প্রকাশ্যে গুণে গুণে ঘুসের টাকা গ্রহণ, ভিডিও ভাইরাল

আইন আদালত জাতীয় মফস্বল

কিশোরগঞ্জ ব্যুরো

দীর্ঘদিনের অভিযোগ ছিল, ঘুষ ছাড়া কোনো কাজ করেন না কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার মাইজখাপন ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা ও অফিস সহকারী। ভূমি অফিসে প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হতে হয় সেবাগ্রহীতাদের। সরকারি ফির বাইরে অতিরিক্ত টাকা না দিলে কাজ দূরের কথা, সেবা নিতে আসা লোকজনের সঙ্গে কোনো কথাই বলেন না তারা। এবার সেই ঘুস নেওয়ার ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক মাধ্যমে। যেখানে প্রকাশ্যে গুণে গুণে ঘুস নিতে দেখা যায় ভূমি অফিসের অফিস সহকারী আব্দুল কাদির মিয়াকে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, মাইজখাপন ইউনিয়ন ভূমি অফিস ঘুস-অনিয়ম-দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে। ঘুস ছাড়া এখানে কোনো কাজ হয় না-এ কথা সেবাগ্রহীতাদের মুখে মুখে। ঘুস ছাড়া কাজ করানোর চেষ্টা করে হয়রানির শিকার হচ্ছেন তারা। সম্প্রতি অফিস সহকারী আব্দুল কাদির মিয়া নিজ অফিসে বসে গুণে গুণে ঘুসের টাকা নিচ্ছেন-এমন একটি ভিডিও ক্লিপ তার কথোপকথনসহ সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। এ ঘটনায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।

ভাইরাল ওই ভিডিওতে দেখা যায়, তিনি তার দপ্তরে বসে সেবাপ্রার্থী ভোলা মিয়ার কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা ঘুস প্রকাশ্যে গুণে নিচ্ছেন। ভিডিওতে ভোলা মিয়া বলছেন, ‘সব খারিজ সমান না। গরিব মানুষ, কাজটা করে দেন।’ উত্তরে অফিস সহকারী আব্দুল কাদির বলছেন, ‘কথা ছিল ৬ হাজার টাকা দেবেন। কম দিতে পারবেন না। প্রয়োজনে পরে হলেও দিতে হবে। একটা কাজ করে কিছু টাকা পাওয়া না গেলে চলে না।’ এরপর টাকাগুলো গুণে গুণে পকেটে ভরেন।

চলে যাওয়ার সময় ভোলা মিয়া আবারও বলেন, ‘আপনি আবদার করেছেন একটা বিহিত হবে। আপনি কাজটা করে রাখুন।’

ঘুস নেওয়ার এমন ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর এ নিয়ে এলাকার মানুষজন ওই অফিস সহকারী ও ভূমি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে শুরু করেছেন। তারা বলছেন, ঘুস ছাড়া কোনো কাজ করেন না ভূমি কর্মকর্তা মীর আবুল হাতিম ও অফিস সহকারী আব্দুল কাদির। এ বিষয়ে জানতে চাইলে কথা বলতে রাজি হননি আবদুল কাদির।

এদিকে নিজের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগও অস্বীকার করেন মীর আবুল হাতিম। কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. রাকিবুল ইসলাম বলেন, আব্দুল কাদিরের বিষয়ে তার কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *