অস্থির বাজার নিয়ে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রীর ভিন্ন সুর, দুষলেন কৃষকদের

অন্যান্য জাতীয়

সুবর্ণবাঙলা প্রতিবেদন

বাজারে নিত্যপণ্যের দাম লাগামহীন। সাধারণ মানুষ বাজারে পণ্য কিনতে গিয়ে মাথায় হাত দেন। অথচ যে পণ্য বাজারে আসে, সেটি কৃষক থেকে কিনে আনা হয় অনেক কম দামে। পরে সেটি হাতবদল হয়ে দাম বেড়ে হয় আকাশচুম্বী। সিন্ডিকেট আর মধ্যস্বত্ত্বভোগীদের কালো থাবায় অস্থির হয়ে উঠেছে বাজার, এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন ভোক্তারা। এমন পরিস্থিতির মধ্যে খোদ বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটুর মুখে ভিন্ন সুর।

শুক্রবার বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, এবারের বাজেটে এমন কিছু রাখা হয়নি যাতে করে বাজার অস্থির হবে। বাজারে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ার পেছনে কৃষকরাও দায়ী।

কৃষকরা কিভাবে দায়ী- এর ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, দেশে ধানের উৎপাদন বাড়লে কৃষকরা ধান বিক্রি করে তেল কিনে, সবজি কিনে। সবজি আর তেল কেনার জন্য দেখা গেল ধান বেশি দামে বিক্রি করছে। এতে করে চালের দাম বৃদ্ধি পেয়ে যাচ্ছে।

টিটু বলেন, রমজানের পর থেকে এখনো তেল-চিনির দাম ভারসাম্য অবস্থায় আছে। বাজেটে ধান-চাল আমদানিতে কর দুই-এক শতাংশ করা হয়েছে। এখন এক কোটি নাগরিক ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে পণ্য পাচ্ছেন। আসন্ন বাজেটের মেয়াদে ন্যায্যমূল্যে পণ্য দিতে স্থায়ী দোকানের মাধ্যমে টিসিবির পণ্য দেওয়ার কাজ চলছে। এটা হলে আরও বেশি সংখ্যক মানুষ এর মাধ্যমে উপকৃত হবেন।

এ সময় ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে মূল্যস্ফীতিকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নেওয়া হয়েছে বলেও জানালেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী। তিনি আরও বলেন, আমাদের ভোক্তা অধিকার রয়েছে। সেটির মাধ্যমে আমরা বাজার মনিটরিংগুলো করি। ঈদকে সামনে রেখে সেটি আমরা অব্যাহত রেখেছি। বাজেটে কর মওকুফ করায় আমাদের নিত্যপণ্যের দাম কমবে। আমাদের বাজার নিয়ন্ত্রণের সঙ্গে দেশের বিভিন্ন ঋতুতে আবহাওয়ার বিপর্যয় ঘটে। আমাদের বিভিন্ন ঋতুতে সংকট ও বিপর্যয় হয়। এতে করে আমরা যখন দেখতে পাই নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে তখন ট্যাক্স কমিয়ে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করব। এবারের বাজেটে ১৭২টি পণ্যের ওপর শুল্ককর কমানো হয়েছে।

এদিন ৬ জন মন্ত্রী, একজন উপদেষ্টা, দুইজন প্রতিমন্ত্রী এবং চারজন সরকারি কর্মকর্তাকে সঙ্গে নিয়ে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে হাজির হন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।

এ সময় মঞ্চে অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, পরিকল্পনামন্ত্রী মেজর জেনারেল (অব.) আব্দুস সালাম, গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী র. আ. ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান, কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুস শহীদ, শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু, অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান, মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার, অর্থ সচিব ড. মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদার এবং এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *