সুবর্ণবাঙলা অনলাইন ডেস্ক
সরকারের হুঁশিয়ারি ও পাকা রশিদে লেনদেনে বাধ্য হয়ে ডিমের দাম কমালো উৎপাদনকারী কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো। পাইকারী বাজারে প্রতি পিস ডিমের দাম এক টাকা কমিয়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ১১ টাকা ৫০ পয়সা করে, আর খুচরা বাজারে পিস প্রতি ডিমের দাম ১২ টাকা ৫০ পয়সা।
যদিও আড়তদাররা বলছেন, সরকারের হুঁশিয়ারি বা আইন শৃংখলা বাহিনীর অভিযান নয়- ডিমের দাম কমেছে চাহিদা কমার কারণে।
মোহাম্মদপুরের মুদি দোকানি মিজানুর রহমান রোববারও প্রতি পিস ডিম বিক্রি করেছিলেন ১৫ টাকা করে। দুইদিনের ব্যবধানে মঙ্গলবার আড়াই টাকা কমিয়ে প্রতি পিস ডিম ১১ টাকা ৫০ পয়সায় কিনে, বিক্রি করছেন ১২ টাকা ৫০ পয়সায়। মিজান বলছেন ১২ টাকার উপরে প্রতি পিস ডিম বিক্রি করা যাবে না- সরকারের এমন হুশিয়ারীর পরই উৎপাদনকারী বড় প্রতিষ্ঠানগুলো দাম কমাতে বাধ্য হলো।
তবে পরিস্থিতি বদলের অন্যতম কারণ কর্পোরেট থেকে খামারী এবং আড়তদার ও খুচরা বিক্রেতা সবাই ডিমের লেনদেন করছেন পাকা রশিদে। ক্রেতারাও বলছেন সরকারের এমন তৎপরতায় দাম কমায় আবার প্রমাণিত হলো বাজার এখন সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণে।
ডিমের অন্যতম পাইকারী বিক্রয়কেন্দ্র কাপ্তান বাজারে সরজমিনে ঘুরে দেখা গেছে মঙ্গলবার ডিমের দাম কমেছে প্রতিপিসে এক টাকা করে। এখন ১১ টাকা ৫০ পয়সায় বিক্রি হচ্ছে প্রতিটি ডিম। এখানকার আড়তদারেরাও স্বীকার করছেন ডিমের বাজার এখন সিন্ডিকেটের কব্জায়।
এদিকে ব্যবসায়ী নেতারা দাবি করছেন সিন্ডিকেট নয়- হাতবদলের কারণে ডিমের দাম বাড়ছে। ঢাকার বাইরের আড়ত থেকে ডিম আনতে গেলে প্রতি সত্তুর হাজার ডিমে এক থেকে দুই হাজার ডিম নষ্ট হয় কিংবা ভেঙে যায়, এর বাইরে যাত্রাপথে পরিবহণের খরচ বেড়েছে। এসব কারণে ডিমের দাম বাড়ছে।
নিয়মিত বাজার তদারকি থাকলে ডিমের বাজারে কারসাজি সহজ হবে না বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।
বর্ষায় খামারের ক্ষতি হয় বলে প্রতি বছর এই সময় ডিমের দাম কিছুটা বাড়ে। তবে এবার দাম বৃদ্ধি আগের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। ডজন হিসেবে ডিমের দাম উঠেছিলো ১৬৫ টাকায়।
বাজারে বাদামি ডিমের হালি এখন ৬০ টাকা। সাদা ডিম ৫৫ টাকা। যা বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ দাম। পাইকারিতেই বাদামি ডিমের শ’ বিক্রি হয়েছে ১২৭০ টাকা। অর্থাৎ প্রতিটি ডিমের দাম পড়ে ১২ টাকা ৭০ পয়সা। হালি হিসেবে করলে আসে ৫০ টাকা ৮০ পয়সা। আড়তে ১০০ সাদা ডিমের ১২০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এক সপ্তাহ আগেও যে দামটা ছিলো এক হাজার ৮০ থেকে ১১শ’ টাকা।
গত বছরের এই সময়ে প্রতি ডজন ডিমের দাম উঠেছিল ১৫৫ টাকা। তবে বর্ষা শেষে তা আবার কমে গিয়েছিলো। গত মাস পর্যন্ত ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকায় ডিম বিক্রি হয়। এরপরই বাড়তে থাকে।
বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন বলছে, ডিমের বাজারের মাত্র ২০ শতাংশ কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানের দখলে। কিন্তু বাকি ৮০ শতাংশ ডিমের দাম তারাই নিয়ন্ত্রণ করে।