বন্ধুর বিয়েতে বেড়াতে গিয়ে হাওরের পানিতে ডুবে ২ শিক্ষার্থীর মৃত্যু

অন্যান্য মফস্বল

সুবর্ণবাঙলা প্রতিবেদক

ফাইল ছবি

কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জে বন্ধুর বিয়েতে বেড়াতে গিয়ে হাওরের পানিতে ডুবে শরফুদ্দিন রাফু (২৪) ও লিমন ইসলাম (২৫) নামে দুই কলজপড়ুয়া বন্ধুর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার দুপুর ১টার দিকে উপজেলার গুনধর উচ্চ বিদ্যালয়ের দক্ষিণের বড় হাওরে পাঁচ বন্ধু মিলে গোসল করতে গেলে এ ঘটনাটি ঘটে। পানিতে ডুবে মারা যাওয়া দুই বন্ধুর মধ্যে রাফু রাজধানীর তেজগাঁও পশ্চিম নাখালপাড়ার বাসিন্দা কামাল উদ্দিনের ছেলে এবং লিমন একই এলাকার লাল মিয়ার ছেলে। তাদের মধ্যে রাফু ঢাকা কলেজের পদার্থবিদ্যা বিভাগের শেষবর্ষের শিক্ষার্থী এবং লিমন মুন্সিগঞ্জ পলিটেকনিক ইনস্টিউটের কম্পিউটার ডিপ্লোমার ছাত্র ছিলেন।

জানা গেছে, রাফুর গ্রামের বাড়ি নোয়াখালী আর লিমনের বাড়ি বড়িশালে। তারা নাখালপাড়ায় থাকতেন।
পরিবার ও স্থানীয় সূত্র জানায়, করিমগঞ্জ উপজেলার গুনধর ইউনিয়নের মদন গ্রামের সায়েম উদ্দিনের ছেলে তৌকিরের বিয়ে ছিল গত সোমবার। তবে তার বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয় পাশের কদিমমাইজহাটি গ্রামে মামা মানিক মিয়ার বাড়িতে।

এ উপলক্ষে বিয়ের আগের দিন রবিবার তার পাঁচ বন্ধু রাফু, লিমন, রাফি, জুনায়েদ ও রকি ঢাকা থেকে তৌকিরদের মামার বাড়ি কদমমাইজহাটি গ্রামে বেড়াতে যান।
আজ মঙ্গলবার ছিল তৌকিরের বৌভাত অনুষ্ঠান। সকালের নাস্তা শেষে তৌকির ও ঢাকা থেকে যাওয়া তার পাঁচ বন্ধু মিলে গ্রামের সামনে ফুটবল খেলেন। পরে বাড়ির পাশে গুনধর উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে দক্ষিণের বড় হাওরে তারা ফুটবল নিয়েই গোসল করতে যান।

গোসলের এক পর্যায়ে হাওরের ডুবোসড়ক থেকে পা পিছলে রাফু, লিমন ও তৌকির খাদে পড়ে যান। সাঁতার না জানায় কিছুক্ষণের মধ্যেই তারা হাওরের পানিতে তলিয়ে যান। এ সময় অন্য তিন বন্ধু সাঁতরে পানিতে তলিয়ে যাওয়া তিন বন্ধু রাফু, লিমন ও তৌকিরকে উদ্ধার করেন।
স্থানীয়রা রাফু ও লিমনকে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। অন্যদিকে তৌকিরকে কিশোরগঞ্জ ২৫০শয্যা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়।

সেখানে বর্তমানে তার চিকিৎসা চলছে। তার অবস্থা গুরুতর বলে জানা গেছে। তিনি ঢাকায় আড়ংয়ে চাকরি করেন।
লিমন ও রাফুর সঙ্গে হাসপাতালে যাওয়া অন্য বন্ধুরা অভিযোগ করেন, হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর লিমন তখনও বেঁচে ছিল। তবে জরুরি বিভাগে লিমনের চিকিৎসায় অবহেলা করা হয়েছে। সাথে সাথে যদি চিকিৎসা দেওয়া হতো তাহলে হয়তো সে বেঁচে যেত।

শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত মেডিক্যাল অফিসার সুমন সেন বলেন, ‘হাসপাতালে এসে দুজনকেই মৃত পেয়েছি। হাসপাতালে আনার আগেই একজনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া হাসপাতালে এনে ভর্তি করার পর আরেকজনের মৃত্যু হয়।’

করিমগঞ্জ থানার ওসি মো. শামছুল আলম সিদ্দিকী বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ ব্যাপারে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *