প্রধানমন্ত্রী পদে মমতা যোগ্য প্রার্থী
সুবর্বণবাঙলা ডেস্ক
ছ’বারের সংসদ সদস্য তথা বিজেপি নেতা সুব্রহ্মণ্যম স্বামী
সরকারের বহু আচরণ ফ্যাসিস্টের মতো। ফ্যাসিবাদী সরকার চালাচ্ছেন মোদি। এমন চাঁচাছোলা ভাষাতেই কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে আক্রমণ করলেন ছ’বারের সংসদ সদস্য তথা বিজেপি নেতা সুব্রহ্মণ্যম স্বামী। কলকাতায় বণিকসভার একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসেছিলেন তিনি। সেই মঞ্চ থেকেই বাছাই করা শব্দে নিশানা করলেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীকে। পাশাপাশি দ্ব্যর্থহীন ভাষায় জানালেন, প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা রয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং মোদি সরকারের সেকেন্ড ইন কমান্ড অমিত শাহ যখন সংস্কৃতি মন্ত্রকের অনুষ্ঠানে সায়েন্স সিটিতে পৌঁছে গিয়েছেন, তখন তার ঢিলছোড়া দূরত্বের পাঁচতারা হোটেলে তাঁরই সরকারকে বেআব্রু করছেন স্বামী। বলছেন, ‘এখন কি আর সংসদে বিতর্ক হয়? নাকি মিডিয়া খবর করে? দিল্লির সংবাদমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ হয় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে।’ ‘আনপ্লাগড আড্ডা’য় তাঁর তীব্র কটাক্ষ, ‘মোদি আসলে আমাকে ভয় পান! ৭২ সাল থেকে ওঁর সঙ্গে আমার পরিচয়। এক সময় রেল স্টেশনে নামার পর আমার স্যুটকেসও বয়েছিলেন মোদি। সেই ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী হলে আমাকে কি তাঁর ধারেকাছে রাখবেন? ওই অস্বস্তিকর স্মৃতি তো বারবার মনে পড়বে! তাই দলের কোনও কাজে আমাকে রাখা হয় না।’ জয়ললিতা, টুজি স্পেকট্রাম, ইভিএমের মতো বহু ইস্যুতে দেশের অসংখ্য পোড়খাওয়া নেতা-নেত্রী এবং ক্ষমতাবানের হাড়ে কাঁপন ধরিয়ে দিয়েছেন ভারতীয় রাজনীতির এই ‘অডম্যান’। এদিন ফের তিনি তুলেছেন সীমান্ত সমস্যার প্রসঙ্গ। তাঁর কথায়, ‘বারবার বলেছি, ভারতীয় ভূখণ্ডের ২ হাজার বর্গকিমি দখল করে নিয়েছে চীন। আর মোদি সংসদকে বলছেন, কই, কেউ আমাদের দেশে তো ঢোকেনি!’ প্রধানমন্ত্রীর লার্জার দ্যান লাইফ ইমেজকে আরও অস্বস্তির মুখে ফেলে স্বামীর মন্তব্য, ‘গোধরা কাণ্ডের জন্য আমেরিকা নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছিল মোদির উপর। তখন উনিই আমাকে বলেছিলেন, ওবামাকে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করতে বলার জন্য। কেন? কারণ, গুজরাতি সংবাদপত্রে বারাক ওবামার সঙ্গে আমার ছবি প্রকাশিত হয়েছিল। হার্ভার্ডে ওবামা যে আমার ছাত্র ছিল!’
চব্বিশের পূর্বাভাস? স্বামীর বিশ্লেষণ, ‘কর্ণাটকের ফলের দিকে নজর রাখুন। অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে এই রাজ্যের ভোট। বিজেপি যদি কর্ণাটকে হেরে যায়, মোদির জন্য কঠিন সময় আসতে চলেছে।’ তাহলে বিকল্প? হেসে স্বামীর উত্তর, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য যোগ্য প্রার্থী হতেই পারেন। দিন দশেক আগেও ওঁর সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। যোগ্য বিরোধী মুখ, লড়াকু নেত্রী। কমিউনিস্টদের হটিয়েছে। সিবিআই-ইডির ভয় দেখিয়ে ওঁকে ব্ল্যাকমেল করা যাবে না।’ কিন্তু রাহুল গান্ধী? দক্ষিণপন্থী রাজনীতির বিশ্বাসীরা অনেকেই দীর্ঘদিন ধরে সোনিয়া গান্ধীর পুত্রকে পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। দর্শকদের মধ্যে থেকে প্রশ্ন উড়ে এলে আইএসআইয়ের এই প্রাক্তন অধ্যাপকের জবাব, ‘কোন দেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার কথা বলছেন?’ রাহুলের ভারতজোড়ো যাত্রাকে তাঁর পাল্টা খোঁচা, ‘দেশ তো জুড়েই আছে। সংবিধানই জুড়ে রেখেছে। নতুন করে আর কী জুড়বে!’