বঙ্গবন্ধু পরিষদ‘র উদ্যোগে ‘৬-দফা বাঙালির মুক্তির সনদ’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

অন্যান্য জাতীয় শহর

প্রেস বিজ্ঞপ্তি:

ঐতিহাসিক ৬-দফা দিবস পালিত আজ সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে ঐতিহাসিক ৬ দফা দিবস পালন উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু পরিষদের উদ্যোগে ‘৬-দফা: বাঙালির মুক্তির সনদ’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে মূল নিবন্ধ উপস্থাপন করেন বিশিষ্ট সাংবাদিক, কলামিস্ট ও বঙ্গবন্ধু পরিষদের প্রেসিডিয়াম সদস্য অজিত কুমার সরকার।

সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক এর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আ ব ম ফারুক এর সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপি, বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও বঙ্গবন্ধু পরিষদের প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান, বিশিষ্ট সাংবাদিক, কলামিস্ট ও মুক্তিযুদ্ধ গবেষক অজয় দাশগুপ্ত, বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম লুৎফুর রহমান, খন্দকার নজরুল ইসলাম ও ত্রাণ বিষয়ক সম্পাদক সাখাওয়াত ইসলাম ভূইয়া খোকন প্রমুখ।

আলোচনায় অংশ নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এমপি বলেন, ‘৬-দফা ছিল বাঙালির স্বাধীনতার টার্নিং পয়েন্ট। ৬-দফা নিয়ে অনেক বিতর্ক ছিল, দলের মধ্যে মতপার্থক্যও ছিল। কিন্তু বঙ্গবন্ধু ভাবতেন এই ৬-দফাই একদিন বাঙালির রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক মুক্তি এনে দিবে। ৬-দফা ছিল পূর্ব বাংলার জনগণের বাঁচা-মরার লড়াই, প্রাণের দাবি। এই দাবিগুলো বাস্তবায়িত হলে বাংলার দুঃখী মানুষের ভাগ্যে পরিবর্তন আসবে, পাকিস্তানের দুই অঞ্চলের অর্থনৈতিক বৈষম্য দূর হবে এবং বাঙালি চিরতরের জন্য শোষণ বঞ্চনার হাত থেকে মুক্তি পাবে।

অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, ৬-দফা দাবি বাংলাদেশের মুক্তি-সংগ্রামের ইতিহাসে এক অনন্য ঘটনা। ৬-দফা বাঙালির স্বাধীনতার মূল ভিত্তি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন ৬-দফার প্রবক্তা। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন বাঙালি মুক্তি ও স্বাধীনতার ক্ষেত্রে ৬-দফাই একদিন পথ দেখাবে এবং বাঙালির অর্থনৈতিক মুক্তি ও শোষণ বঞ্চনার চির অবসান ঘটাবে।

অধ্যাপক ড. মো. ফায়েকুজ্জামান বলেন, বঙ্গবন্ধু দুরদর্শী, বিচক্ষণ, সৎ ও সাহসী নেতা ছিলেন। তিনি লাহোর প্রস্তাবের ভিত্তিতেই পূর্ব বাংলার পুর্ণ স্বায়ত্বশাসন দাবি তোলেন। তাঁর নিজের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা ও জনগণের সমস্যা জেনেই ৬-দফা দাবি পেশ করেন এবং ৬-দফাভিত্তিক আন্দোলনে বিজয়ী হয়ে স্বাধীন দেশের সংবিধানে ৬-দফার দাবিসমূহ সন্নিবেশিত করেন। মোট কথা বাঙালির আত্ম-পরিচয় ও আত্ম-নিয়ন্ত্রণের অধিকারসমূহ ৬-দফায় অত্যন্ত জোড়ালোভাবে সংযোজন করা হয়েছিল।

অজয় দাসগুপ্ত বলেন, ৬ দফা দাবি পূর্ব বাংলায় ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে। যেহেতু ৬-দফার দাবিগুলো ছিল অত্যন্ত যৌক্তিক ও ন্যায়সঙ্গত এবং এর মধ্যে শ্রমজীবী কৃষক, মেহনতি মানুষ ও ছাত্রজনতার ভাগ্য পরিবর্তনের দিক-নির্দেশনা ছিল, তাই বাংলার জনগণ ভেবেছিল ৬-দফাই একদিন তাদের অর্থনৈতিক মুক্তি ও পথ চলার শক্তি যোগাবে। ৬-দফার ব্যাপক জনসমর্থন দেখে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে মিথ্যা ষড়যন্ত্র মামলা দায়ের করে তাকে ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলাতে চেয়েছিল। কিন্তু বাংলার বন্ধু বঙ্গবন্ধু এতই জনপ্রিয় ছিলেন যে, পাকিস্তান সরকারের সকল অত্যাচার, নির্যাতন, মামলা, হামলা দিয়েও ৬-দফার গতি রোধ করতে পারে নি।

সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, বঙ্গবন্ধু ১৯৪৮ সালেই বুঝতে পেরেছিলেন ঔপনেবেশিক ও ধর্মরাষ্ট্র পাকিস্তানের রাষ্টীয় কাঠামোর মধ্যে থেকে কোনদিনই বাংলার দুঃখী মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন সম্ভব নয়। তাই তিনি বাঙালির মুক্তি ও স্বাধীনতার জন্য ৬-দফা দাবি উত্থাপন করেছিলেন। ৬-দফা শুধু বাঙালির স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয় ছিল না, এটা ছিল সমগ্র পাকিস্তানের ন্যায়সঙ্গত ও যৌক্তিক দাবি। এই ৬-দফা দাবি ছিল পৃথিবীর নির্যাতিত, নিপীড়িত, অবহেলিত মানুষের প্রাণের দাবি।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, বঙ্গবন্ধু পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. শেখ আব্দুল্লাহ আল মামুন, কাজী রেহান সোবহান, সহ-প্রচার সম্পাদক এইচ এম মেহেদী হাসান, কার্যকরী সদস্য অধ্যাপক ড. সৈয়দ আব্দুল্লাহ আল মামুন, নাহিদ নূর আলো, আবু জাফর মহিউদ্দিন, তারেক ইমতিয়াজ খান, সুজাত আলী জাকারিয়া, সাংবাদিক সেলিম আহমেদ, জামান ইবনে আহসান ও ঢাকা মহানগর এর সাধারণ সম্পাদক সরদার মাহমুদুল হাসান রুবেল প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *