেন, ২০৫০ সাল পর্যন্ত সরকারের বাস্তবায়নাধীন পরিকল্পনার মধ্যে এ চার সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। একে একে বাস্তবায়ন করা হবে। পদ্মা নদীতে রাজবাড়ী-পাটুরিয়াকেযুক্ত করতে সেতু না কি টানেল কোনটা হবে তা এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি জানিয়ে তিনি বলেন, সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের পর সরকার ঠিক করবে ধরণটি কেমন হবে। রেলমন্ত্রী জিল্লুল হাকিম রেলওয়ে যোগাযোগ আরও বাড়াতে সরকারের পরিকল্পনার কথা তুলে ধরে বলেন, রেল কোচ ও ইঞ্জিন সংকট শেষ হলে আগামী বছর থেকে আন্তঃনগর ট্রেনের সংখ্যা ও জনবল বাড়ানো হবে। বর্তমানে রেলওয়ে পূর্ব ও পশ্চিম-দুই অঞ্চলে ভাগ হয়ে দেশজুড়ে রেলের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। সেবা আরও বাড়াতে রেলওয়েকে চারটি অঞ্চলে ভাগ করার চিন্তা-ভাবনার কথা তুলে ধরেন রেলমন্ত্রী।
অবৈধ ক্রসিং বন্ধের পাশাপাশি বেদখল হওয়া রেলের জমি উদ্ধারে জোর দিতে নির্দেশনা দেওয়ার কথাও বলেন তিনি। বিফ্রিংয়ে রেল সচিব হুমায়ুন কবির বলেন, যশোরের শার্শা উপজেলায় রেলস্টেশন ও নোয়াখালী থেকে-লক্ষীপুর পর্যন্ত রেললাইন স্থাপনের প্রস্তাব এসেছে ডিসিদের কাছ থেকে। ময়মনসিংহ শহরে রেলক্রসিংয়ের কারণে যানজট হচ্ছে, যা সমাধানে বিশেষ উদ্যোগের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরে প্রস্তাব দিয়েছেন ডিসি।
রেলসচিব বলেন, সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করে আমরা বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করব। দেশে শতাধিক স্থানে সবচেয়ে বেশি যানজট হয় এমন তথ্য তুলে ধরে সেতু বিভাগের সচিব মনজুর বলেন, এসব স্থানে কেন যানজট তৈরি হয় তা জানাতে বলা হয়েছে। বৈঠকে সারাদেশে সড়ক সম্প্রসারণ ও ভেঙ্গে যাওয়া সড়ক মেরামতের প্রস্তাবও দেন ডিসিরা। রেলসচিব বলেন, সড়ক নিরাপদ করতে প্রতি মাসে একবারের পরিবর্তে দুইবার অংশীজনদের নিয়ে বৈঠক করতে ডিসিদের বলা হয়েছে। এসব বৈঠক থেকে আসা পর্যবেক্ষণ যাচাই করে বিবেচনায় নেওয়া হবে।