দেশের দূষিত বাতাসে অসুস্থ
সুবর্ণবাঙলা অনলাইন ডেস্ক
তীব্র বায়ুদূষণের ফল ভোগ করছেন ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো। দেশের দূষিত বাতাসে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন তিনি। কাশিতে ভুগছেন প্রায় এক মাস ধরে। ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তার মাত্রাতিরিক্ত বায়ুদূষণ প্রেসিডেন্ট উইদোদোর কাশির কারণ হতে পারে বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা।
ইন্দোনেশিয়ার মিনিস্টার অব ট্যুরিজম অ্যান্ড ক্রিয়েটিভ ইকোনমি (পর্যটন ও সৃজনশীল অর্থনীতি) মন্ত্রী স্যান্ডিয়াগা উনো জানান, প্রায় চার সপ্তাহ ধরে কাশিতে ভুগছেন প্রেসিডেন্ট। চলতি সপ্তাহে জাকার্তায় একটি মন্ত্রিসভা বৈঠকের পর এ কথা জানিয়েছিলেন তিনি। কাশির সম্ভাব্য কারণ হিসাবে দায়ী করেছেন জাকার্তার তীব্র বায়ুদূষণকে। বায়ুদূষণ মোকাবিলায় এক সপ্তাহের মধ্যে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা জারি করেছেন উইদোদো।
বায়ুর গুণমানের দিক থেকে বিশ্বে সবচেয়ে খারাপ অবস্থান ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তার। সুইস এয়ার কোয়ালিটি টেকনোলজি কোম্পানি আইকিউএয়ার এ তথ্য জানায়।
এর আগে বিভিন্ন গবেষণায়ও জাকার্তাকে বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত স্থানগুলোর মধ্যে একটি হিসাবে দেখা হয়েছে। গাড়ি থেকে নির্গত ধোঁয়া, নির্মাণ প্রকল্প, জৈববস্তু ও কয়লাসহ অন্যান্য জ্বালনি পোড়ানো অথবা অ্যারোসলের অতিরিক্ত ব্যবহারের কারণে এই তীব্র বায়ুদূষণের স্বীকার ইন্দোনেশিয়া। রাজধানীর আশপাশের শিল্প-কারখানাগুলোর নির্গত ধোঁয়াও বায়ুদূষণ তৈরি করে। ইন্দোনেশিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, চলতি বছরের আগস্ট পর্যন্ত জাকার্তার ৬ লাখ বাসিন্দা শ্বাসযন্ত্রের রোগে ভুগছেন।
প্রেসিডেন্টের কাশির কারণ প্রকৃতপক্ষেই যদি বায়ুদূষণ হয় তাহলে তার জন্য দায়ী উইদোদো নিজে। বায়ুদূষণ রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার নেওয়ার ক্ষেত্রে নিজের নিষ্ক্রিয়তার পরিণাম। এমনকি এই প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে ২০২১ সালে একটি ‘নাগরিক মামলা’ করা হয়েছিল। বায়ুদূষণ বেড়ে যাওয়ার প্রতিক্রিয়া হিসাবে ৩২ জন বাদী হয়ে তার বিরুদ্ধে মামলা করেন।
আসামি ছিল উইদোদোসহ আরও তিনজন মন্ত্রী ও তিনজন প্রাদেশিক গভর্নরের নাম। বিচার কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছিল তিনজন বিচারকের সভাপতিত্বে। উইদোদোসহ মামলার অন্য আসামিরা জাকার্তার বায়ুদূষণ প্রতিরোধে ব্যর্থ হয়েছেন বলে জানানো হয় বিচারকদের রায়ে। আরও বলা হয়, প্রতিবেশী পশ্চিম জাভা আর বান্টেন প্রদেশের গভর্নররা তাদের নিজ নিজ অঞ্চলে দূষণ নিয়ন্ত্রণে দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছেন। প্রেসিডেন্ট ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের জাকার্তার বায়ুর গুণমান উন্নত করতে ও বায়ুদূষণের ব্যাপারে সরকারি বিধি সংশোধন করার নির্দেশনাও দিয়েছিলেন বিচারকরা।
আদালতের এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছিলেন উইদোদোসহ অন্য মন্ত্রীরা। ২০২২ সালে আপিলে হেরে যান তারা। চলতি বছর আবারও আপিল করেছেন তারা। এটি বর্তমানে বিচারাধীন প্রক্রিয়ায় রয়েছে।
তবে এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন না বলে জানিয়েছিলেন জাকার্তার তৎকালীন গভর্নর অ্যানিস বাসওয়েদান। বলেছিলেন, ‘তার প্রশাসন জাকার্তার বাতাসের মান উন্নত করার জন্য আদালতের সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে প্রস্তুত।’