স্পোর্টস রিপোর্টার
ছবি: সংগৃহীত
দেশের আকাশ মেঘাচ্ছন্ন। বৃষ্টি ভোর থেকেই হচ্ছে। আবাহনী মাঠ ভিজে অনেকটাই কাদা কাদা। তবুও প্রথম দিনের অনুশীলনটা বেশ আনন্দের মধ্যেই শুরু করল আবাহনী। মন ভেঙেছে আবাহনীর। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতন হয়েছে। ওই দিনটা ছিল আবাহনীর প্রতিষ্ঠাতা শেখ কামালের জন্ম বার্ষিকী। প্রতিবারের মতো অনুষ্ঠানের সব পরিকল্পনাও ছিল। অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্রও বিতরণ করা হয়ে গিয়েছিল।
মহবংিদৈনিক ইত্তেফাকের সর্বশেষ খবর পেতে এড়ড়মষব ঘবংি অনুসরণ করুন
তবে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর আবাহনী ক্লাবও রোষানলে পড়ে। অফিস ভাঙচুর করে আক্রমণকারীরা সংরক্ষিত ট্রফি ও অন্যান্য মালামাল নিয়ে চলে গেছে। আবাহনী প্রিমিয়ার ফুটবল লিগে না খেলার পথে চলে যাচ্ছিল। শেষ মুহূর্তে খেলোয়াড় রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করে। মারুফুল হককে কোচ নিয়োগ দেয়। এক মাস ২০ দিন পর আবার আবাহনীতে নতুন প্রাণ ফিরিয়ে আনতে ক্লাব কর্মকর্তাদের চেষ্টা চলছে। গতকাল থেকে আবাহনীর ফুটবল অনুশীলন শুরু হয়েছে। ক্লাব টেন্টে সবার মধ্যে উৎসাহ। আকাশী নীল জার্সি গায়ে অনুশীলনে নেমেছেন খেলোয়াড়রা।
কোচ মারুফুল হক অনূর্ধ্ব-২০ জাতীয় দল নিয়ে ভিয়েতনামে এশিয়ান কাপের বাছাইয়ে খেলতে গেছেন। সামনে ফেডারেশন কাপ, প্রিমিয়ার লিগের খেলা। অনুশীলন দ্রুতই শুরু করার দরকার বলে সবাই মিলে ঝাঁপিয়ে পড়েছে। ফুটবল ম্যানেজার ছিলেন নজরুল ইসলাম, তাকে ভারমুক্ত করে দিয়ে কঠিন সময়ে পুনরায় ফুটবল ম্যানেজারের দায়িত্ব গ্রহণ করলেন সত্যজিত দাস রুপু। কোচিং স্টাফ হিসাবে রয়েছেন আতিকুর রহমান, ঝন্টু, প্রানতোষ, নজরুলও থাকছেন, রুপু সবাই সহযোগিতা করছেন।
4
সেনাবাহিনীতে রয়েছেন শাহরিয়ার ইমন, হাসান মুরাদ, মিরাজ প্রধান। তারা খুব শিগগিরই ক্লাবের অনুশীলনে যোগ দেবেন বলে জানিয়েছেন রূপু, আর ভিয়েতনাম যাওয়া অনূর্ধ্ব-২০ দলের সঙ্গে রয়েছে মিরাজুল এবং আসাদ মোল্লা। এখন যারা রয়েছেন তাদের সবাই বুঝতে পারছেন দেশের রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর আবাহনীর বর্তমান পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে সবাই মিলে চেষ্টা করছেন। খেলার মাঠে আবাহনী সমর্থকদেরকে ভালো পারফরম্যান্স উপহার দেওয়ার শপথ রয়েছে খেলোয়াড়দের মধ্যে। প্রথম দিকে বলা হয়েছিল আবাহনী খেলবে দেশি ফুটবলারদের নিয়ে।
কিন্তু এখন আবাহনী চিন্তা করছে তারা বিদেশি ফুটবলার আনা যায় কিনা। লিগের প্রথম পর্বে দেশিরাই খেলবেন। দ্বিতীয় পর্ব শুরু হওয়ার আগে মধ্যবর্তী দল-বদলের সময় বিদেশি ফুটবলার রেজিষ্ট্রেশনের সুযোগ নিতে চায় আবাহনী। ম্যানেজার রুপু জানিয়েছেন তারা এখনও নির্ধারণ করেননি কোথা থেকে কাকে আনবেন। তিনি বলেন, ‘এখনও দেরি আছে, জানুয়ারিতে মধ্যবর্তী দলবদল। তখন দেখা যাবে কি করা যায়। এখন বিদেশি নিয়ে ভাবছি না। বিদেশি নিতে চাই, সেটা এখনও অনেক দুর।’
আবাহনী চাইছে যেকোনো ভাবেই হোক লিগের প্রথম পর্বটা যেন ভালোভাবে টিকে থাকা যায়। তরুণ ফুটবলার রয়েছেন এবারের দলে। সরকার পতনের আগেই কিছু ফুটবলারের সঙ্গে চুক্তি সম্পন্ন করে রেখেছিল বলে বেঁচে গেছে আবাহনী। নতুন করে দল গঠন করতে গেলে আরো বেশি কাঠখড় পোড়াতে হতো। কারণ এখন আবাহনীর অনেকেই আবাহনীর পাশে থাকতে চায় না। যারা আছেন তাদের নিয়েই আবাহনী এখন নতুন দিনের আশায় পথ চলতে শুরু করছে। ভুলে যাও পেছনের কথা। ফুটবল মাঠে নতুন করে লড়াইয়ে নামতে হবে। বিদেশিদের বিপক্ষেও লড়াই করতে হবে। সামর্থ্যের সবটুকু উজাড় করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি রাখতে হবে।