কাশ্মীরে বেড়াতে গিয়ে মৃত্যু: বাবাকে খুঁজছে ছোট্ট দুই শিশু আরাধ্য ও নেফারতিতি

ঘটণা- দুর্ঘটনা

সুবর্ণবাঙলা ডেস্ক

স্ত্রী ও দুই সন্তানের সঙ্গে বাবা অনিন্দ্য এখন কেবলই স্মৃতি। ছবি: ইত্তেফাক

ভারতের কাশ্মীরের শ্রীনগরের ডাল লেকে হাউসবোটে অগ্নিকাণ্ডে নিহত অনিন্দ্য কৌশল নাথের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। অনিন্দ্য কৌশল রাঙামাটি গণপূর্ত অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলীর দায়িত্বে ছিলেন। বিদ্যুৎ শর্টসার্কিটে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

অনিন্দ্য কৌশল মিরসরাই উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড দক্ষিণ দূর্গাপুর গ্রামের বনমালী উকিল বাড়ির প্রকৌশলী স্বপন কুমার নাথের সন্তান। স্বপন কুমার নাথ সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের অ্যাডিশনাল চিফ ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে অবসর নেন। এরপর চুক্তিভিত্তিক নিয়োগে সর্বশেষ কর্ণফুলী টানেলের সিনিয়র কনসালট্যান্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ছেলের শোকে তিনি নির্বাক। তার দুই সন্তান অনিন্দ্য কৌশল ও কৌশাল তূর্ণা।

জানা গেছে, শনিবার (১১ নভেম্বর) ভোর সোয়া ৫টার দিকে ডাল লেকের ৯ নম্বর ঘাটের কাছে আগুনের সূত্রপাত হয়। একটি হাউসবোট থেকে পাশে নোঙর করে রাখা আরও চারটি হাউসবোটে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। পুড়ে যাওয়া পাঁচটি হাউসবোটের একটিতে ছিলেন অনিন্দ্যসহ বাংলাদেশি তিনজন। অগ্নিদগ্ধ হয়ে তিনজনই মারা যান। এ সময় আরও সাতজন অগ্নিদগ্ধ হয়েছেন। দুর্ঘটনায় নিহত অন্যরা হলেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী ইমন দাশ গুপ্ত এবং তাদের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ঠিকাদার আসিফ মঈন উদ্দিন। ইমন দাশ গুপ্ত চট্টগ্রাম জেলার রাউজান উপজেলার বিনাজুরী গ্রামের ও আসিফ মঈন উদ্দিন একই উপজেলার কদলপুর ইউনিয়নের বাসিন্দ। তাদের শরীর সম্পূর্ণ পুড়ে যাওয়ায় পরিচয় শনাক্ত করতে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করেছে স্থানীয় প্রশাসন।

অনিন্দ্য কৌশল নাথের বাবা স্বপন কুমার নাথ বলেন, আমার ছেলে তার দুই বন্ধুসহ চিকিৎসার জন্য গত ৩ নভেম্বর ভারতে যায়। চিকিৎসা শেষে তাদের ১৩ নভেম্বর ফিরে আসার কথা ছিল। চিকিৎসা শেষে তারা কাশ্মীরে ঘুরতে যায়। এক বছর বয়সী ছেলে আরাধ্য এবং চার বছর বয়সী মেয়ে নেফারতিতি নামে অনিন্দ্যের দুটি সন্তান রয়েছে। সে না আসায় সন্তানরা তার মায়ের কাছে জানতে চাচ্ছে, বাবা কখন আসবে। ছোট ছোট অবুঝ দুটি শিশু রেখে সে চলে যাবে ভাবতে পারছি না বলে তিনি কেঁদে উঠেন।

তিনি আরও বলেন, লাশ সনাক্তের জন্য আমার কয়েকজন আত্মীয় কাশ্মীর গেছেন। ওখানকার আইনি প্রক্রিয়া শেষে মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আগামী কয়েকদিনের মধ্যে লাশ দেশে আসার কথা রয়েছে। লাশ দেশে আসলে গ্রামের বাড়িতে সৎকার করা হবে বলেও জানান তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *