সুবর্ণবাঙলা প্রতিবেদন
সৎ ব্যবসায়ীর পাশে থাকবে এফবিসিসিআই আর অসৎ ব্যবসায়ীর বিপক্ষে দাঁড়াবে। কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে যারা দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি করে, তারা ব্যবসায়ী নয়। এফবিসিসিআই অসাধু ব্যবসায়ীদের জন্য কোনো অ্যাডভোকেসি করবে না বলে জানান এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম।
সোমবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনে ‘বর্তমান বৈশ্বিক পরিস্থিতি খাদ্যদ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির জন্য প্রধানত দায়ী’ শীর্ষক ছায়া সংসদ বিতর্ক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামান।
প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়কে হারিয়ে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের বিতার্কিকরা বিজয়ী হন। এতে বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মুহাম্মদ রইস, সাংবাদিক ড. শাকিলা জেসমিন, আরিফুর রহমান, সুশান্ত সিনহা ও মো. শারফুল আলম। প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ী দলকে ট্রফি ও সনদ দেওয়া হয়।
এফবিসিসিআই-এর সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, কৃত্রিম সংকট যারা করে, তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। পণ্যের সংকট সৃষ্টি ও বাজার অস্থিরতার সঙ্গে জড়িত প্রতিষ্ঠান যত বড় প্রভাবশালী হোক না কেন, আমরা তাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেব। ডলার সংকটের কারণে ছোট ছোট ব্যবসায়ী পণ্য আমদানি করতে পারছেন না। মুক্তবাজার অর্থনীতিতে সিন্ডিকেট করা সহজ নয়। চাহিদা ও জোগানের সঙ্গে মিল রেখে সাপ্লাই চেইন ঠিক থাকলে পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। তবে দ্রব্যমূল্যের দাম সহনীয় রাখতে হলে আমদানি পণ্যের ওপর কর ছাড় দেওয়া উচিত। এক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে দেশীয় উৎপাদন খাত যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।
হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, নানা পদক্ষেপ নেওয়া সত্বেও দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখা যাচ্ছে না। আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের হিসাব মেলাতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে নিম্ন ও মধ্যবিত্তরা।
দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির জন্য বৈশ্বিক পরিস্থিতিকে দায়ী করা হলেও এর পেছনে সুশাসনের অভাব, রাজনৈতিক সদিচ্ছা, সরকারি সংস্থাগুলোর অদক্ষতা ও সমন্বয়হীনতা অনেকাংশে দায়ী। পাশাপাশি বাজার নিয়ন্ত্রণে সবচেয়ে বড় বাধা অনিয়ম ও দুর্নীতি প্রতিরোধ করতে না পারা। এক বছরের ব্যবধানে খাদ্যদ্রব্যসহ অধিকাংশ পণ্যের দাম দ্বিগুণ হয়েছে।
বাজারে নিত্যপণ্যদ্রব্যের যে উত্তাপ, তা সাধারণ মানুষকে অস্বস্তিতে ফেলেছে। নিম্ন-আয়ের মানুষ ফ্যামিলি কার্ডের মাধ্যমে স্বল্পকিছু পণ্য ন্যায্যমূল্যে কিনতে পারলেও মধ্যবিত্তদের যাওয়ার কোনো জায়গা নেই।
তিনি বলেন, করোনা-পরবর্তী সময়ে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে পণ্য সরবরাহব্যবস্থা হুমকির মুখে পড়ে। আবার অন্যদিকে ডলারের দাম বৃদ্ধি, মূল্যস্ফীতিসহ নিয়ন্ত্রিত আমদানি খাদ্যদ্রব্যের দাম বৃদ্ধি করছে। তবে পণ্যমূল্য বৃদ্ধির জন্য মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য, পরিবহণ ভাড়া, রাস্তায় পদে পদে চাঁদাবাজি, সাপ্লাই চেইনের দুর্বলতা ও বিপণনব্যবস্থার ত্রুটিও এর জন্য দায়ী।