ইসরাইলের নির্যাতনের বর্ণনা দিলেন চিকিৎসক

আন্তর্জাতিক

অনলাইন ডেস্ক

ইসরাইলে বন্দি অবস্থায় নির্মম নির্যাতন করা হতো বলে দাবি করেছেন সদ্য মুক্তি পাওয়া গাজার আল–শিফা হাসপাতালের পরিচালক আবু সালমিয়া। সোমবার তিনিসহ বেশ কয়েকজন ইসরাইলের বন্দিদশা থেকে মুক্ত হয়ে গাজায় ফেরেন। চিকিৎসার স্বার্থে তাদের ফেরত পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ।

গাজায় ফিরে খান ইউনিস শহরে নাসের হাসপাতাল প্রাঙ্গণে বক্তব্য দেন আবু সালমিয়া। তিনি বলেন, জিজ্ঞাসাবাদ কেন্দ্রে বেশ কয়েকজন বন্দির মৃত্যু হয়েছে। তাদের খাবার ও ওষুধ দেওয়া হতো না।

নির্যাতনে আবু সালমিয়ার একটি বুড়ো আঙুল ভেঙেছে, এখনো সেরে ওঠেনি। তিনি বলেন, দুই মাস ধরে বন্দিদের সারা দিনে শুধু এক টুকরা রুটি দেওয়া হতো। বন্দিদের শারীরিক ও মানসিকভাবে লাঞ্ছিত করা হতো।

আল–শিফার প্রধান বলেন, তার বিরুদ্ধে কোনো ধরনের অভিযোগ আনা হয়নি।

ইসরাইলের গোয়েন্দা সংস্থা শিন বেত জানায়, আটক কেন্দ্রগুলোর জায়গা খালি করার উদ্দেশ্যে সেনাবাহিনীর সঙ্গে মিলে বন্দিদের ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। সংস্থাটি জানায়, ইসরাইলের বেসামরিক মানুষের ওপর হামলাকারী ‘সন্ত্রাসীদের ছেড়ে দেওয়ার বিরোধিতা করেছে’ তারা। তাই বন্দিদের মধ্যে যারা কম বিপজ্জনক, তাদের ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

গত ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরাইলে হামাস হামলা চালানোর পর থেকে দেশটি গাজায় ব্যাপক হামলা শুরু করে। এ সময় আল-শিফা হাসপাতালেও বেশ কয়েকবার বড় ধরনের হামলা চালিয়ে প্রায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত করে। নভেম্বের এ হাসপাতাল থেকেই আবু সালমিয়াকে ধরে নিয়ে যায় ইসরাইল।

গাজা থেকে আবু সালমিয়াসহ শীর্ষ অনেক চিকিৎসক ইসরাইলি বাহিনীর হাতে বন্দি হয়েছেন। খান ইউনিসের দ্য গাজা ইউরোপিয়ান হাসপাতাল কৃর্তপক্ষ জানায়, আজ যারা মুক্তি পেয়েছেন, তাদের মধ্যে এ হাসপাতালের অর্থোপেডিক বিভাগের প্রধান বাসাম মিকদাদও রয়েছে।

ইসরাইলের অভিযোগ, হামাস সামরিক অভিযানের মুখে গাজার হাসপাতাল ও অবকাঠামোগুলোকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছে।

গত মে মাসে ফিলিস্তিনি অধিকার সংগঠনগুলো বলেছিল, আটক অবস্থায় আল-শিফা হাসপাতালের একজন জ্যেষ্ঠ সার্জন নিহত হয়েছেন। তবে ইসরাইলের দাবি, তারা এ বিষয়ে কিছু জানে না।

৭ অক্টোবর ইসরাইলের ভূখণ্ডে ঢুকে হামাস যোদ্ধাদের হামলার মধ্য দিয়ে এ যুদ্ধ শুরু হয়। ইসরাইলের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে এএফপি জানায়, এ হামলায় প্রায় ১ হাজার ২০০ জন নিহত হন। অন্যদিকে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ইসরাইলি হামলায় অন্তত ৩৭ হাজার ৮৭৭ জন নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক মানুষ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *