অনলাইন ডেস্ক
দোনবাসের বিধ্বস্ত বাখমুত শহরে ওয়াগনার সেনাদের ফেলে পেছনে সরে গেছে রাশিয়ার সেনাবাহিনী। বৃহস্পতিবার এমন অভিযোগ করেছেন ওয়াগনারপ্রধান ইয়েভগিনি প্রিগোজিন। এতে ওয়াগনার সেনারা ঝুঁকিতে পড়ে গেছেন বলেও দাবি করেছেন তিনি।
প্রিগোজিন বলেছেন, ইউক্রেনের পূর্ব দিকের এ শহরের উত্তর দিক থেকে রুশ সেনারা ৫৭০ মিটার পিছিয়ে গেছেন। তবে পুতিনের শেফখ্যাত এ ওয়ার লর্ডের অভিযোগের সত্যতা যাচাই করা যায়নি। ইউক্রেনের বিধ্বস্ত শহরটি পুরোপুরি দখলে গত ১০ মাস ধরে চেষ্টা চালিয়েছে আসছে ভাড়াটে সেনাবাহিনী ওয়াগনার গ্রুপ। গত বছর ইউক্রেনে রাশিয়া হামলা করার পর সবচেয়ে বেশি রক্ত ঝরেছে এই শহরেই।
প্রিগোজিন গত কয়েকদিনে একাধিকবার অভিযোগ করেছেন, রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ও সেনারা তাঁকে প্রয়োজনীয় সহায়তা করছে না। তিনি বৃহস্পতিবার নতুন করে আকুতি জানিয়েছেন, তাঁর সেনাদের বাঁচাতে যেন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
এ ব্যাপারে এক অডিও বার্তায় প্রিগোজিন বলেছেন, দুর্ভাগ্যজনকভাবে, রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ইউনিট (সেনারা) বাখমুতের উত্তর দিকে ৫৭০ মিটার সরে গেছে। এটি আমাদের সৈন্য দলকে ঝুঁকিতে ফেলেছে।
এদিকে চলতি মাসে অর্থাৎ গত ১৮ দিনের মধ্যে নবমবারের মতো ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। কিয়েভের কর্তৃপক্ষ অবশ্য বলছে সবক’টি ক্ষেপণাস্ত্র লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করার আগেই আকাশে ধ্বংস করে দেওয়া গেছে। তবে বিধ্বস্ত ক্ষেপণাস্ত্রের ধ্বংসাবশেষ এসে পড়ায় রাজধানীর দুটো মহল্লায় কিছু ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। কৃষ্ণসাগর তীরবর্তী বন্দর শহর ওডেসাতেও রাতের বেলা ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত করেছে।
শহরের কর্মকর্তারা বলছেন, একজন নিহত এবং দু’জন আহত হয়েছেন। এছাড়া ক্রিমিয়ায় একটি খাদ্যশস্য ভর্তি মালবাহী ট্রেন লাইনচ্যুত হলে সেভাস্তোপোল থেকে আঞ্চলিক রাজধানী সিমফারোপোল পর্যন্ত রেল চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। রাশিয়া ২০১৪ সালে ক্রিমিয়া দখল করে অঞ্চলটিকে নিজেদের অংশ করে নেয়। অন্যদিকে কৃষ্ণসাগরে ইউক্রেনের খাদ্যশস্য চলাচলের চুক্তির মেয়াদ আরও ৬০ দিন বেড়েছে বলে জানিয়েছে তুরস্ক।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যে বিশ্বজুড়ে খাদ্যশস্য সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে ইউরোপ ও এশিয়ার সংযোগস্থল এই দেশটিই এই চুক্তির মধ্যস্থতা করছে। এছাড়া রাশিয়ার ছোড়া ৩০টি ক্ষেপণাস্ত্রের মধ্যে ২৯টি ভূপাতিত করার দাবি করেছে ইউক্রেন।
বৃহস্পতিবার ইউক্রেনের পক্ষ থেকে বলা হয়, গত বুধবার রাতে রাজধানী কিয়েভসহ অন্যান্য অঞ্চলকে নিশানা করে ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ছুড়েছিল রাশিয়া।
ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর ভাষ্য, গত রাতে রুশ দখলদার বাহিনী বিভিন্ন দিক থেকে দফায় দফায় ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে। স্থল, জল ও আকাশভিত্তিক মোট ৩০টি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়। ইউক্রেনের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা রাশিয়ার ছোড়া ২৯টি ক্ষেপণাস্ত্র আকাশেই ধ্বংস করে। খবর বিবিসি ও এএফপির