হরিয়ানার থমথমে অবস্থায় কারফিউ জারি, শান্তির ডাক

আন্তর্জাতিক

সুবর্ণবাঙলা অনলাইন ডেস্ক

গোষ্ঠী সংঘর্ষে অশান্ত উত্তর ভারতের রাজ্য হরিয়ানা। রাজ্যের নুহ জেলায় একটি ধর্মীয় শোভাযাত্রায় পাথর ছোড়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে ওঠে। ধর্মীয় মিছিলটিকে আটকানোর চেষ্টার অভিযোগ ঘিরে আগুন জ্বলে। পুলিশকে লক্ষ্য করে চলে গুলি।

আগুন লাগানো হয় একটি মসজিদেও। মারা গেছেন মসজিদের এক ইমাম। গোষ্ঠী সংঘর্ষ ছড়াচ্ছে গুরুগ্রামেও। এখন পর্যন্ত নিহত পাঁচজন, আহত হয়েছেন বহু। ভারতের একাধিক সংবাদমাধ্যমে বলা হচ্ছে, সোমবার গুরুগ্রামের কাছে নুহ-তে ধর্মীয় শোভাযাত্রা চলাকালীন সংঘর্ষের সূত্রপাত।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নুহতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সেই সঙ্গে জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা। নুহ জেলায় ১৪৪ ধারা জারির পাশাপাশি কারফিউ দেয়া হয়েছে। ‘হরিয়ান এক হরিয়ানভি এক’, এই স্লোগান দিয়ে মানুষের কাছে শান্তির আহ্বান জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খাট্টার।

নুহ জেলায় মেতায়েন করা হয়েছে ২০ কোম্পানি আধা সামরিক বাহিনীও। রাস্তায় ব্যস্ত সময় পার করছেন পুলিশ কর্মকর্তারা। কোনও অশান্তি যাতে না ছড়ায়, সেদিকে রাখা হয়েছে কড়া নজর। যতক্ষণ না পর্যন্ত নুহ জেলা শান্ত হচ্ছে, ততক্ষণ চলবে কড়া নজরদারি।

বিবিসির বলছে, ধর্মীয় স্থাপনাতেও হামলা চালানো হয়েছে। ঘটনার সূত্রপাত হিসেবে এনডিটিভি বলছে, গুরুগ্রাম–সংলগ্ন নুহ এলাকায় একটি ধর্মীয় শোভাযাত্রা চলাকালে সংঘর্ষ বাধে। বিশ্ব হিন্দু পরিষদ শোভাযাত্রাটি বের করে। এই শোভাযাত্রা গুরুগ্রাম–আলওয়ার জাতীয় মহাসড়কে পৌঁছা মাত্রই একদল তরুণ শোভাযাত্রা থামিয়ে দেন। এরপর তারা পাথর ছুড়তে শুরু করেন।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মাসকয়েক আগে নুহতে জুনায়েদ ও নাসির নামে দুই যুবককে তাদের গাড়িতে জীবন্ত জ্বালিয়ে মারার ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত মোনু মানেসর নামে এক ব্যক্তি ওই শোভাযাত্রায় অংশ নেবেন– এই খবর জানাজানি হলে এলাকায় তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

তবে মোনু মানেসর দাবি করেছেন, বিশ্ব হিন্দু পরিষদের পরামর্শে তিনি শেষ পর্যন্ত শোভাযাত্রায় যোগ দেননি। কিন্তু মুসলিম অধ্যুষিত নুহ ও মেওয়াট এলাকায় এই মিছিল ও তাতে মোনু মানেসরের যোগদানের খবরকে ঘিরে আগে থেকেই স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষুব্ধ ছিলেন।

এরপর ওই ধর্মীয় মিছিলটি যখন বিকেলে নুহর খেডলা মোড় দিয়ে যাচ্ছিলো, তখন এক বিরাট জনতা তাতে বাধা দেয়। এরপরই দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ, পাথর ছোড়াছুড়ি শুরু হয়ে যায়। রাস্তায় বহু গাড়ি ও মোটরবাইকও জ্বালিয়ে দেওয়া হয়।

পরবর্তীতে ক্রমশ ওই সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে গুরগাঁও এলাকাতেও। মাঝরাতের পর গুরগাঁওয়ের সেক্টর ৫৭ এলাকায় বিরাট জনতা একটি মুসলিমদের ধর্মীয় স্থাপনায় আগুন ধরিয়ে দেয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *