(পরিবেশ অধিদপ্তরের প্রতিবেদন)
সুবর্ণবাঙলা অনল্ইান ডেস্ক
ঢাকার প্রাণখ্যাত বুড়িগঙ্গা নদীসহ মোট ১২টি নদী ও খাল ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ৬০টি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের তরল বর্জ্যের কারণে। তরল বর্জ্য শোধনাগার বা ইটিপি প্লান্ট না থাকায় বর্জ্য সরাসরি পড়ছে নদী ও খালে। এমনকি এ দূষণের তালিকায় রয়েছে প্রায় ২২০টি হাসপাতাল ও ক্লিনিকও। জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনকে পরিবেশ অধিদপ্তরের দেওয়া ঢাকা জেলার নদনদী, খালবিল দূষণকারীদের তালিকায় উঠে এসেছে এসব নাম। শিল্পপ্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি হাসপাতালের ক্ষেত্রেও ইটিপি বাধ্যতামূলক করা ও ব্যবস্থা নেওয়ার পক্ষে বিশেষজ্ঞরা।
রাজধানীর যেসব নদী ও খাল দূষিত হচ্ছে, সেগুলো হলো বুড়িগঙ্গা নদী, তুরাগ নদ, বালু নদ, রামপুরা খাল, কল্যাণপুর খাল, বেগুনবাড়ী খাল, ভাটারা খাল, হাজারীবাগ খাল, রামচন্দ্রপুর খাল, বাড্ডা খাল, আদি বুড়িগঙ্গা ও রূপনগর খাল। নদী রক্ষা কমিশনের পক্ষ থেকে পরিবেশ অধিদপ্তরের কাছে ঢাকা জেলার নদনদী, খালবিল দূষণকারীদের তালিকা চাওয়া হয় ২০২১ সালের নভেম্বর। এক মাস পর পরিবেশ অধিদপ্তর ঢাকার খাল ও নদনদী দূষণকারীদের তালিকা নিয়ে একটি প্রতিবেদন তৈরি করে। এতে প্রাথমিকভাবে দূষণের ২৮০টি উৎস চিহ্নিত করা হয়। সেখানে দেখা যায়, শিল্পবর্জ্যের পাশাপাশি রাজধানীর হাসপাতালের তরল বর্জ্যও পড়ছে খাল ও নদীতে। প্রতিবেদনে উল্লিখিত ২৮০টি উৎস মধ্যে ২২০টিই ছিল হাসপাতাল। নদী দূষণকারী প্রতিষ্ঠানের তথ্য ঘেঁটে দেখা যায়, কারখানাগুলোর মধ্যে বেশির ভাগই টেক্সটাইল ডাইং এবং প্রিন্টিং, ওয়াশিং, মেটাল, আইসক্রিম কারখানা। এছাড়া রয়েছে ওষুধ উৎপাদন কারখানা, সরকারি হাসপাতাল, বেসরকারি হাসপাতাল, বিশেষায়িত হাসপাতাল, বেসরকারি ডায়াগনিস্টিক সেন্টার। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজধানীর সরকারি হাসপাতালগুলোয় ইটিপি নেই বললেই চলে। পরিবেশ অধিদপ্তরের একটি সূত্র জানিয়েছে, সরকারি হাসপাতালে ইটিপি বা ছাড়পত্র নেওয়ার বিষয়ে সংস্থাটির পক্ষ থেকে কড়াকড়ি করা হয় না। মূলত হাসপাতাল বিবেচনায় এ বিশেষ ছাড় দেওয়া হয়।বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একসময় রাজধানীর ভেতর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে বেশ কয়েকটি বড় নদী। অপরিকল্পিত নগরায়ণে হারিয়ে গেছে অনেক খাল ও উল্লেখযোগ্য নদনদী। এক্ষেত্রে হাসপাতাল হোক বা কারখানা নদীদূষণের ক্ষেত্রে যাদেরই নাম আসে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।
পরিবেশ অধিদপ্তরের মনিটরিং অ্যান্ড এনফোর্সমেন্টের পরিচালক মোহাম্মাদ মাসুদ হাসান পাটোয়ারী বলেন, হাসপাতাল বা কারখানায় সবখানে ইটিপি স্থাপনের বিষয়টি আমরা গুরুত্ব দিয়েই দেখছি। অভিযান চালিয়ে অনেকগুলো বন্ধ ও জরিমানা করা হয়েছে। আমাদের মহানগরীর পাশাপাশি সারা দেশেই অভিযান পরিচালনা করা হয়। যাদের বিরুদ্ধেই নদী ও খালে বর্জ্য ফেলার অভিযোগ আসবে, আমরা ব্যবস্থা নেব। ইটিপি ছাড়া কোনো কারখানা চলতে পারবে না।