মিয়ানমার সীমান্ত দিয়ে খাদ্য রপ্তানি বন্ধ করল বাংলাদেশে

অর্থ ও বাণিজ্য আন্তর্জাতিক

সুবর্ণবাঙলা অনলাইন ডেস্ক


মংডুর কানিনচাং অর্থনৈতিক অঞ্চল। ছবি : সংগৃহীত

সোনালী ব্যাংক মিয়ানমারের বড় দুটি ব্যাংকের সম্পদ জব্দ করার সিদ্ধান্ত নেয়ার পর রাখাইন রাজ্যের মংডু হয়ে খাদ্যসামগ্রী (চাল, ডাল, বাদাম ও পিঁয়াজ) বাংলাদেশে রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছে মিয়ানমারের সামরিক সরকার।

বিষয়টি ১লা সেপ্টেম্বর মিয়ানমারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ঘোষণা দিলেও তা প্রকাশিত হয়েছে বিলম্বে। এই আদেশটি গত ৪ সেপ্টেম্বর থেকেই কার্যকর করা হয়েছে।

এ খবর দিয়ে অনলাইন মিয়ানমার নাউ বলছে, ওইসব রপ্তানিপণ্যের মধ্যে আছে চাল, ডাল, বাদাম ও পিঁয়াজ। এখন পরিবর্তিত সিদ্ধান্তে এসব পণ্য শুধু রাখাইনের রাজধানী সিতওয়ে দিয়ে পাঠানো যাবে। এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হওয়ার কথা এরই মধ্যে। মিয়ানমারের সামরিক সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বাণিজ্য বিভাগের মহাপরিচালক মিন্ট থুরা বলেছেন, সোনালী ব্যাংক বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। এ জন্য পাচার প্রতিরোধে সিতওয়ে দিয়ে পণ্য রপ্তানি করা প্রয়োজন।

রিপোর্টে আরও বলা হয়, এ বছর জুনে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ মন্ত্রণালয় মিয়ানমারের সামরিক জান্তা নিয়ন্ত্রিত দুটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান- মিয়ানমার ফরেন ট্রেড ব্যাংক (এমএফটিবি) এবং মিয়ানমার ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড কমার্শিয়াল ব্যাংকের (এমআইসিবি) বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এ সময়ে সোনালি ব্যাংকের কাছে সব মিলিয়ে ১০০ কোটি ডলারের সম্পদ ছিল তাদের। বাংলাদেশের বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের মতে, এমএফটিবি এবং এমআইসিবির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেয়ার পর তাদের এই সম্পদ জব্দ করতে বড় রকমের চাপ সৃষ্টি করেছে যুক্তরাষ্ট্র সরকার। এ দুটি ব্যাংকের মধ্য দিয়ে মিয়ানমারের বেশির ভাগ লেনদেন করা হয়।

১৯৯৫ সালে তখনকার সামরিক শাসকের আমলে এমন লেনদেনের বিষয়ে প্রথম চুক্তি স্বাক্ষর করে এমআইসিবি এবং সোনালী ব্যাংক। এর ফলে দুই দেশের বাণিজ্য বৃদ্ধি পায়।

কিন্তু সম্প্রতি ব্যাংক দুটির এসব সম্পদ জব্দ করার ফলে সার্টিফিকেট অব ডিপোজিট ব্যবহার করে টেকনাফ উপজেলা সোনালী ব্যাংক শাখায় এক সময়ে ৫০ হাজার ডলার পর্যন্ত অর্থ স্থানান্তর করা সম্ভব এমআইসিবির মংডু শাখা থেকে। জবাবে রাখাইন রাজ্যের চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির চেয়ার অং ওও বলেন, এসব বিধিনিষেধের কারণে রাজ্যের অর্থনীতিতে বড় কোনো প্রভাব পড়বে না। পণ্য রপ্তানি করা যাবে সিতওয়ে দিয়ে। অং ওও’র মতে, ডলার সংকটের কারণে মিয়ানমার থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কেনা কমিয়ে দেয় বাংলাদেশ। এর ফলে বাণিজ্য কমে গেছে। তিনি আরও বলেন, তবে আর্থিক বিধিনিষেধ সত্ত্বেও তা বৃদ্ধি পেয়েছে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে।

জান্তা-নিয়ন্ত্রিত একটি সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিয়ানমারে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ৬ সেপ্টেম্বর সামরিক জান্তা প্রধান মিন অং হ্লাইং-এর সাথে দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও সহযোগিতা নিয়ে আলোচনার জন্য সাক্ষাৎ করেন।

জান্তার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের এপ্রিল থেকে আগস্টের মধ্যে মংডু হয়ে বাংলাদেশে রপ্তানিকৃত পণ্যের মোট মূল্য ৪.৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *