সুবর্ণবাঙলা অনলাইন ডেস্ক
লালমনিরহাটের পাটগ্রামের বুড়িমারী স্থলবন্দর ও শুল্ক স্টেশন দিয়ে মিথ্যা ঘোষণায় আনা হচ্ছে একের পর এক চালান। কাস্টমস কর্মকর্তারা বলছেন, গুরুত্বপূর্ণ এই শুল্ক স্টেশনে ‘পণ্য স্ক্যানার’ না থাকার সুবাদে অসাধু ব্যবসায়ীরা আমদানি করা পণ্যের গাড়ির ভেতরে অবৈধভাবে শাড়ি, থ্রিপিস, কসমেটিকস, গয়না, চিকিত্সাসামগ্রী পাচার করে আনছে। কখনো ধরা পড়ছে, আবার কখনো বের হয়ে যাচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে ভারত ও ভুটান থেকে অধিক হারে পাথর আমদানি করা হয়। প্রতিদিন প্রায় ৪০০ থেকে ৬০০ গাড়িতে পাথর ও অন্যান্য পণ্য আমদানি ও রপ্তানি করা হয়। ঋণপত্র (এলসি) অনুযায়ী এসব গাড়িতে আনা পণ্যের সঠিকতা যাচাই করা হয় অনুমান করে। গুরুত্বপূর্ণ এই শুল্ক স্টেশনে ‘পণ্য স্ক্যানার’ না থাকার সুবাদে অসাধু ব্যবসায়ীরা আমদানি করা পণ্যের গাড়ির ভেতরে ভারতীয় শাড়ি, থ্রিপিস, কসমেটিকস, গয়না, চিকিত্সাসামগ্রী পাচার করে আনছে।
সূত্রে জানা যায়, গত ১২ মার্চ এলসি অনুযায়ী ভারতের কলকাতার রপ্তানিকারক একটি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ১৮ মেট্রিকটন চায়না ক্লে পাউডার আমদানির অর্ডার করে ঢাকার একটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান। পণ্যগুলো ভারতের চ্যাংড়াবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে গত ৬ মে ভারতীয় ট্রাকে বুড়িমারীতে আনা হয়। পণ্যগুলো যাচাই করে আমদানিকারকের প্রতিনিধিকে বুঝিয়ে দেয় কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। কিন্তু দীর্ঘদিনেও পণ্য বুঝে না পেয়ে পাটগ্রাম থানা ও গাজীপুরের টঙ্গী থানায় মামলা করে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানটি। পরে গাজীপুর ডিবি পুলিশের একটি দল মামলার আসামি বুড়িমারী ইউনিয়নের তুহিনুজ্জামান বাবু ও মনোয়ার হোসেনকে আটক করে এবং ২০ দিন পর হাতীবান্ধা উপজেলার বড়খাতা ইউনিয়নের একটি বাড়ি থেকে ক্লে পাউডারগুলো উদ্ধার করে। এ সময় উদ্ধারকৃত পাউডারের ভেতর থেকে অবৈধভাবে আনা ১০ কার্টন সিটি গোল্ডের বিভিন্ন গহনা, ইনজেকশনের সিরিঞ্জ, কেনুলার কার্টন ৩০টি ও অন্যান্য পণ্য বের হয়। এসব পণ্যের মূল্য প্রায় কোটি টাকা। একইভাবে গত ২০২৩ সালের ২৭ মার্চ এবং এ বছরের ১৭ ফেব্রুয়ারি পাথরবোঝাই ট্রাকে অবৈধভাবে আনা হয় কয়েক কোটি টাকার নানা পণ্য।
বুড়িমারী স্থলবন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ছায়েদুজ্জামান সায়েদ বলেন, একটি চক্র পাথর আমদানির নামে ভারত থেকে শাড়ি ও থ্রিপিস কাপড়, সুগন্ধি ক্যামিকেল, কসমেটিক, চিকিত্সাসামগ্রীসহ নানা পণ্য অবৈধভাবে নিয়ে আসছে। অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কাস্টমস কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।
এ ব্যাপারে বুড়িমারী স্থল শুল্ক স্টেশনের (কাস্টমস) সহকারী কমিশনার (এসি) নাজমুল হাসান বলেন, বুড়িমারী কাস্টমসে দায়িত্বরত সবাই কয়েক ধাপে পণ্য আমদানি ও রপ্তানির গাড়িসমূহ চেক করে। কোনো গাড়ি সন্দেহ হলে খালি করে দেখা হয়। কোনো ব্যবসায়ী অবৈধভাবে কোনো মালামাল আনলে এবং ধরা পড়লে কাস্টমস আইনে তার লাইসেন্স বাতিল করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়। গাড়িসহ পণ্য স্ক্যান করতে ‘স্ক্যানার’ বসাতে রংপুর কমিশনারের মাধ্যমে এনবিআরে চিঠি ও প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।