সুবর্ণবাঙলা ওয়েব ডেস্ক
রাশিয়ার আক্রমণের পর কিয়েভ থেকে ক্লাস্টার বোমার পরিত্যক্ত অংশ পরিষ্কার করছে ইউক্রেনের সেনাবাহিনী। ছবি: রয়টার্স
ইউক্রেনে ক্লাস্টার বম্ব বা গুচ্ছ বোমার পাঠানোর মার্কিন সিদ্ধান্তে সমালোচনা করেছে জাতিসংঘ ও অন্যান্য মানবাধিকার গোষ্ঠী। এ বোমায় বেসামরিক নাগরিক হত্যার অভিযোগ রয়েছে। আর জো বাইডেন বলছেন, এ সিদ্ধান্ত নেয়া তার জন্য খুব কঠিন ছিল। খবর বিবিসি।
‘ইউক্রেনীয়দের গোলাবারুদ ফুরিয়ে যাওয়ায়’ পদক্ষেপটি নিয়েছেন বলে জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি একে ‘সময়োপযোগী পদক্ষেপ’ বলে স্বাগত জানালেও মস্কোর একজন রাষ্ট্রদূত নিন্দা জানিয়েছে।
মাঝ আকাশ থেকে ছোড়া গুচ্ছ বোমা ১২০টিরও বেশি দেশে নিষিদ্ধ। এ বোমা অনেক সময় বিস্ফোরিত থেকে যায়, যার সক্রিয়তা বছরের পর বছরেও নষ্ট হয় না। অর্থাৎ পরবর্তীতে বিস্ফোরিত হতে পারে।
আগামী সপ্তাহে লিথুয়ানিয়ায় বসছে ন্যাটোর শীর্ষ সম্মেলন। এর আগেই নেয়া সিদ্ধান্ত বিষয়ে মিত্রদের সঙ্গে কথা বলেছেন বলে এক সাক্ষাৎকারে গতকাল শুক্রবার (৭ জনু) সিএনএনকে জানান বাইডেন।
গতকাল নিয়মিত ব্রিফিংয়ে হোয়াইট হাউসে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান বলেছেন, কর্মকর্তাদের জানা আছে যে অবিস্ফোরিত গুচ্ছ বোমা বেসামরিক ক্ষতির ঝুঁকি তৈরি করে। এই কারণেই আমরা যতদিন পারি সিদ্ধান্তটি পিছিয়ে দিয়েছি।
ইউক্রেনের গোলাবারুদ ফুরিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে জানান, এই সংঘাতের কোনো পর্যায়েই আমরা ইউক্রেনকে অরক্ষিত রাখব না।
তিনি অভিযোগ করেন, রাশিয়া এরই মধ্যে যে সব গোলা ইউক্রেনে ব্যবহার করেছে তার তুলনায় তাদের পাঠানো ক্লাস্টার বোমা অনেক বেশি নিরাপদ।
এ ক্ষেত্রে মার্কিন বোমার ভুল ব্যবহারের হার ২ দশমিক ৫ শতাংশ। অন্যদিকে রাশিয়ার হার ৩০-৪০ শতাংশ।
তবে বাইডেনের পদক্ষেপ এই সংক্রান্ত মার্কিন আইনের লঙ্ঘন। কারণ আইনানুসারে এক শতাংশের বেশি ব্যর্থতার হার রয়েছে এমন ক্লাস্টার যুদ্ধাস্ত্র উৎপাদন, ব্যবহার বা স্থানান্তর নিষিদ্ধ।
যুদ্ধের শুরুতে রাশিয়ার বিরুদ্ধে উঠা ক্লাস্টার ও ভ্যাকুয়াম বোমা ব্যবহারের অভিযোগ প্রসঙ্গে হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি বলেছিলেন, এটি সত্য হলে ‘যুদ্ধাপরাধ’ হবে।
গতকাল এক প্রতিক্রিয়ায় জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিস থেকে বলা হয়েছে, এই ধরনের অস্ত্রের ব্যবহার অবিলম্বে বন্ধ করা উচিত ও কোনো জায়গায় ব্যবহার করা উচিত নয়।
এমন পদক্ষেপে যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনা করে যুক্তরাষ্ট্রে রুশ রাষ্ট্রদূত আনাতোলি আন্তনভ।
২০০৮ সালে এ ধরনের অস্ত্র ব্যবহারে জাতিসংঘের এক কনভেশনে স্বাক্ষর করেছিল ব্রিটেন, জার্মানি ও ফ্রান্সসহ যুক্তরাষ্ট্রের বেশির ভাগ মিত্র।
অন্যদিকে ৮০ কোটি ডলারের ‘সময়োপযোগী, ব্যাপক ও অত্যন্ত প্রয়োজনীয়’ সামরিক সহযোগিতার জন্য জো বাইডেনকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।
টুইটারে তিনি বলেন, এই সাহায্য ইউক্রেনকে শত্রুর বিরুদ্ধে জয়ের কাছাকাছি নিয়ে আসবে।