একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়ে কোন পথে মোদির দল?

আন্তর্জাতিক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক


নরেন্দ্র দামোদর দাস ছবি- এনডিটিভি

এক দশক পরে ফের একদলীয় শাসনের ইতি হতে চলেছে ভারতে। সেই সঙ্গে অষ্টাদশ লোকসভায় আনুষ্ঠানিকভাবে ফিরতে চলেছে বিরোধী দলনেতার পদ। মঙ্গলবার বিকাল পর্যন্ত ভোটগণনার ঘোষিত ফলাফল এবং প্রবণতা এমনটাই ইঙ্গিত দিচ্ছে।

তৃতীয়বারের জন্য নরেন্দ্র দামোদর দাসের হাতেই দেশের ভার দিতে চলছে ভারতের জনতা। তবে ভোটগণনার প্রবণতা বলছে, ২০১৪ এবং ২০১৯ সালের মতো এবার আর সংসদের নিম্নকক্ষে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাচ্ছে না তার দল বিজেপি। জোট হিসাবে ২৯৬ আসনে এগিয়ে রয়েছে এনডিএ। আর এখানেই কলকাঠি নাড়ার জায়গায় চলে এসেছে ‘এন ফ্যাক্টর’। তিনি হলেন চন্দ্রবাবু নায়ডু।

বর্তমান পরিস্থিতি অনুযায়ী, এনডিএ সম্মিলিতভাবে এগিয়ে রয়েছে ২৯৬টি আসনে। যা সংখ্যাগরিষ্ঠতা থেকে বেশি। অর্থাৎ এই আসন সংখ্যা ধরে রাখতে পারলে তৃতীয়বার মোদীর জন্য প্রধানমন্ত্রী হতে বাধা থাকার কথা নয়। কিন্তু এখানেই যত গুগলি!

এখন পর্যন্ত যা প্রবণতা, তাতে এনডিএ-র ঝুলিতে ২৯৬ আসনের মধ্যে দুই ‘এন’— যথাক্রমে নায়ডু এবং বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের দখলে যেতে চলেছে অন্তত ৩০টি আসন। এনডিএর ঝুলি থেকে সেই ৩০ আসন কমে গেলে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারাবেন মোদী। যে কারণে রাতারাতি দর বেড়ে গেছে অন্ধ্র প্রদেশের নায়ডুর।

নির্বাচন কমিশনের শেষ দেওয়া তথ্য বলছে, অন্ধ্রপ্রদেশে এই মুহূর্তে মোট ২৫টি আসনের মধ্যে নায়ডুর তেলুগু দেশম পার্টি (টিডিপি) এগিয়ে রয়েছে ১৬টিতে। অন্যদিকে, নীতীশের জেডি (ইউ) এগিয়ে রয়েছে ১২ আসনে। দুই ‘এন’-এর দু’দল মিলিয়ে ঝুলিতে পুরেছে ২৮টি আসন। দিন শেষে এই সংখ্যাতেই থমকে এনডিএর জয়ের সমীকরণ।

লোকসভার সঙ্গেই অন্ধ্র প্রদেশে হয়েছিল বিধানসভার ভোটও। সেই ভোটেও বাজিমাত করেছেন নায়ডু। পরিস্থিতি এমন যে, দুপুরের আগেই হার স্বীকার করে রাজ্যপালের কাছে দেখা করার সময় চেয়ে বসেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ওয়াই এস জগন্মোহন রেড্ডি।

শোনা যাচ্ছে, তিনি ইস্তফা দিতে চলেছেন। এই পরিস্থিতিতে রাতারাতিই শিরোনামে চলে এলেন চন্দ্রবাবু। এখন প্রশ্ন হল, নায়ডু কি এনডিএতেই থেকে যাবেন, নাকি অতীতের মতোই শিবির বদলে আবার ‘ইন্ডিয়া’র মঞ্চে দেখা যাবে তাকে?

ফলাফলের প্রবণতা স্পষ্ট হতেই মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ফোন করেন নায়ডুকে। সূত্রের খবর, সেখানে বিজেপির শীর্ষ দুই নেতার সঙ্গে কথা হয় নায়ডুর। লোকসভা ভোটে এনডিএ-এর ভালো ফলের জন্য নায়ডু মোদীকে অভিনন্দনও জানান।

এমন পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একটি অংশ মনে করছেন, এই ফোনের মধ্যে দিয়েই হয়তো ভারতের জাতীয় রাজনীতিতে ফের শুরু হচ্ছে জোট-দৌরাত্ম্য।

তথ্যসূত্র-এনডিটিভি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *