‘শক্তিশালী বিরোধীদের আসন ছাড়তে হবে কংগ্রেসকে’

আন্তর্জাতিক

কর্ণাটক ফর্মুলায় জোট বার্তা মমতার
সুবর্বাঙলা ওয়েবডেস্ক

একের বিরুদ্ধে এক—এই ফর্মুলাই যে মোদি-ব্রিগেডকে মসনদ থেকে হটাতে পারে, তা বারবার বলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কর্ণাটক থেকেই সেই কাউন্টডাউন শুরু হয়ে গিয়েছে। ‘সর্বশক্তিধর’ বিজেপির দম্ভ ২২৪ আসনের দক্ষিণী রাজ্যে মাটিতে নামিয়ে এনেছে কংগ্রেস। আটকে গিয়েছে বিজেপির বিজয়রথ। ‘ডাবল ইঞ্জিন’ প্রতিশ্রুতির ফানুস আর রাজনীতি-ধর্মের মুখরোচক ককটেল বিতরণের গেরুয়া কৌশল মুখ থুবড়ে পড়েছে দাক্ষিণাত্যে। এই ফলাফলে স্বভাবতই উৎসাহিত দেশের তামাম বিজেপি-বিরোধী শক্তি। কারণ, কংগ্রেস নামটা এখানে প্রধান ফ্যাক্টর নয়। তারা কর্ণাটকে প্রধান বিরোধী। আর তাই চব্বিশের লক্ষ্যে ফের তৎপরতা শুরু হয়েছে বিরোধী দলগুলির অন্দরে। এই প্রেক্ষাপটে সর্বাত্মক বিরোধী জোটের দিশা স্পষ্ট করে দিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। বুঝিয়ে দিলেন ‘একের বিরুদ্ধে এক’ লড়াইয়ে মডেল আজ কর্ণাটক। দৃঢ় প্রত্যয়ের সঙ্গে এই সমীকরণেই সিলমোহর দিয়েছেন তিনি। এই প্রক্রিয়ায় কংগ্রেসের ভূমিকা কেমন হওয়া উচিত, তাও বিস্তারিত ব্যাখ্যা করেছেন মমতা। রাজনৈতিক মহলের মতে, কর্ণাটকে বিজেপিকে পরাস্ত করতে কংগ্রেসকে অক্সিজেন জুগিয়েছে সমস্ত বিজেপি-বিরোধী দল। সেখানকার মানুষের কাছে ‘নো ভোট টু বিজেপি’ আবেদন জানিয়েছেন স্বয়ং তৃণমূল সুপ্রিমো। একের পর এক বিরোধী দলের শীর্ষনেতাদের স্পষ্ট বার্তা পরোক্ষে কংগ্রেসের জয়কে ত্বরান্বিত করেছে বলে মনে করছে তারা। সেই সূত্রেই সোমবার নবান্নে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর মমতা বলেন, ‘যে যেখানে শক্তিশালী, সেখানে সেই বিরোধী দলকে আসন ছেড়ে দিতে হবে কংগ্রেসকে। সবাইকে দিতে হবে সমান গুরুত্ব।’ রীতিমতো তথ্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘দেশের মোট ৫৪৩টি আসনের মধ্যে ২০০টি আসনে কংগ্রেস শক্তিশালী। ওই সব আসনে কংগ্রেস লড়লে কোনও অসুবিধা নেই। সেখানে বাকি বিরোধী দলগুলির কংগ্রেসকে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করা উচিত। বাকি জায়গায় অন্যান্য বিরোধী দলের প্রার্থীকে একইভাবে সমর্থন করতে হবে কংগ্রেসকে।’

প্রসঙ্গত, কর্ণাটক বিধানসভার ফলাফলের দিন একবারও কংগ্রেসের নাম মুখে আনেননি মমতা। তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে কিঞ্চিত জল্পনাও ছড়িয়েছিল। এদিন অবশ্য তিনি কংগ্রেস সম্পর্কে আগাগোড়া অকপট ছিলেন। নির্বাচনে সোনিয়া-রাহুলের দলকে সমর্থন যে একতরফা হতে পারে না, তা স্পষ্ট করে দিয়ে তৃণমূল নেত্রী বলেন, ‘আমি কর্ণাটকে সমর্থন করলাম। কিন্তু তুমি আমার বিরুদ্ধে রোজ লড়াই করবে, এটা পলিসি হতে পারে না। কংগ্রেস যদি সত্যিই বিজেপিকে হটিয়ে দেশ বাঁচাতে চায়, তাহলে কিছু জায়গায় তাদের স্বার্থ ত্যাগ করতে হবে।’ তিনি মনে করেন, আঞ্চলিক দলগুলি যেখানে খুব শক্তিশালী, সেখানে লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি দাঁত ফোঁটাতে পারবে না। সেই হিসেবে পশ্চিমবঙ্গে তাঁর দল তৃণমূলই বিজেপির বিরুদ্ধে ‘ওয়ান ইচ টু ওয়ান’ লড়াই দেবে বলে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘বাংলায় আমাদের লড়াই করা উচিত। দিল্লিতে আপ। বিহারে নীতীশজি, তেজস্বী এবং কিছুটা কংগ্রেস জোট বেঁধে লড়াই করতে পারে। তবে এ ব্যাপারে আমার কিছু বলা উচিত নয়। তারা তাদের ফর্মুলা ঠিক করুক।’ ঝাড়খণ্ড, তেলেঙ্গানা, অন্ধ্রপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশে শক্তিশালী আঞ্চলিক দলগুলিকেই অগ্রাধিকার দিতে হবে বলে মনে করেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *