ঝড় ভাঙা আওয়ামীলীগ ও ছাগল উদরে চৌদ্দ দল!

খোলা কলাম জাতীয়
– শাওন মাহমুদ।
সংগৃহীত ছবি দুটি ‘প্রতিক’ হিসেবে ব্যবহৃত
একটা প্রবাদ আছে-
”অতি বাড় বাড়লে ঝরে ভেঙে যায়। ছোট হয়ে থাকলেও ছাগল মুড়ে খায়!”
দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে দেখলে, এই প্রবাদ শত ভাগ অব্যর্থ, খাটি সত্য।
বিগত পনেরো বছরের আওয়ামী রেজিম লক্ষ্য করলে দেখাযায়, চৌদ্দ দলের যৌথ প্রয়াস-পার্ফমেন্সে প্রথমবার ক্ষমতায় এসে অন্যদের কিছুটা মূল্যায়ন করেছে। যদিও আওয়ামীলীগের চাঁদাবাজ, দখল বাজরা তখন থেকেই চৌদ্দ দলের নির্বাচনী এলাকায়ও নিজেদের দখলদারিত্ব প্রতিষ্ঠা করেছে। দ্বিতীয়বার নির্বাচনের সময় আওয়ামী লীগের শরিকদের সঙ্গে আসন সংখ্যার ভাগবাটোয়ারা নিয়ে বেশ জটিলতার সৃষ্টি হয়। কারণ ততদিনে আওয়ামী লীগে প্রচুর দুধের মাছির আগমন ঘটে গেছে। এই সময় হতে আওয়ামী লীগ ভাবতে শুরু করেছে, তারা যথেষ্ট শক্তিশালি ও বিশাল একক দলে পরিণত হয়েছ। সুতরাং, তাদের আর জোটের খুব একটা প্রয়োজন নেই। তারা, জোটের চেয়ে আমলা, পুলিশ ও তথাকথিত সুশীলদের সুযোগ দিয়ে একক শক্তির উপর অতিমাত্রায় আত্মবিশ্বাসী হয়ে তদনুযায়ী কার্যক্রম শুরু করে। তারা, দেশের আরেকটা বৃহৎ দলকে রাজনীতির মাঠ থেকে বিতাড়িত রাখার সঙ্গে, তাদের চৌদ্দ দলের শরীকদেরও আরো দুর্বল রাখতে সক্রিয় ছিলো।
তৃতীয় বার নির্বাচনে আওয়ামীলীগ বিএনপিকে নির্বাচনের মাঠেতো নামানোর আন্তরিক চেষ্টা করেই নি, বরং বিএনপির নির্বাচনে না আাসার পলিসি গেমে লিপ্ত থেকেছে!
আওয়ামী লীগের ঐ ফাঁদে পড়া, বিএনপিরও ছিলো নেতৃত্বের চরম দুর্বলতার কারণ। মাঠের বিরোধী দল হিসেবেও তারা ছিলো চরম রাজনৈতিক ব্যার্থ!
চৌদ্দ দলের তথাকথিত জোটের অন্যান্য শরীকদের আওয়ামিলীগ যে কয়টি আসন জোট গত ভাবে ছেড়ে ছিলো, সঙ্গে তারচেয়ে অনেক বড় চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলো অতি ধূর্তামির মাধ্যমে। সেটি ছিলো মনোনয়নের বাইরেও কোনো নেতা স্বতন্ত্র ভাবে নির্বাচন করলেও আওয়ামী লীগের কোনো আপত্তি থাকবে না। এটি ছিলো, শরীকদের শূন্য হাতে ফিরিয়ে দেয়ার পলিসি।
এখানেই শরীকদের ছাগল দিয়ে খাওয়ালো আওয়ামী লীগের দুষ্টচক্র। উদাহরণ হিসেবে বলাযায়- একসময়ের রাকসু ভিপি, মাটি মানুষের রাজনীতি করা ২ বারের এমপি ফজলে হোসেন বাদশার বিরুদ্ধে আরেক বাদশাকে দাঁড় করিয়ে ফেল করলো খায়রুজ্জামান লিটন। সেই লিটন আজ কোথায়? এমনি ভাবে বার-বার এমপি হওয়া জাসদের হাসানুল হক ইনুকে ফেল করলো আরেক ‘ছাগল’ হানিফ। এই সব নেতাদের এলাকায় তাদের পক্ষে একটা কথা বলারও কেউ নেই কেন? কারণ, এরা রাজনৈতিক শঠ্ দুর্বৃত্ত!
আরও একটা অতি বৃদ্ধির কথা জানি। তিনি দিনাজপুরের ইকবালুর রহিম। আওয়ামী লীগের হুইপ করা হয়েছিল। ছাত্র লীগের সাধারণ সম্পাদক থেকে হুইে হওয়া সবই পৈতৃক কোটায়! (মনে আছে তার বোনকে করুণার সময় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আরেক জনকে সরিয়ে পদায়িত করে ছিলো?)
তার যে কার্যক্রম ছিলো, তাতে মনে হয় দিনাজপুরের নাম পাল্টিয়ে একসময় রহিম পুর রাখলেও অস্বাভাবিক কিছু ছিলো না। দিনাজপুরের এমন কোনো বড় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নেই, যেখানে তার পিতার নামে ভবন না আছে। এমনকি দিনাজপুর মেডিকেল কলেজের নামও করা হয়েছ তার পিতার নামে। এক কথায় দিনাজপুর শহর তার পিতাময়! দুটো মডেল মসজিদ স্থান ও মুসুল্লিদের কথা বিবেচনায় না নিয়ে, অপেক্ষাকৃত গুরুত্বহীন স্থানে করা হয়েছে শুধু তার ইচ্ছায়। রহিম ময় দিনাজপুর শহরে এখন কোথায় তার লীগ সমূহ? অথচ, জাতীয় চার নেতার সাথে তার পিতার কবরেও দলীয়ভাবে দেয়া হতো ফুল! তার পিতাকে বানিয়ে ছিলেন জাতীয় নেতা(?)
চৌদ্দ দলের শরীক হয়ে, বাকি তের দল আওয়ামিলীগ ক্ষমতায় থাকতেই ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতর হতে থাকে। কারণ, আওয়ামী লীগ পনেরো বছর ক্ষমতায় থেকে শুধু, অন্যান্য দলগুলোর অনিষ্ট চিন্তায় ও কর্মে ব্যাস্ত থেকেছে। নতুন কোনো নেতৃত্ব সৃষ্টি করে নি। নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টিকে যেনো তারা, তাদের নেতৃত্বের হুমকি হিসেবে দেখেছে। এমনকি তারা, নিয়মিত কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সংসদ নির্বাচনেও ছিলো অনিহা। হারলেও যে নেতৃত্ব সৃষ্টি হতে পারে এটা তারা মনে করতো না। যেকোনো ভাবে জিততে পারাই সব। এমন দীন হীন যাদের চিন্তা, একটা পরিবর্তনের পর, তথা, ঝড়ে ভাঙা আওয়ামী লীগের অবস্থা বর্তমান সময়ে, এরচেয়ে আর কত ভালো হবে?
আর, চৌদ্দ দলতো বহু আগেই আওয়ামী লীগের বন্য ছাগলের উদরে!
All reactions:

Shawan Mahmud and 1 other

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *