সাকিব-মুস্তাফিজের অনন্য কীর্তি

খেলাধুলা

​​​​​​​স্পোর্টস রিপোর্টার


বিশ্বকাপে সাকিব-মুস্তাফিজের এমন হাসিই দেখতে চান দেশবাসী

দেশের ক্রিকেটে অনেক প্রথমের জন্ম দিয়েছেন সাকিব আল হাসান। এমনকি বিশ্ব ক্রিকেটেও অনেক প্রথমের জন্ম দিয়েছেন তিনি। এমন আরেকটি প্রথম ঘটনা এবার যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে তার কাছ থেকে পেয়েছে বাংলাদেশের ক্রিকেট। প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে এবং আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ইতিহাসে দ্বিতীয় বাঁহাতি স্পিনার হিসেবে ৩ ফরম্যাট মিলিয়ে ৭০০ উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করেছেন এ অলরাউন্ডার।

একটি মাত্র উইকেটের প্রয়োজন ছিল তার। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে উইকেটশূন্য থাকার পর তৃতীয় ও শেষ টি২০-তে কাঙ্ক্ষিত সেই উইকেট নিয়ে ইতিহাসের ১৭তম বোলার হিসেবে এই মাইফলফল ছুঁয়ে ফেলেন সাকিব। চতুর্থ বাঁহাতি বোলার, স্পিনার হিসেবে সপ্তম কিন্তু বাংলাদেশী হিসেবে প্রথম এবং নিউজিল্যান্ডের ড্যানিয়েল ভেট্টরির পর দ্বিতীয় বাঁহাতি হিসেবে এই কৃতিত্ব দেখিয়েছেন তিনি। তবে প্রথম অলরাউন্ডার হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১৪ হাজার রান ও ৭০০ উইকেট তারই। একই দিনে বাঁহাতি পেসার মুস্তাফিজুর রহমান প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে আন্তর্জাতিক টি২০তে ৬ উইকেট নিয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে বাংলাদেশ ৩ ম্যাচের টি২০ সিরিজে অনায়াসে জয় পাবে এটাই সবার ধারণা ছিল। কিন্তু হয়েছে পুরোপুরি উল্টো। টানা দুই ম্যাচে বাংলাদেশকে হারিয়ে অবিস্মরণীয় সিরিজ জয় করে তারা। এ দুই ম্যাচে বাংলাদেশের ব্যাটিং-বোলিংয়েও ভালো কোনো পারফর্ম্যান্স দেখা যায়নি। তবে সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে স্বরূপে আবির্ভূূত হয়েছে বাংলাদেশ দল। যুক্তরাষ্ট্র ব্যাটিংয়ে নামার পর ৪.৫ ওভারেই ৪৬ রান তুলে ফেলে উদ্বোধনী জুটিতে। ওই ওভারের শেষ বলে সাকিবের বাঁহাতি স্পিনে ১৫ বলে ৫ চার, ১ ছয়ে ঝড়ো ২৭ রান করা আন্দ্রিয়েস গুস সাজঘরে ফেরেন। আর এতেই নতুন এক মাইলফলক স্পর্শ করেন সাকিব যা কোনো বাংলাদেশীর নেই। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ৩ ফরম্যাট মিলিয়ে প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে ৭০০তম উইকেট এটি সাকিবের। সেজন্য ৩ ফরম্যাট মিলিয়ে ৪৩৬ ম্যাচে ৪৭৪ ইনিংস বোলিং করতে হয়েছে তাকে। ক্রিকেট ইতিহাসে মাত্র ১৭তম বোলার হিসেবে এই কীর্তি গড়লেন সাকিব। এর মধ্যে স্পিনার মাত্র ৭ জন, বাঁহাতি বোলার সাকুল্যে ৪ জন। কিন্তু বাঁহাতি স্পিনার হিসেবে নিউজিল্যান্ডের সাবেক তারকা ভেট্টরির পরেই সাকিব। অর্থাৎ ক্রিকেট ইতিহাসের দ্বিতীয় বাঁহাতি স্পিনার হিসেবে এই কৃতিত্ব দেখালেন তিনি। ভেট্টরি ৪৪২ ম্যাচের ৪৯৮ ইনিংসে ৭০৫ উইকেট নিয়েছেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে। ৭০০ উইকেটের তালিকা লম্বা হলেও একাধারে ব্যাট হাতে ১৪ হাজার রান ও ৭০০ উইকেট শুধু সাকিবেরই আছে। তিনি ব্যাট হাতে ৪৭৭ ইনিংসে ১৪ হাজার ৫১৫ রান করেছেন ৩৪.৩১ গড়ে ১৪টি সেঞ্চুরি ও ৯৯টি হাফ সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে।

সাকিব স্বীকৃত টি২০ ক্রিকেটে ৬ উইকেট নিয়েছেন দুইবার। একটি ঘরোয়া আসর ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ (ডিপিএল) টি২০ আসরে এবং আরেকটি ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (সিপিএল)। এছাড়া আর কোনো বাংলাদেশী বোলারের স্বীকৃত টি২০ ক্রিকেটে ৬ উইকেট নেওয়ার কীর্তি ছিল না। এবার মুস্তাফিজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেই নিয়েছেন ৬ উইকেট। যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে শেষ ম্যাচে শনিবার তিনি ৪ ওভারে ১ মেডেনে ১০ রান দিয়ে নেন ৬ উইকেট। ১৯ জন বোলার ২০ বার আন্তর্জাতিক টি২০-তে ৬ উইকেট নিয়েছেন। এর মধ্যে টেস্ট খেলুড়ে দেশের পক্ষে মুস্তাফিজসহ মাত্র ৭ জন এই কীর্তি দেখাতে পেরেছেন। শ্রীলঙ্কার স্পিনার অজন্তা মেন্ডিসই শুধু দুইবার এই কীর্তি দেখান। বাংলাদেশের পক্ষে এর আগে সেরা বোলিং ছিল বাঁহাতি স্পিনার ইলিয়াস সানির। তিনি ২০১২ সালে বেলফাস্টে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ১৩ রানে ৫ উইকেট নেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *