সুবর্ণবাঙলা প্রতিবেদন
আইনমন্ত্রী
বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যালোচনায় ভোটের আগে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংলাপের বিষয় আসেনি। জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের ইউনিভার্সাল পিরিয়ডিক রিভিউ (ইউপিআর) ওয়ার্কিং গ্রুপে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যালোচনা হয়। এ অধিবেশনে মানবাধিকার রক্ষায় বাংলাদেশের বিভিন্ন পদক্ষেপের প্রশংসা করা হয়েছে বলে জানান আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
সোমবার সন্ধ্যায় জেনেভায় ইউপিআরে পর্যালোচনা শেষে ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান আইনমন্ত্রী। এ সময় ঢাকা থেকে সাংবাদিকরা আইনমন্ত্রীর কাছে বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন করেন। মন্ত্রী এসবের জবাব দেন। সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমসহ অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়ার ব্যাপারে জোরালোভাবে আমাদের অবস্থান এবং যেটা বাস্তব ও সত্য সেটা বলেছি। তিনি বলেন, এবার বাংলাদেশের চতুর্থ রিভিউ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর আগে ২০০৯, ২০১৩ ও ২০১৮ সালে বাংলাদেশের পিরিয়ডিক রিভিউ হয়েছিল। এ সময় একটি দায়িত্বশীল রাষ্ট্র হিসাবে মানবাধিকার সুরক্ষা ও প্রসারে বাংলাদেশ সরকারের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছি।
জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের ইউনিভার্সাল পিরিয়ডিক রিভিউ (ইউপিআর) ওয়ার্কিং গ্রুপে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যালোচনায় আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংলাপে বসার বিষয়ে কোনো কথা আসেনি বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
তিনি বলেন, গত রিভিউয়ের পর বাংলাদেশে মানবাধিকার সম্পর্কিত বেশকিছু আইন প্রণয়ন করা হয়েছে, সেগুলো তুলে ধরেছি। এছাড়া দেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও সহিংসতামুক্ত নির্বাচন অনুষ্ঠানে বর্তমান সরকারের প্রতিশ্রুতির কথাও পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে।
বাংলাদেশের এবারের রিভিউয়ে ১১১টি দেশ অংশ নিয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, এদের অধিকাংশের বক্তব্যে মানবাধিকার রক্ষায় বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের প্রশংসা করেছে। এছাড়া নারীর ক্ষমতায়ন, দারিদ্র্য দূরীকরণ, আর্থসামাজিক উন্নয়ন, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি, খাদ্য নিরাপত্তা, সবার জন্য আবাসন, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষার উন্নয়ন, জলবায়ু পরিবর্তনে সরকারের অগ্রগতিও প্রশংসিত হয়েছে। রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ায় অংশগ্রহণকারী দেশগুলো বাংলাদেশের ভূয়সী প্রশংসা করেন। মানবাধিকার রক্ষায় বাংলাদেশের উদ্যোগগুলোকে এগিয়ে নিতে অংশগ্রহণকারী দেশগুলো বেশকিছু সুপারিশ করেছে বলেও জানান আইনমন্ত্রী।
তিনি বলেন, এসব সুপারিশের মধ্যে রয়েছে-জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক কার্যক্রম ও ব্যবস্থাগুলোর সঙ্গে সহযোগিতা জোরদারকরণ, জাতীয় পর্যায়ে মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নয়নে বিভিন্ন ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করা, মানবাধিকার কমিশনকে শক্তিশালী করা, প্রতিবন্ধী সুরক্ষা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেওয়া, ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা দূর করতে পদক্ষেপ অব্যাহত রাখা, শিক্ষাব্যবস্থার উন্নতিতে জোর দেওয়া, নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করা, অভিবাসীদের সুরক্ষা ব্যবস্থা উন্নয়ন, গ্রাম পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা, বাল্যবিয়ে রোধ করতে উদ্যোগ জোরদার করা, মানব পাচার বন্ধের চেষ্টা অব্যাহত রাখা।