সুবর্ণবাঙলা অনলাইন ডেস্ক!
কানাডাজুড়ে দাবানল ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। বিধ্বংসী দাবানলের ধোঁয়া কয়েকশ মাইল এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে, যা এরইমধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কিছু অংশকে ঢেকে দিয়েছে। এমনকি এ ধোঁয়া এবার পৌঁছেছে নরওয়েতেও।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানায়, নরওয়ের ক্লাইমেট অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (এনআইএলইউ) বিজ্ঞানীরা অত্যন্ত সংবেদনশীল যন্ত্র ব্যবহার করে ধোঁয়ার অবস্থান শনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছেন এবং বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, গেলো কয়েকদিনে এ ধোঁয়া কানাডা থেকে গ্রিনল্যান্ড, আইসল্যান্ড এবং সবশেষ নরওয়েতে পৌঁছেছে।
এনআইএলইউ এর একজন সিনিয়র বিজ্ঞানী নিকোলাওস ইভাঞ্জেলিউ বলেছেন, নরওয়ের লোকেরা ধোঁয়ার গন্ধ পেতে পারেন, এমনকি ধোঁয়াকে হালকা কুয়াশা হিসাবে লক্ষ্যও করতে পারেন। তবে যুক্তরাষ্ট্র যেভাবে বিপজ্জনক দূষণ দেখেছে, নরওয়ে সে ঝুঁকিতে নেই। এত দূর থেকে আসা ধোঁয়া খুবই হালকা হয়ে যায়।
তিনি আরও বলেন, আগামী দিনগুলোতে তা ইউরোপের বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে পড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
দাবানলের ধোঁয়ার দীর্ঘ দূরত্ব অতিক্রমের বিষয়টি অস্বাভাবিক নয় জানিয়ে তিনি বলেন, কানাডার মতো দাবানলের ধোঁয়া বায়ুমণ্ডলে বেশিক্ষণ থাকে এবং অনেক দূর পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়তে সক্ষম।
এর আগে ২০২০ সালে, ক্যালিফোর্নিয়ার রেকর্ড-ব্রেকিং দাবানল থেকে ধোঁয়া আর্কটিক সার্কেলের গভীরে অবস্থিত নরওয়েজিয়ান দ্বীপপুঞ্জ স্যালবার্ডে শনাক্ত করা হয়েছিল।
তবে এ ধরণের ধোঁয়া জলবায়ুর ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এটি আর্কটিক উষ্ণায়নকে ত্বরান্বিত করে যা পরিবেশের জন্য বিপদজনক।
এদিকে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো এবারের দাবানলকে দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়ানক হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
গত মাসে পশ্চিম কানাডায় দাবানল ছড়ানোর পর এটি আটলান্টিক মহাসাগর উপকূলের নোভা স্কশিয়া প্রদেশেও ছড়িয়ে পড়ে। এরপর চলতি সপ্তাহে কুইবেকেও ছড়িয়ে পড়ে। বর্তমানে এ প্রদেশটিই দাবানলের কেন্দ্রস্থল। আগুন এত বেশি ছড়িয়ে পড়েছে যে কানাডার অভ্যন্তরীণ অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা এটা মোকাবিলার জন্য যথেষ্ট নয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এগুলো নিয়ন্ত্রণের বাইরে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের এনভায়রনমেন্টাল প্রোটেকশন এজেন্সি (ইপিএ) জানিয়েছে, ধোঁয়ার কারণে যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর-পূর্বাঞ্চলসহ পশ্চিমের শিকাগো থেকে দক্ষিণের আটলান্টা পর্যন্ত ১০ কোটির বেশি মানুষ বায়ুদূষণ সতর্কতার আওতায় পড়েছে। নিউইয়র্কের মেয়র এরিক অ্যাডামস অতি প্রয়োজনীয় কাজ ছাড়া নগরবাসীকে ঘর থেকে বের না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।