পিআইবি ফিচার
প্রণব মজুমদার
বায়ান্নের গৌরবের রক্তাক্ত ভাষা আন্দোলন আমাদের দিয়েছে সাহস। আর মুক্তিযুদ্ধ দিয়েছে লড়াকু শক্তি। স্বাধীন বাংলাদেশের বায়ান্ন বছর পর হিসাব করতে গিয়ে দেখা যায়, দেশে শিল্পায়নের ভিত্তিগুলো তৈরি হয়েছে ব্যাপকভাবে! মুক্তিযুদ্ধের পর আমরা বীরের জাতি শত বাধার মধ্যে শুধু এগিয়ে গেছি। আমাদের যাত্রা শুরু হয়েছিল সম্পদে অপ্রতুল একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ হিসাবে। কিন্তু নিন্দুকদের আশঙ্কা অসত্য প্রমাণ করে একের পর এক বাধা পেরিয়ে এগিয়ে গেছে দেশ। এ এগিয়ে যাওয়ার পথ রচিত হয়েছিল কিছু অভ‚তপূর্ব ঘটনা, অভিনব ভাবনা, ভবিষ্যৎমুখী পরিকল্পনা ও উদ্যোগে। আমরা ফিরে দেখছি বাংলাদেশের উজ্জ্বল সেসব মুহূর্ত।
গত পাঁচ দশকে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য কাঠামোগত পরিবর্তন হয়েছে। স্বাধীনতার সময় দেশটিকে কৃষিনির্ভর গ্রামীণ অর্থনীতির দেশ হিসাবে চিহ্নিত করা হতো। সত্তরের দশকের গোড়ার দিকে মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) কৃষির অংশ ছিল প্রায় ৬০ শতাংশ এবং শিল্প ও পরিষেবা খাতের ছিল খুব ছোটো অংশ। দেশের অর্থনীতিতে কৃষির অংশ এখন ১১ দশমিক ৩৮ শতাংশে নেমে এসেছে, যেখানে শিল্প ও সেবা খাতের যথাক্রমে ৩৫ দশমিক ৫৫ এবং ৫৩ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
বাংলাদেশে শিল্পায়নের সাফল্যের কথা বলতে গেলে রপ্তানিমুখী, তৈরি পোশাক শিল্পের কথাই সবার আগে চলে আসে। রপ্তানিমুখী শিল্পগুলোর মধ্যে তৈরি পোশাক অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। আশির দশকের মাঝামাঝি সময়ে বৈশ্বিক এবং দেশীয় নীতিমালা এক্ষেত্রে সহায়তা করেছে। শূন্য দশকের গোড়ার দিকে সরকার কয়েকটি শিল্পকে গুরুত্বপূর্ণ খাত (থ্রাস্ট সেক্টর) হিসাবে চিহ্নিত করেছিল। এর মধ্যে আছে সফটওয়্যার এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, ফার্মাসিউটিক্যালস, চামড়াজাত পণ্য ও পাদুকা এবং জাহাজনির্মাণ। রপ্তানিমুখী শিল্প কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে এবং দারিদ্র্য হ্রাসে সহায়তা করেছে। নারীর ক্ষমতায়নে সহায়তা করেছে তৈরি পোশাকশিল্প খাত। অষ্টম প বার্ষিক পরিকল্পনায় (২০২১-২৫) রপ্তানিমুখী শিল্প উন্নয়নের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।
উন্নয়নের সড়ক অতিক্রম করেছে দেশ। এখন বাংলাদেশের অবস্থান মহাসড়কে। গত ১০ বছরে দেশে উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন হয়েছে। অবকাঠামোগত সুবিধা যেমন: রাস্তাঘাট, বড়ো বড়ো সেতু, বিশেষ করে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, মহানগরে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, সুড়ঙ্গ পথে চট্টগ্রামের কর্ণফুলি বঙ্গবন্ধু টানেল প্রভৃতি উন্নয়ন তো দেশের শিল্পায়নে উন্নতির উল্লেখযোগ্য দৃশ্যমান দৃষ্টান্ত। দীর্ঘ পরিকল্পনার সুষম বাস্তবায়ন।
টেকসই উন্নয়ন অভীষ্টের মধ্যে একটি হলো শিল্প উদ্ভাবন ও অবকাঠামো। ১৭টি অভীষ্টের ৯ নম্বরে রয়েছে এটি।
৫০ বছরে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় বেড়েছে ১৪ দশমিক ৭৫ গুণ আর জিডিপি বেড়েছে ৩০ গুণ। স্বাধীনতার আগে দারিদ্র্যসীমার নিচে ছিল ৮৮ শতাংশ জনগোষ্ঠী, বর্তমানে এ সংখ্যা ২০ শতাংশের কম। ৫০ বছরে ধান-চালের উৎপাদন প্রায় চারগুণ হয়েছে। জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৩ থেকে ৪ শতাংশ। বর্তমানে ৮ শতাংশের ওপর। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, দেশে দারিদ্র্যের হার কমেছে ৬০ শতাংশেরও বেশি। অন্যদিকে তৈরি পোশাক ছাড়াও চাঁদপুরের রুপালি ইলিশ, হিমায়িত চিংড়ি, রাজশাহীর ফজলি আম, সিলেটের শীতলপাটি, নারায়ণগঞ্জের জামদানি, টাঙ্গাইলের তাঁত, কুমিল্লার খাদি বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে। বাংলাদেশের ওষুধ যাচ্ছে বিশ্বের ১৬৬টি দেশে। এসব অগ্রগতির স্বীকৃতিও মিলছে। লন্ডনভিত্তিক অর্থনৈতিক বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান বিএমআই রিসার্চ ভবিষ্যতের যে ১০টি উদীয়মান বাজারকে চিহ্নিত করেছে, তার মধ্যে প্রথমস্খানে রয়েছে বাংলাদেশ। ২০২০ সালের সূচক অনুযায়ী, বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ৪১তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ। ব্রিটেনের অর্থনৈতিক গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর ইকোনমিকস অ্যান্ড বিজনেস রিসার্চের ওয়ার্ল্ড লিগ টেবিল ২০২১ রিপোর্ট অনুযায়ী, বর্তমান ধারা অব্যাহত থাকলে ২০৩৫ সাল নাগাদ বিশ্বের ২৫তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ হবে বাংলাদেশ।
করোনার ধাক্কা কাটিয়ে মেগা প্রকল্পগুলোর কাজে এসেছে পূর্ণগতি। চলতি বছরে মধ্যম আয়ের দেশ হিসাবে পরিচিতি লাভ করেছে। ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশের লক্ষ্যে মেগা প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়নে গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার।
গ্রামা লে এখন ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ। বার্ষিক মোট বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিমাণ ২৫ হাজার ২৩৫ মেগাওয়াট। মহাকাশে সফলভাবে উৎক্ষেপণ করা হয়েছে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট, উন্নয়নের রোডম্যাপ ধরে পায়রা সমুদ্রবন্দর উদ্্বোধন হয়েছে। নির্মিত হচ্ছে এলএনজি টার্মিনাল।
বিস্ময়কর অগ্রগতি ঘটেছে কৃষি খাতে। করোনার দুঃসময়ে আমাদের রপ্তানি আয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় এখন ২ হাজার ৫৫৪ ডলার।
সদ্যপ্রয়াত মার্কিন ক‚টনীতিক হেনরি কিসিঞ্জার বলেছিলেন, বাংলাদেশ তলাবিহীন ঝুড়ি। বিশ্বে ভিক্ষুকের দেশ হবে বাংলাদেশ। পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, আমি বাংলাদেশের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ দেখতে পাচ্ছি। বঙ্গবন্ধুর বাণী অক্ষরে অক্ষরে বাস্তবায়িত হয়েছে; আর কিসিঞ্জারের বক্তব্য অসাড় প্রমাণ করে উন্নয়নশীল বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। কোভিডে থমকে যাওয়া অর্থনৈতিক বিশ্বে বাংলাদেশের অর্থনীতির চাকা গতিশীল। ৫০ বছরে বদলে যাওয়া নতুন এক বাংলাদেশ দেখছে বিশ্ব। লক্ষ্য রূপকল্প ২০৪১।
এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর এডিমন গিন্টিং সম্প্রতি সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, কোভিড-১৯-এর ধাক্কার পরও বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। তাঁর মতে, টেকসই প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে বাংলাদেশকে এখন তিনটি বিষয়ে জোর দিতে হবে। প্রথমত, বেসরকারি খাতের উন্নয়নের মাধ্যমে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। এক্ষেত্রে যেসব বাধা রয়েছে, সেগুলো দূর করতে হবে। এছাড়া প্রয়োজনীয় অবকাঠামো তৈরি করতে হবে। দ্বিতীয়ত, অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক নিরাপত্তায় খরচ বাড়াতে হবে। এজন্য জোর দিতে হবে অভ্যন্তরীণ সম্পদ আহরণে। তৃতীয়ত, জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে।
আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে দক্ষতা বাড়াতে বাংলাদেশকে ১ হাজার ২৩৩ কোটি টাকা ঋণ দেবে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। ৩১ মার্চ সংস্থাটি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়। এতে বাংলাদেশে রপ্তানির গুণগত মান উন্নয়ন, দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষরের বিষয়ে সক্ষমতা বৃদ্ধির কথা বলা হয়েছে। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক আন্তঃসীমান্ত বাণিজ্যের দক্ষতা এবং নিরাপত্তা উন্নতির মাধ্যমে প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করার জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রচেষ্টাকে সমর্থন করেছে। এ লক্ষ্যে ১৪৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ প্যাকেজ অনুমোদন করেছে প্রতিষ্ঠানটি। একই দিন ফিলিপাইনের রাজধানী ম্যানিলায় এডিবির প্রধান কার্যালয়ে এ অর্থ অনুমোদন দেওয়া হয়।
পাশাপাশি রপ্তানি বহুমুখীকরণ ও প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়াতে বাণিজ্য সুবিধার কৌশলগুলো বাস্তবায়নে সীমান্ত সংস্থা ও বেসরকারি খাতগুলোর মধ্যে আরও সমন্বয়ের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
এডিবির মুখ্য অর্থনীতিবিদ তাদাতেরু হায়াশি বলেন, এডিবির এ সহায়তা শিল্পায়ন ও বাণিজ্যের মাধ্যমে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করতে সরকারের লক্ষ্যের প্রতি সমর্থন জানাবে। এ কর্মসূচি রপ্তানি পণ্য ও গন্তব্যের বৈচিত্র্য আনতে সহায়তা ছাড়াও উন্নত যোগাযোগের মাধ্যমে দক্ষিণ এশিয়ার সহযোগী দেশগুলোর মধ্যে ব্যাবসাবাণিজ্য সহজ করবে।
এডিবির এ সহায়তায় ৭৭৬ কোটি টাকা নীতিভিত্তিক ঋণ রয়েছে, যা দেশের শুল্ক আইনি কাঠামোকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করা, কার্গো ক্লিয়ারেন্স প্রক্রিয়ার উন্নতি, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ক্ষমতা জোরদারসহ বিভিন্ন সংস্কারে ব্যবহার করা যাবে।
এছাড়া নীতি সংস্কারের সহায়ক হিসাবে ৪৫৭ কোটি টাকায় আখাউড়া, সোনা মসজিদ ও তামাবিল সীমান্তে বাংলাদেশ ল্যান্ড পোর্ট অথরিটি (বিএলপিএ) ও এনবিআর-এর মাধ্যমে সমন্বিত শুল্ক স্টেশন ও স্থল বন্দর নির্মাণ করা হবে। উন্নত কাস্টমস ক্লিয়ারেন্স এবং কার্গো পরিবহণের জন্য স্থাপন করা হবে সহায়ক সরঞ্জাম।
এডিবি বিশেষ প্রযুক্তিগত সহায়তা তহবিল থেকে ১২৯ কোটি টাকার কারিগরি সহায়তা অনুদান দেবে, যা দিয়ে শুল্ক আইনি কাঠামোর আধুনিকীকরণ ও সীমান্ত সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয়ে কেন্দ্রীয় শুল্ক সুবিধার কার্যকর পরিকল্পনা নেওয়া হবে। সীমান্তগুলোয় অত্যাধুনিক শুল্ক কার্যক্রম বাস্তবায়নে এনবিআর-এর সক্ষমতা এবং এনবিআর ও স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের প্রকল্পের বাস্তবায়ন জোরদার হবে।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দেশে শিল্পনীতির উদ্দেশ্য কিছুটা পরিবর্তন হয়েছে। ঐতিহাসিকভাবে বাংলাদেশে শিল্পায়ন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে খুবই দুর্বল জায়গা থেকে। সত্তরের দশকে বাংলাদেশ একটি আমদানি-প্রতি¯’াপন শিল্পায়ন কৌশল অনুসরণ করে। ১৯৭১-৭৫ সালে সরকারি খাতের ওপর প্রাধান্য দিয়ে শিল্প উন্নয়ন পরিকল্পনা করা হয়। ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প এবং বিদেশি শিল্পকে সরকারি খাতের বাইরে রাখা হয়েছিল। ১৯৭৫ সালের সংশোধিত শিল্পনীতিতে বিদেশি এবং স্থানীয় উভয় ক্ষেত্রেই বেসরকারি বিনিয়োগকারীকে সরকারি খাতের করপোরেশনগুলোর সঙ্গে সহযোগিতায় শিল্প স্থাপনের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল, যেখানে সরকারি এন্টারপ্রাইজগুলো প্রধান অবদান রাখতে পারত। ১৯৭৫ সালের পর শিল্পনীতির প্রধান উদ্দেশ্য ছিল বেসরকারি খাতের নেতৃত্বে উন্নয়ন ঘটানো। তাই উদার ঋণনীতির মাধ্যমে বেসরকারি বিনিয়োগকে উৎসাহিত করা হয়েছে। ১৯৭৮ সালের শিল্পনীতি সরকারি খাতকে সংখ্যালঘু শেয়ারহোল্ডার হিসাবে বেসরকারি খাতের সঙ্গে যৌথ বিনিয়োগে অংশ নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়। যেসব ক্ষেত্রে সরকারি খাতের করপোরেশনগুলোর বিনিয়োগ বেশি ছিল। এমন ক্ষেত্রেও বিনিয়োগ পরিচালনার দায়িত্বের অনুমতি বেসরকারি খাতকে দেওয়া হয়।
জিডিপির প্রবৃদ্ধি, রপ্তানি আয় এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে শিল্পায়নের অবদান উল্লেখযোগ্য। কাঠামোগত সমন্বয় নীতির অধীনে পরবর্তী দশকগুলোয় এসব শিল্পের বেসরকারীকরণ আরও গতি লাভ করে।
১৯৯৯, ২০০৫ ও ২০১০-এর শিল্পনীতিগুলো অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক উভয় ক্ষেত্রেই বেসরকারি খাতের সম্পৃক্ততাকে বাড়ানোর জন্য কর্মপরিকল্পনা তৈরি করেছিল। এ নীতির একটি প্রধান লক্ষ্য ছিল রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের বেসরকারীকরণ। এছাড়া শিল্প খাতের রপ্তানিমুখীকরণ, শিল্পের প্রতিযোগিতার উন্নতি এবং শিল্প উন্নয়নের জন্য সম্পদের কার্যকর ব্যবহারের ওপর জোর দেওয়া হয়েছিল, যাতে মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপিতে) এই খাতের অবদান উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ানো যায়। শিল্পায়নে বেসরকারি খাতের ভ‚মিকা, ব্যবসায়িক প্রক্রিয়ার সংস্কার, বাণিজ্য উদারীকরণ, ক্ষুদ্র ও মাঝারি খাতের উন্নয়ন, শিল্পায়নের সুবিধা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান, উৎপাদনশীলতা এবং পণ্যের মান বৃদ্ধি, সক্ষমতা বৃদ্ধি প্রভৃতির ওপর জোর দিয়ে শিল্পনীতি ২০১৬ প্রণয়ন করা হয়েছিল। একটি কার্যকর বাণিজ্যনীতি ছাড়া একটি সফল শিল্পায়ন সম্ভব নয়। তাই দেখা যায়, শিল্পনীতিগুলো ক্রমে বাণিজ্যনীতির সঙ্গে পরিপূরক হয়েছে।
সদ্যপ্রয়াত সৎ ও প্রাজ্ঞ দেশের সবচেয়ে বেশি জাতীয় বাজেট প্রণেতা অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ২০১৭ সালের বাজেট বক্তৃতায় বলেছিলেন, ‘আমরা কি কখনো ভেবেছি যে, আমরা ভিক্ষার ঝুলিকে এত দ্রুত ছেঁটে ফেলতে পারব? নিজস্ব অর্থায়নে কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে পারব? পদ্মাসেতু নির্মাণ করতে পারব? শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা সমৃদ্ধির পথে হাঁটছি। সোনা ছড়ানো সমৃদ্ধি আমাদের হাতছানি দিয়ে ডাকছে। সময় এসেছে সাহসী রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আলোর পথে অভিযাত্রার।’ উন্নয়নের অভিযাত্রায় বাংলাদেশ এগিয়ে যাক দেশ ও জাতি। তবেই বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বাস্তবায়িত হবে পূর্ণমাত্রায়। পিআইবি ফিচার
লেখক: সম্পাদক, অর্থকাগজ