বাঁচিয়েছেন মেসির পেনাল্টি, বিশ্বকাপে লিওকে মিস করবেন না, মোহনবাগানে জানালেন এমি

আন্তর্জাতিক খেলাধুলা

সুবর্ণবাঙলা ওয়েব ডেস্ক

কাতারে নিজের শেষ বিশ্বকাপ খেলে ফেলেছেন লিওনেল মেসি। কয়েকদিন আগে চীনে প্রদর্শনী ম্যাচ খেলতে গিয়ে নিজের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন আর্জেন্টিনার তারকা। মঙ্গল সন্ধেয় মোহনবাগান তাঁবুতে দাঁড়িয়ে এমিলিয়ানো মার্টিনেজ জানিয়ে দিলেন, পরের বিশ্বকাপে মেসিকে মিস করবেন না। ডিবু বলেন, ‘না, মিস করব না। আমি আবেগ দিয়ে প্রত্যেক চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করি। আমাদের টিমে একদল বাঘ আছে।’ তবে আর্জেন্টিনার অধিনায়কের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। এমি কলকাতায় এলেও অলক্ষ্যে ছিলেন মেসি। একাধিকবার উঠে আসে তাঁর প্রসঙ্গ। সতীর্থের প্রশংসা করতে কোনও কার্পণ্য করেননি ডিবু। দু’জনেই আর্জেন্টাইন। একই দলে খেলেন। কিন্তু মোহনবাগানে এসে এমি জানিয়ে দিলেন, একাধিকবার মেসির পেনাল্টি বাঁচিয়েছেন তিনি। এমনকী এও দাবি করেন, লিওর পেনাল্টি বাঁচিয়েই তিনি গোলকিপার হিসেবে উন্নতি করেছেন। মার্টিনেজ বলেন, ‘আমি একাধিকবার মেসির পেনাল্টি বাঁচিয়েছি। আমরা কোপা আমেরিকা এবং বিশ্বকাপের আগে প্রচুর টাইব্রেকার প্র্যাকটিস করতাম। তখনই ওর শট বাঁচিয়েছি। মেসির পেনাল্টি বাঁচিয়েই আমি আরও ভাল গোলকিপার হয়েছি। আমার মনে হয়েছিল, লিও স্পট কিক বাঁচাতে পারলে আমি বিশ্বের সবার শট বাঁচাতে পারব।’ কলকাতায় আর্জেন্টিনার সমর্থন দেখে মুগ্ধ গোল্ডেন গ্লাভসজয়ী।

জানিয়ে দিলেন, এটা সবে সূচনা, আবারও কলকাতায় আসতে চান তিনি। এখানেই থামেননি এমি। বলেন, ‘আর্জেন্টিনার জার্সিতে কলকাতায় খেলতে চাই।’ তিলোত্তমার ভালবাসা মন ছুঁয়েছে মার্টিনেজের।

পেলে, মারাদোনা, অলিভার কান, ভালদেরামার সঙ্গে যুক্ত হল এমিলিয়ানো মার্টিনেজের নাম। পেলে এবং কান সবুজ মেরুনের বিরুদ্ধে খেলেছিলেন। বাকি দু’জনের পা পড়েছিল মোহনবাগান তাঁবুতে। সেই তালিকায় যুক্ত হলেন সদ্য বিশ্বকাপ জয়ী আর্জেন্টিনার গোলকিপার। বিকেল সাড়ে চারটেয় আসার কথা ছিল এমির। তার আগে থেকেই প্রহর গোনা শুরু। দুপুর দুটো থেকে মোহনবাগান ক্লাবের বাইরে ভিড়। চারটের আগেই গ্যালারি কানায় কানায় ভরা। বিকেল ৫ টা ২০ নাগাদ ক্লাবে পা রাখলেন মার্টিনেজ। প্রথমেই পেলে-মারাদোনা-সোবার্স নামাঙ্কিত গেটের উদ্বোধন করেন। তারপর সরাসরি চলে যান ক্লাবের ভেতরে। ক্লাব তাঁবু ঘুরে দেখেন। এমিকে সংবর্ধনা জানায় মোহনবাগান। দেওয়া হয় সবুজ মেরুন উত্তরীয়, ফুলের স্তবক, মোহনবাগান রতেœর আদলে গড়া পদক, আর্জেন্টিনার জার্সি। একইসঙ্গে উপহার দেওয়া হয় সবুজ মেরুন জার্সি। যা সঙ্গে সঙ্গেই গায়ে চাপিয়ে নেন মার্টিনেজ। পূর্ব পরিকল্পনা মাফিক পাঁচজনের হাতে আজীবন সদস্যপদ তুলে দেন এমি। ক্লাবের সংগ্রহশালাও ঘুরে দেখেন।

মাঠেও একাধিক মুহূর্তের সাক্ষী রাখলেন ভক্তদের।

বিশ্বকাপারের একঝলক দেখেই ফেটে পড়ে গ্যালারি। গলফ কার্টে গোটা মাঠ প্রদক্ষিণ করেন মার্টিনেজ। গ্যালারিতে একাধিক বল ছুড়ে দেন। পরে মঞ্চ থেকেও গ্যালারির উদ্দেশে বলে শট মারেন। কলকাতা পুলিশ এবং মোহনবাগানের পক্ষ থেকে তাঁকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। উপস্থিত ছিলেন পুলিশ কমিশনার বিনীত কুমার গোয়াল এবং অন্যান্য উচ্চপদস্থ অফিসাররা। নীল-সাদা বেলুন উড়িয়ে কলকাতা পুলিশ ফ্রেন্ডশিপ কাপের উদ্বোধন করেন ডিবু। ম্যাচের আগে দুই দল মোহনবাগান অলস্টার এবং কলকাতা পুলিশ অলস্টারের ফুটবলারদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে পরিচিত হন। মজার ছলে গোলের নীচে দাঁড়িয়ে পুলিশ কমিশনারের পেনাল্টিও বাঁচান। খুব কম সময়ের পার্থক্যে দুটো অনুষ্ঠানে হাজির হয়েও বিরক্তির লেশমাত্র নেই। সারাক্ষণ হাসিখুশি। মঞ্চে বসে তাড়িয়ে তাড়িয়ে ম্যাচ উপভোগ করেন মার্টিনেজ। সমর্থকদের ব্যাকগ্রাউন্ডে রেখে তোলেন সেলফিও। এমনকী ভিডিও কল করে মোহনবাগান মাঠের উন্মাদনার চিত্রও দেখান ফোনের ওপারে থাকা মানুষটিকে। রীতিমত উপভোগ করলেন। অতীতে কলকাতায় বহু তাবড় তাবড় ক্রীড়াব্যক্তিত্ব এসেছে। কিন্তু এরকম সর্বদা হাসিখুশি মেজাজের বিশ্বতারকার আগমন এই প্রথম। আড়াই দিনের সফরের প্রথম দিনই কলকাতার মন জয় করলেন মার্টিনেজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *