আজও কি আফগান উত্সব!

খেলাধুলা

স্পোর্টস ডেস্ক

ছবি: সংগৃহীত

আফগানিস্তান প্রথম বারের মতো বিশ্বকাপ খেলে ২০১৫ আসরে। নিজেদের অভিষেক বিশ্বকাপেই একবার জয়োত্সবের উপলক্ষ্য তৈরি করেছিল আফগানরা। ২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি নিউজিল্যান্ডের ডানেডিনের ইউনিভার্সিটি ওভার মাঠে আফগানরা হারিয়েছিল স্কটল্যান্ডকে। ২০১৯ সালে নিজেদের দ্বিতীয় বিশ্বকাপে জয়ের মুখ না দেখলেও ২০২৩ বিশ্বকাপে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচেই বড় এক অঘটন ঘটিয়ে ফেলেছে মুজিব-রশিদ খানদের আফগানিস্তান। হারিয়ে দিয়েছে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে।

গত ১৫ অক্টোবর দিল্লির অরুন জেটলি স্টেডিয়ামে আফগানদের সেই অবিস্মরণীয় জয়ের রেশ এখনো কাটেনি। বরং ঐতিহাসিক ঐ জয়ের মৌ মৌ ঘ্রাণ শুকতে শুকতেই আজ আবার আরেকটি বিজয়গাথা তৈরির ছক কষে মাঠে নামছে আফগানিস্তান। চেন্নাইয়ের এম এ চিদাম্বরাম স্টেডিয়ামে আজ তাদের প্রতিপক্ষ নিউজিল্যান্ড। যারা তিন ম্যাচের তিনটিতেই জিতে আকাশে উড়ছে।

তবে টানা তিন জয়ে কিউইরা যতটা আত্মবিশ্বাসের হাওয়ায় দুলছে, এক ইংল্যান্ড বধের মাধ্যমেই আফগানরা তার চেয়ে বেশি আত্মবিশ্বাসে উড়ছে। যে আত্মবিশ্বাসের বেলুনে চড়ে আজ আবার আরেকটি অঘটনের জন্ম দিতে তৈরি আফগান ক্রিকেট সেনারা। যদিও পরিসংখ্যান আফগানিস্তানের নয়, কথা বলছে নিউজিল্যান্ডের হয়েই। বিশ্বকাপে এর আগে দুই বার মুখোমুখি হয়েছে দুই দল। সেই দুই বারও নিউজিল্যান্ড তুলে নিয়েছে অনায়াস জয়।

২০১৫ সালের ৮ মার্চ নেপিয়ারে দুই দলের প্রথম সাক্ষাতে নিউজিল্যান্ড জিতেছিল ৬ উইকেটে। ড্যানিয়েল ভেট্টোরি, করি অ্যান্ডারসনদের তোপের মুখে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে আফগানিস্তান মাত্র ১৮৬ রানেই গুটিয়ে যায়। নিউজিল্যান্ড ৮৩ বল হাতে রেখেই মাত্র ৪ উইকেট হারিয়ে পৌঁছে যায় লক্ষ্যে (১৮৮/৪)।

২০১৯ সালের ৮ জুন টনটনে আরো করুণভাবে হেরেছিল আফগানরা। প্রথমে ব্যাট করে আফগানরা মাত্র ১৭২ রানেই গুঁড়িয়ে যায়। জেমি নিশাম, লকি ফার্গুসনদের তোপের মুখে দাঁড়াতেই পারেনি আফগানরা। জবাবে মাত্র ৩২.১ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়েই নিউজিল্যান্ড ছুঁয়ে ফেলে লক্ষ্য (১৭৩/৩)। দ্বিতীয় সাক্ষাতে আফগানদের ধসিয়ে দেওয়া বোলারদের সবাই আছেন নিউজিল্যান্ডের এবারের বিশ্বকাপ দলে। ট্রেন্ট বোল্ট আছেন, লকি ফার্গুসন আছেন, জেমি নিশাম আছেন। তাদের সঙ্গে আছেন নতুন বিস্ময় রাচিন রাভিন্দ্রা, ম্যাট হেনরি, মিচেল সান্তানাররা। আফগানদের ভয়টা আসলে কিউইদের বোলিং নিয়েই বেশি।

তার পরও হাশমতউল্লাহ শাহিদির দল জয়ের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী। যে আত্মবিশ্বাস তাদের ক্রিকেটীয় চেতনায় ভরে দিয়েছে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে পাওয়া ঐতিহাসিক জয়। মজার ব্যাপার হলো, ওয়ানডে ক্রিকেটে বিশ্বকাপের ঐ দুই ম্যাচ ছাড়া কখনোই মুখোমুখি হয়নি দুই দল। ফলে আজকের তৃতীয় সাক্ষািটও হচ্ছে বিশ্বকাপ মঞ্চেই। ইংল্যান্ড বধের রূপকথা লিখতে ব্যাটে-বলে বড় ভূমিকা রেখেছিলেন রহমতউল্লাহ গুরবাজ (৮০), ইব্রাহিম আলিখিল (৫৮), মুজিব-উর রহমান (৩ উইকেট), রশিদ খানরা (৩ উইকেট)। কিউই বধের আশায় আজও তারাই হবেন আফগানবাসীর বড় ভরসা। আফগানরা পারবে আরেকটি রূপকথা রচনা করতে? নাকি আগের দুই সাক্ষাতের মতো আজও কিউইদের সহজ জয়ের গল্পই রচিত হবে চেন্নাইয়ে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *