বাইকে চেপে ৩৩০ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে বিধানসভায়!

আন্তর্জাতিক

এনডিটিভি


ছবি সংগৃহীত।

জনগণের ভোটে প্রথমবারের মতো নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছেন এক নেতা। তবে বিধানসভায় যাওয়ার জন্য জোর চেষ্টা চালিয়েও ব্যবস্থা করতে পারলেন না কোনো গাড়ির। বাধ্য হয়ে ধার করা বাইকে করেই রওনা হলেন বিধানসভার দিকে। শুধু তাই-ই নয়, বাইকে করে বিধানসভায় তার এই যাত্রা সোশ্যাল মিডিয়ায় সরাসরি সম্প্রচারও করেন ঐ ব্যক্তি। ব্যতিক্রমী এই ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের মধ্যপ্রদেশে।

ভারতীয় বার্তাসংস্থা পিটিআইয়ের বরাত দিয়ে বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভ্রমণের জন্য কোনো গাড়ি না পেয়ে মধ্যপ্রদেশের সদ্য-নির্বাচিত ভারত আদিবাসী পার্টির (বিএপি) বিধায়ক কমলেশ্বর দোদিয়ার মোটরসাইকেলে করে রাজ্যের রাজধানী ভোপালে রওয়ানা হন। এমনকি তার এই যাত্রা তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচারও করেন। দোদিয়ার তার দলের একমাত্র বিধায়ক এবং গত ১৭ নভেম্বর অনুষ্ঠিত মধ্যপ্রদেশ বিধানসভার নির্বাচনে রাতলাম জেলার সাইলানা কেন্দ্র থেকে নির্বাচিত হন।

জানা গেছে, বিধায়ক হওয়ার পর রাজ্যের রাজধানীতে নিজের এই প্রথম সফরের জন্য গাড়ির ব্যবস্থা করার চেষ্টা করেছিলেন কমলেশ্বর দোদিয়ার। কিন্তু তিনি একটিও গাড়ি পাননি বলে সাংবাদিকদের জানান। অবশেষে তিনি তার শ্যালকের মোটরবাইকটি ধার নেন এবং এতে ‘এমএলএ’ স্টিকার লাগিয়ে যাত্রা শুরু করেন। দীর্ঘ ৩৩০ কিলোমিটার যাত্রার পর গত বুধবার রাতে ভোপালে পৌঁছান দোদিয়ার। অবশ্য ভোপালে পৌঁছানোর পরে ‘অতিথি’ হিসেবে এমএলএ রেস্ট হাউজে থাকার সুযোগ পান দোদিয়ার।

এরপর বৃহস্পতিবার তিনি গণতন্ত্রের মন্দিরে শ্রদ্ধা জানাতে বিধানসভার প্রবেশদ্বারের সামনে যান এবং পরে কর্মকর্তাদের কাছে বিধায়ক হিসেবে তার পরিচয়পত্র পেশ করেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান এবং রতলাম পুলিশকে ট্যাগ করে দেওয়া এক পোস্টে দোদিয়ার বলেন, বিধানসভায় কাগজপত্র জমা দেওয়ার জন্য তার ভোপাল আসা প্রয়োজন ছিল। তবে এই ভ্রমণের জন্য গাড়ির ব্যবস্থা করতে না পারায় তিনি মোটরবাইকে করেই রওয়ানা দেন।

তার দাবি, তার জন্য প্রয়োজনীয় নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা উচিত যাতে পথে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে। তিনি ফেসবুক লাইভের মাধ্যমে ভোপালে তার যাত্রার দৃশ্য সরাসরি সম্প্রচারও করেন। দোদিয়ার বলেন, যেহেতু তিনি দরিদ্র এক শ্রমিকের পরিবার থেকে উঠে এসেছেন, তাই তিনি চার চাকার গাড়ির খরচ বহন করতে সক্ষম নন। এমনকি জনগণের কাছ থেকে টাকা ধার করে সদ্য সমাপ্ত নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন বলেও জানান তিনি।

তবে দোদিয়ার দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি সম্পন্ন করছেন এবং সদ্য সমাপ্ত নির্বাচনে বর্তমান কংগ্রেস বিধায়ক হর্ষ বিজয় গেহলটকে ৪ হাজার ৬১৮ ভোটে পরাজিত করেন। এই নির্বাচনে বিজেপি ১৬৩টি আসন এবং কংগ্রেস ৬৬টি আসনে জয় পেলেও ২৩০ সদস্যের বিধানসভায় বিএপি কেবল অবশিষ্ট এই একটি আসনে জিতেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *