সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী ঢাকা-১৯ (সাভার-আশুলিয়া)
সুবর্ণবাঙলা ডেস্ক
ঘনিয়ে এসেছে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের দিন। সারা দেশের মতো রাজধানী ও রাজধানীর আশ- পাশেও শুরু হয়েছে নির্বচনী হিসাব-নিকাশ। জাতীয় নিবার্চনকে সামনে রেখে ঢাকা-১৯ তথা সাভার-আশুলিয়া অঞ্চলেও চলছে নির্বাচনী ডামাডোল। এই নির্বাচনী এলাকার ১২টি ইউনিয়ন ও একটি পৌর সভার মানুষজন ইতিমধ্যে সরব সরব হয়ে ওঠেছে। আলোচনায় এবার ডা. এনামুর রহমানের সঙ্গে প্রতিদ্বান্দ্বীতায় ঈগল প্রতীক নিয়ে আছেন তৌহিদজং মুরাদ।যিনি একসময়ের আওয়ামীলীগের এমপি ছিলেন। ট্রাক প্রতীক নিয়ে আরেক প্রার্থি আছেন সাইফুল ইসলাম। এদের মধ্যে বর্তমান এমপি ডা. মো. এনামুর রহমােই এখন পযর্ন্ত জনপ্রিয়তার দৌড়ে এগিয়ে আছেন। আওয়ামী লীগ তথা, সরকার যে ক্রাইসিসের কারনে ২৯ নভেম্বর ২০১৩ সালে ক্লিন ইমেজের ডা. মো. এনামুর রহমানকে বেছে নিয়েছিলেন। তিনি অত্যন্ত দক্ষতা ও সফলতার সঙ্গে তা ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছেন। সাভারের ইতিহাসে প্রথম মন্ত্রী যেমন তিনি, তেমনি সততা ও দক্ষতায় সে দায়ীত্ব পালন করে সাভারের নামকে ও ইতিহাসের অন্তর্ভুক্ত করেছেন।
এর আগে, এই আসনে বিএনপি বা, আওয়ামীলীগ উভয় দলীয় সাংসদেরই একান্ত কিছু অনুসারি ছিল। যারা, বিভিন্ন বিচার-সালিশ থেকে শুরু করে জমি দখল, মিল কারখানার লিজের দখল, শক্তির মহরা প্রদর্শন ইত্যাদি থাকতো। বিগত দশ বছর, মানুষ এসব থেকে নিরাপদে ছিল। গত ১লা আগষ্ট, তাঁর বাসায় কথা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আপনরা জানেন, ইতিপূবে, বিশেষ করে নব্বুই দশকের পর সাভারের সব দলীয় এমপি সাহেবদেরই, নিজস্ব বাহিনী থাকতো। কোনো এলাকায় যে কোনো ঘটনা ঘটলেই দলবেধে তাদের হুন্ডা বাহিনী হাজির হয়ে, সেগুলি তাদের নিজেদের মতোকরে সমাধান করতো। চাঁদা বাজির যন্ত্রনায় মানুষ নিজের জায়গায় স্বাধীন ভাবে বাড়িও করতে পারতো না। জমি দখল, বাড়ি দখল ইত্যাদি ছিল নৈমিত্তিক ব্যাপার। সন্ত্রাসের সঙ্গে বেড়ে গিয়েছিল মাদক ব্যবসা। এসবের ফলে, সাভার পরিণত হয়ে ছিল এক সন্ত্রাসের জনপদে। সাভার আশুলিয়ার কোথাও এখন আর সেই অবস্থা নেই। ঐ অবস্থা থেকে সাভার কে মুক্ত করতেই আমার সক্রীয় রাজনীতিতে প্রবেশ। অত্যন্ত বিনয়ী, সদাহাস্য ডা. মো. এনামুর রহমান, ৮মার্চ ১৯৫৭ সালে নরসিংদী জেলার অন্তর্গত, রায়পুরা উপজেলার, মুছাপুর গামে জন্ম গ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম, আক্তারুজ্জামান খান এবং মাতা, শিরিয়া খানম।
বাল্যকাল থেকেই তিনি, অত্যন্ত বিনয়ী ও মেধাবি ছাত্র হিসেবে পরিচিত ছিলেন। ১৯৭৩ সালে রংপুরের, রবার্টসনগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে প্রথম বিভাগে এসএসসি পাশ করেন। ১৯৭৫ সালে আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজ ঢাকা থেকে প্রথম বিভাগে এইচএসসি পাশ করেন। এবং চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন। ১৯৮৩ সালে এমবিবিএস পাশ করে বিসিএস দিয়ে সরকারী চাকরিতে প্রবেশ করেন। ১৯৯২ সালে সরকারী চারিতে ইস্তাফা দিয়ে এনাম ক্লিনিক প্রতিষ্ঠায় আত্ম নিয়োগ করেন। তার পরথেকে শুধু তাঁর সামনে চলা। অক্লান্ত পরিশ্রমে গড়ে তোলেন,
এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। যা, শুধু সাভারের গর্বকরার প্রতিষ্ঠানই নয়, বরং সাভারকে পরিচিতি এনে দিয়েছে দেশের বাইরেও। এনাম মেডিকেল কলেজ এখন দেশের অন্যতম বেসরকারী মেডিকেল কলেজ। তিনি সরকারী বেসরকারী বিভিন্ন প্রতিনিধি দলের হয়ে, আর্ন্তজাতিক সেমিনার সিম্পোজিয়ামে অংশ গ্রহণ করতে এবং ব্যাক্তিগত ভাবে থাইল্যান্ড, জাপান, লাউস, ভিয়েতনাম, নেপাল, ভারত, মালয়েশিয়া, শ্রীলঙ্কা, সৌদি আরব, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র সহ পৃথিবীর বহু দেশ ভ্রমণ করেছেন। তিনি লাউসে আইপিইউ কর্তৃক আয়োজিত আর্ন্তজাতিক শিশু পুষ্টি বিষয়ক সেমিনারে বাংলাদেশের পক্ষে প্রতিনিধিত্ব করেন এবং এক্সপার্ট ফেলো হিসেবে বক্তব্য রাখেন।
সমাজ সেবা: ডা. এনাম, মানব সেবাকে তাঁর জীবনের ব্রত হিসেবে নিয়েছেন। এ কথা তিনি মুখে নয়, কাজের মাধ্যমে একের পর এক প্রমাণ করে যাচ্ছেন। ১৯৮৮ সালের বন্যায় ১৫৬টি চিকিৎসা কেন্দ্র পরিচালনা করেন এবং ১৯৮৯ সালে সাটুরিয়ার ঘূর্ণিজড়ে আহতদের সেবায় ২টি চিকিৎসা কেন্দ্র পরিচালনা করেন। এ ছাড়া ১৯৯৮, ২০০৪,২০০৭ এর বন্যায় চিকিৎসা সহায়তা সহ, স্পেকট্রাম গামেন্টস ধ্বংস,
তাজরিন ফ্যাশন এ অগ্নি কাজ ও রানা প্লাজা ধ্বসে তিনি হাজার হাজার আহতদেও বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান করেন।
তাঁর হাসপাতালে ভবঘুরে ও পথে কুড়িয়ে পাওয়া রুগিদের সেবায় বিশেষ সেল রয়েছে। “এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল চ্যারিটি ট্রাস্ট” নামে দরিদ্র রোগিদের সেবার জন্য গঠন করেছেন একটি ট্রাস্ট। শুধু দেশেই নয়, তিনি মানব সেবায় দেশের গন্ডি পেরিয়ে, নেপালে ভূমিকম্পে আহতদের সেবায় প্রয়োজনীয় ঔষধ ও অপারেশন সামগ্রি সহ ১২ সদস্যেও একটি মেডিকেল টিম প্রেরণ করেন।
রাজনৈতিক কর্মকান্ড: রাজনৈতিক ভাবে, ডা. এনামুর রহমান স্কুল জীবনথেকেই ছাত্ররীগের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত ছিলেন। চাকরি ও পেশাগত কারনে সক্রীয় ভাবে কর্মকান্ডে জড়িয়ে না থাকলেও মনে প্রাণে বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করে নিজেকে মানব সেবায় নিয়োজিত রেখেছিলেন।
বিভিন্ন সময় ঘটে যাওয়া বিপর্যয়ে আহতদের পাশে দাঁড়িয়েছেন একান্ত আপন জন হয়ে। একদিকে দুদর্শাগ্রস্ত দেশের ত্রাতা স্বরূপ বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামীলীগ ও তাঁর ‘নৌকা মার্কা’ এবং তাঁর মনোনীত নিষ্কলুস নির্লোভ ডা. এনামুর রহমান। সাভার আশুলিয়া-অঞ্চলে এবারেও তিনি অভূতপূর্ব সাড়া ফেলেছে। রানা প্লাজা ধ্বংশের পর মানব সেবায় ডা. এনামুর রহমানের মহানুভবতায় খুশি হয়ে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা তাঁকে সরাসরি রাজনীতির মাধ্যমে সমাজ সেবার সুযোগ করে দেন। পরপর দুবারের সাংসদ নির্বিাচিত হলেও মানুষের প্রতি তাঁর মমত্ববোধ একই অবস্থানে রয়েছে।২০১৪ সালে বিএনপি-জামাত জোটের টানা ৯২দিন হরতালের নামে চোরাগুপ্তা হামলা,
পেট্রোলবোমা হামলা ও আগুনদিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মারার মত নিষ্ঠুর ও ঘৃন্য কর্মকান্ডে সাধারণ মনুষ যখন দিশে হারা, তখন তিনি এইসব সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের পাশে থেকে তাদের সাহস যুগিয়েছেন। ২০১৫ সালের এসএসি পরীক্ষা নিয়ে ছাত্রছাত্রীদের অভিভাবকগন যখন চরম উৎকণ্ঠা ও অস্বস্থিতে ভোগছিলেন, তিনি তখন দলীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে কেন্দ্রসমূহে অতন্দ্র প্রহরীর ন্যায় পাহারা দিয়ে, ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকদের মনোবল দৃঢ় রাখতে বিশেষ সহায়ক ভূমিকা রাখেন।
ডা. এনাম কখনো নিজের কৃতিত্ব নিয়ে বাগাড়ম্ভ করতে পসন্দ করেন না। জননেত্রী শেখ হাসিনার দশটি বিশেষ উদ্যোগ এবং আওয়ামীলীগ সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ড সাধারণ মানুষের মধ্যে তুলে ধরতেই বেশি পসন্দ করেন।
এ প্রসঙ্গে তাঁর সঙ্গে কথোপকথনের সময় তিনি বলেন, ‘আপনারা একটু কল্পনা করে দেখুন, পদ্মাসেতু থেকে বিশ্বব্যাংক যখন সরে দাঁড়ালো, তিনি সঙ্গে সঙ্গে ঘোষণা করলেন, ‘নিজেস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতু করবো’ যা, শুনে দেশের অনেক ঝানু অর্থনীতিবিদও আঁৎকে উঠেছিলেন। আর, অন্যান্য রাজনৈতিক দলতো কল্পনা করতেও ভয় পেয়েছে। আজ পদ্মাসেতু দক্ষিণাঞ্চলের অর্থনীতিতে বিশেষ ভূমিকা রেখে চলছে। কর্ণফুলি টানেল, মেট্রো রেল, দেশের সকল হাইওয়ে এখন ফোরলেনে উন্নিত, গভীর সমুদ্র বন্দর, নিজেস্ব স্যাটেলাইট উৎক্ষেপন, সমুদ্র বিজয়, ছিটমহল সমস্যার সমাধান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সমূহে বহুতল ভবন নির্মাণ, অসংখ্য বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণ, অসংখ্য স্কুল ও কলেজ সরকারীকরন, এত এত বড় কাজের মধ্যে ছোট ছোট কাজের বর্ণনার প্রয়োজন আছে কি? তিনি আরো বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দশটি বিশেষ উদ্যোগের, একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের মাধ্যমে দেশে বিপুল সংখ্যক মানুষ এখন আত্মনির্ভরশীল, আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে অংখ্য মানুষের মাথাগুজার ঠাঁই হয়েছে, বিভিন্নধরণের শিক্ষা সহায়ক কর্মসূচির কারণে, মেয়ে শিশুদের ঝরে পড়া এখন শূন্যে জননেত্রী কোঠায় এবং ছেলে শিশুদের ২শতাংশের মত, নারীর ক্ষমতায়নে সামাজিক অবস্থায় ব্যাপক সুফল বয়ে আনছে, কমিউনিটি ক্লিনিকের কারণে মা ও শিশু সহ, সমাজের অসহায় মানুষগুলো এখন চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেন বিনামূল্যে। প্রায় ত্রিশ ধরনের ঔষধও পাচ্ছেন, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় দেশের প্রায় কোটি লোক বৃদ্ধ ভাতা, বিধবা ভাতা, স্বামী পরিত্যাক্ত ভাতা, প্রতিবন্ধি। ভাতা ইত্যাদির মাধ্যমে সুরক্ষা পাচ্ছেন।
ডা. এনামুর রহমান অত্যান্ত আস্থার সঙ্গে বলেন, নৌকামার্কার যে জোয়ার এসেছে তা, সরকারের তথা জননেত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বের সঠিক দিক নিদের্শনার ফলেই সম্ভব হয়েছে।৭ জানুয়ারীর নির্বাচনে আমরা বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়ে (সাভার-আশুলিয়া) ঢাকা-১৯ আসনটি জননেত্রী শেখ হাসিনাকে উপহার দেব। ইনশাল্লাহ।