কাঁচামরিচের কেজি ৪০০ টাকা, সবজির বাড়তি দামে ক্রেতার নাভিশ্বাস

জাতীয়

সুবর্ণবাঙলা প্রতিবেদন

সরবরাহ সংকটের অজুহাতে এবার বাড়ানো হয়েছে কাঁচামরিচের দাম। খুচরা বাজারে এখন কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে সর্বোচ্চ ৪০০ টাকায়। এছাড়া পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে সর্বোচ্চ ১০০ টাকা। দাম বেড়েছে আদারও। এছাড়া বাজারে সব সবজিই বিক্রি হচ্ছে অতিরিক্ত দামে। ফলে নিত্যপ্রয়োজনীয় এসব পণ্য কিনতে ক্রেতার নাভিশ্বাস উঠে যাচ্ছে। তাদের খরচ করতে হচ্ছে বাড়তি টাকা।

শুক্রবার রাজধানীর খুচরা বাজার ঘুরে ক্রেতা ও বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য জানা গেছে।

বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, ঈদের পর বাজারে তদারকি সংস্থার কার্যক্রম একেবারে নেই। যে কারণে বিক্রেতারা কৌশল করে দাম বাড়িয়ে বিক্রি করছেন। আর ভোক্তার পকেট থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে টাকা।

বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শুক্রবার রাজধানীর খুচরা বাজারে প্রতি কেজি দেশি মরিচ বিক্রি হচ্ছে সর্বোচ্চ ৪০০ টাকা। আর হাইব্রিড কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ২৯০-৩২০ টাকা। যা এক সপ্তাহ আগেও ২০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। পাশাপাশি খুচরা বাজারে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮৫-৯৫ টাকা। যা এক সপ্তাহ আগে ৮০-৯০ টাকা ছিল। এক মাস আগে বিক্রি হয়েছে ৬৫-৭৫ টাকা। প্রতি কেজি আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে সর্বোচ্চ ১০০ টাকা। যা এক সপ্তাহ আগে ৮৫-৯৫ টাকা ছিল। এক মাস আগে বিক্রি হয়েছে ৭০-৭৫ টাকায়। সঙ্গে প্রতি কেজি আমদানি করা আদা বিক্রি হচ্ছে সর্বোচ্চ ৩২০ টাকা। যা সাত দিন আগেও ৩০০ টাকা ছিল।

নয়াবাজার বাজারে নিত্যপণ্য কিনতে আসা হাকিম বলেন, ঈদের পর বাজারে এসে এক প্রকার হতবাক হয়েছি। অন্যান্য পণ্য কিনে পেঁয়াজ মরিচ কিনতে এসে দেখি দাম আকাশচুম্বী। বিক্রেতারা মরিচের দাম ৩০০-৪০০ টাকা হাঁকাচ্ছেন। আর পেঁয়াজ ৯০-১০০ টাকা। এটা যেন মগের মুল্লুক? দেখার কেউ নেই।

মরিচের দাম বাড়ার কারণ সম্পর্কে বিক্রেতা মো. ইকবাল বলেন, কিছু দিন আগেও পাইকারি বাজারে প্রতি পাল্লা (৫ কেজি) কাঁচামরিচের দাম ছিল ৮০০ টাকা। এখন সেই মরিচের দাম ১২০০-১৪০০ টাকা। আর দেশি মরিচ প্রতি পাল্লা ১৫০০-১৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যে কারণে পাইকারি বাজার থেকে পরিবহণ খরচ, খুচরা বাজারের জায়গা খরচ ও বাছাই করার পর লাভ হিসাবে প্রতি কেজি ৩২০ থেকে ৪০০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। তিনি জানান, পাইকারিতে দাম বাড়লে খুচরা পর্যায়েও দাম বাড়বে। কারণ বেশি দামে এনে বেশি দামেই বিক্রি করতে হবে।

কাওরান বাজারের পাইকারি বিক্রেতা শাহ আলম বলেন, ঈদের পর বাজারে কাঁচামরিচের সরবরাহ কমেছে। তাছাড়া বন্যায় মরিচের খেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে সরবরাহ আরও কমেছে। তাই দাম একটু বাড়তি। পাইকারি বাজারে যে দামে বিক্রি হচ্ছে তার চাইতেও খুচরা পর্যায়ে কেজি প্রতি প্রায় ১০০ টাকা বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে।

বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে আরও জানা গেছে, খুচরা বাজারে প্রতি কেজি কাঁকরোল বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা। প্রতি কেজি গোল বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা, লম্বা বেগুন ৬০ টাকা, পেঁপে প্রতি কেজি ৬০ টাকা, মিষ্টিকুমড়া প্রতি কেজি ৪০ টাকা, লতি ৬০ টাকা, ঝিঙা ৬০ টাকা, ধুন্দল ৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৫০ টাকা, করোলা ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সঙ্গে প্রতি কেজি পটল বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকা, গাজর ৮০ টাকা, কচুরমুখি ১০০ টাকা। এছাড়া প্রতি পিস লাউ বিক্রি হচ্ছে ৫০-৭০ টাকা, লেবু প্রতি হালি (৪ পিস) ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

কাওরান বাজারের সবজি বিক্রেতারা জানান, ঈদের পর দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে এখনো সবজির সরবরাহ বাড়েনি। যে কারণে পাইকারি পর্যায়ে দাম একটু বেশি। যার প্রভাব পড়ছে খুচরা বাজারে। তবে দুই একদিন পর সরবরাহ বাড়বে। তখন দাম কিছুটা কমবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *