বোমাবর্ষণ বন্ধ না করলে আলোচনায় বসবেন না হেমেদতি

আন্তর্জাতিক

অনলাইন ডেস্ক

জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো ওরফে হেমেদতি। ছবি: এএফপি

সুদানে সংঘর্ষে লিপ্ত দুটি বাহিনীর একটির নেতা জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো ওরফে হেমেদতি বলেছেন, তিনি তাঁর সেনাদের ওপর বোমাবর্ষণ বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত কোনো ধরনের আলোচনায় বসবেন না। ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেছেন।

হেমেদতি আধা সামরিক বাহিনী র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) নেতৃত্ব দিচ্ছেন। অন্যদিকে সেনাবাহিনীর নেতৃত্ব দিচ্ছেন জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল বুরহান। সুদানের রাষ্ট্রক্ষমতা ভাগাভাগিকে কেন্দ্র করে এ দুটি বাহিনী রক্তক্ষয়ী সংঘাতে লিপ্ত রয়েছে।

বিবিসির সাক্ষাৎকারে হেমেদতি অভিযোগ করে বলেন, ‘তিন দিনের যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ানোর পর থেকে তাঁর যোদ্ধারা নিরবচ্ছিন্ন বোমা হামলার শিকার হচ্ছে।’ তিনি সহিংসতার জন্য সেনাপ্রধান জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল বুরহানকে দায়ী করে বলেন, ‘আমরা সুদানকে ধ্বংস করতে চাই না।’

উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে তিন দিনের যুদ্ধবিরতির মেয়াদ শেষ হওয়ার শেষ মুহূর্তে আরও তিন দিন পর্যন্ত যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। এ যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ানোতে মধ্যস্থতা করেছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাতিসংঘ ও সুদানের প্রতিবেশী কয়েকটি দেশ।

এদিকে জেনারেল বুরহান জানিয়েছেন, তিনি অস্থায়ীভাবে দক্ষিণ সুদানে মুখোমুখি আলোচনায় বসতে রাজি আছেন। কিন্তু হেমেদতি টেলিফোনে বিবিসিকে বলেছেন, ‘তিনিও আলোচনার জন্য প্রস্তুত, তবে তার আগে যুদ্ধবিরতি বজায় রাখতে হবে। বোমাবাজি বন্ধ করতে হবে।’ তিনি জেনারেল বুরহানকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘আগে শত্রুতা বন্ধ করুন। তারপর আমরা আলোচনায় বসব।’


সুদানের সেনাপ্রধান জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল বুরহান। ছবি: এএফপি

জেনারেল হেমেদতি আরও বলেন, সেনাপ্রধান বুরহানের সঙ্গে তাঁর কোনো ব্যক্তিগত শত্রুতা নেই। তবে তিনি সাবেক প্রেসিডেন্ট ওমর আল বশিরের অনুগতদের ক্ষমতায় আনার জন্য বুহানকে ‘বিশ্বাসঘাতক’ বলে মন্তব্য করেন।

২০১৯ সালের হেমেদতির আরএসএফ ও জেনারেল বুরহানের সেনাবাহিনী সম্মিলিতভাবে সুদানের তৎকালীন ওমর আল বশিরের সরকারকে উৎখাত করেছিল। বশির তিন দশকরেরও বেশি সময় ধরে সুদানের রাষ্ট্রক্ষমতায় ছিলেন।

পরে আরও একটি অভ্যুত্থানে মাধ্যমে জেনারেল হেমেদতি ও জেনারেল বুরহান সুদানের রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করেন। পরে তাঁরা বেসামরিক সরকারের সঙ্গে ক্ষমতা ভাগাভাগি করার একটি চুক্তি বাতিল করেন।

এ বছর ক্ষমতা হস্তান্তর নিয়ে দুই জেনারেলের মধ্যে দ্বন্দ্ব তীব্র হয়। হেমাদতি দাবি করেছিলেন, সেনাবাহিনীতে তাঁর নেতৃত্বাধীন আরএসএফের ১ লাখ সেনাকে অন্তর্ভুক্ত করা হোক। কিন্তু জেনারেল বুরহান সেই দাবি মানেননি।

বিবিসিকে হেমাদতি বলেন, ‘আমি একটি সম্পূর্ণ বেসামরিক সরকারের অপেক্ষায় আছি। এটিই আমার নীতি।’

গত ১৫ এপ্রিল সুদানের রাষ্ট্রীয় সামরিক বাহিনী ও বিদ্রোহী আরএসএফের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ শুরু হয়। সুদানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, সেনাবাহিনী ও বিদ্রোহী আরএসএফ আধা সামরিক বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষে গত শুক্রবার পর্যন্ত অন্তত ৪৬০ জন নিহত এবং ৪ হাজার জনেরও বেশি আহত হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *