কিশোরগঞ্জের পাগলা মসজিদে এবার মিললো ২৩ বস্তা টাকা, ডলার, পাউন্ড

অন্যান্য মফস্বল

সুবর্ণবাঙলা অনলাইন ডেস্ক

কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানবাক্সগুলোতে এবার মিলেছে ২৩ বস্তা টাকা। পাওয়া গেছে ডলার, পাউন্ড, রিয়াল, দিনার, রিঙ্গিতসহ বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালংকারও।

শনিবার সকাল সাড়ে আটটার আটটার দিকে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারসহ জেলা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে আটটি দানবাক্স খুলে এ টাকা পাওয়া যায়। দানবাক্সগুলো খোলার পর টাকা, বিদেশি মুদ্রা ও স্বর্ণালংকার ২৩টি বস্তায় ভরে মসজিদের দোতলায় নিয়ে গণনার কাজ শুরু হয়।

রূপালী ব্যাংকের ৬০জন কর্মকর্তা-কর্মচারী, মসজিদ মুসল্লি এবং এতিমখানা ও মাদ্রাসার শিক্ষক-ছাত্রসহ দুইশ’র বেশি লোক টাকা গুনছেন। সন্ধ্যার পর গণনার কাজ শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এবার দানবাক্সগুলো খোলা হয়েছে তিন মাস ১৩ দিন পর। এর আগে গত ৬ মে আটটি দানবাক্স খুলে মিলেছিল ৫ কোটি ৫৯ লাখ ৭ হাজার ৬৮৯ টাকাসহ স্বর্ণালংকার ও বৈদেশিক মুদ্রা। এবার তার চেয়ে বেশী টাকা মিলতে পারে।

রুপালি ব্যাংকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক রফিকুল ইসলাম বলেন, গণনা শেষে এই অর্থগুলো রূপালী ব্যাংকে জমা করা হবে।

কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ বলেন, তিনি সকাল থেকেই টাকা গণনার কাজ পর্যবেক্ষণ করছেন। টাকা গণনা শেষে ব্যাংক পর্যন্ত পৌঁছে দিতে পর্যাপ্ত পুলিশ ও আনসার সদস্য রাখা হয়েছে।

শহরের পশ্চিম প্রান্তে নরসুন্দা নদীর তীরে হারুয়া এলাকায় পাগলা মসজিদের অবস্থান। সুউচ্চ মিনার ও তিন গম্বুজ বিশিষ্ট তিনতলা মসজিদটি কিশোরগঞ্জের অন্যতম ঐতিহাসিক স্থাপনা।

পাগলা মসজিদ ঘিরে মানুষের কৌতূহলের শেষ নেই। এ মসজিদে দান করলে মনোবাসনা পূর্ণ হয়- এ বিশ্বাস থেকেই দেশ বিদেশের নানা ধর্ম ও বর্ণের মানুষ টাকা পয়সা, স্বর্ণালংকার ও বৈদেশিক মুদ্রা দান করেন। অনেকে বিশ্বাসমতে রাতের আধারে এসেও দান করেন।

প্রায় ৫০০ বছর আগে বারো ভূঁইয়াদের অন্যতম ঈশা খানের আমলে দেওয়ান জিলকদর খান ওরফে জিলকদর পাগলা নামে এক ব্যক্তি নরসুন্দা নদীর তীরে বসে নামাজ আদায় করতেন।

পরে সেখানে মসজিদটি নির্মিত হয়। জিলকদর পাগলার নামানুসারেই মসজিদটি ‘পাগলা মসজিদ’ হিসেবে পরিচিতি পায়।

কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ, জানান, ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদকে ঘিরে মানুষের অনুভূতি কাজ করে। এখানে একটি দৃষ্টিনন্দন মসজিদ নির্মাণের জন্য পরামর্শক নিয়োগের কাজ চরছে। অন্তত ৩০ হাজার মানুষ একসাথে নামাজ পড়তে পারে এমন একটি মসজিদ নির্মাণের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে বলে তিনি জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *