লুট করা অস্ত্রে প্রেমিকাকে হত্যা

আইন আদালত

অনলাইন ডেস্ক

মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে গুলিতে নিহত শাহিদা আক্তার (২২) অন্তঃসত্ত্বার জন্য প্রেমিক তৌহিদ শেখ (২৩)কে বিয়ে করতে চাপ প্রয়োগ করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়েই প্রেমিক তৌহিদ শেখ থানা লুট করা অস্ত্র দিয়ে গুলি করে হত্যা করে শাহিদাকে। সংবাদ সম্মেলনে এমন কথা জানান মুন্সীগঞ্জ পুলিশ সুপার মো. শামসুল আলম সরকার।

নিহত শাহিদা ময়মনসিংহের কোতোয়ালি থানার বেগুনবাড়ির বরিবয়ান এলাকার প্রয়াত আবদুল মোতালেবের মেয়ে। তিনি ঢাকার ওয়ারী থানার যুগীনগর এলাকায় ভাড়া বাড়িতে থাকতেন। গ্রেপ্তার প্রেমিক তৌহিদ শেখ তন্ময় রাজধানী ঢাকার ওয়ারীর বনগ্রাম এলাকার প্রয়াত শফিক শাহ’র ছেলে।

মঙ্গলবার দুপুরে মুন্সীগঞ্জে ক্লুলেস হত্যা মামলা নিয়ে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার বলেন, শাহিদাকে গুলি করে হত্যার বিষয়ে স্বীকারোক্তি দিয়েছে তৌহিদ শেখ। আমরা তাকে (তৌহিদকে) হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি।

তৌহিদ আমাদের জানিয়েছে, তার সঙ্গে শাহিদার দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কিন্তু তৌহিদ তার পরিবারের পছন্দের অন্য একটি মেয়েকে বিয়ে করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। প্রেমের সম্পর্কের পর তাদের মধ্যে দৈহিক সম্পর্কও ছিল। শাহিদা তৌহিদকে বলেছিল সে আড়াই মাসের অন্তঃসত্ত্বা। তবে শাহিদাকে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করছিল সে। এ বিষয়টি শাহিদা বুঝতে পেরে তৌহিদকে বিয়ের জন্য চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী গত শুক্রবার রাতে শাহিদাকে মুঠোফোনে ওয়ারীর বাড়ি থেকে মাওয়ায় ইলিশ খাওয়ার কথা বলে ডেকে আনে তৌহিদ। শাহিদাকে নিয়ে খাওয়া-দাওয়া শেষে রাতভর মাওয়া এলাকায় ঘোরাঘুরি করে।

শনিবার ভোরে শ্রীনগর দোগাছি এলাকার এক্সপ্রেসওয়েতে শাহিদাকে নিয়ে আসে তৌহিদ। সেখানেই তার সঙ্গে থাকা ওয়ারী থানা থেকে লুট করা পিস্তল দিয়ে শাহিদাকে গুলি করে হত্যা করে।

হত্যার পর তৌহিদ দোগাছি এলাকা থেকে ঢাকায় পালিয়ে যায়। পালিয়ে যাওয়ার আগে পিস্তলটি কেরানীগঞ্জের বটতলী বেইলি সেতুর নিচে ফেলে যায়। রবিবার তৌহিদ আত্মগোপনে ছিল।

পুলিশ সুপার আরও বলেন, তৌহিদ তার পরিবারের লোকজনের সহযোগিতায় সোমবার রাতে ঢাকা থেকে লঞ্চে করে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। ব্যাপক তদন্ত ও তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে আমরা বিষয়টি জানতে পারি। পরবর্তীতে ভোলার ইলিশাঘাট এলাকায় লঞ্চের কেবিনের ভেতরে ঘুমন্ত অবস্থায় তাকে গ্রেপ্তার করে আমাদের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)।

এর আগে গত শনিবার দুপুরে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের সমসপুর এলাকার দোগাছি সার্ভিস সড়ক থেকে শাহিদা আক্তারের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। লাশের পাশে কয়েকটি গুলির খোসা পড়ে ছিল। তার শরীরে আটটি গুলির ছিদ্র ছিল।

এ ঘটনায় শনিবার দিবাগত রাত ১২টার পর নিহত তরুণীর মা জরিনা বেগম বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করে মামলাটি করেন। পরে রোববার সকালে ওই মামলায় একমাত্র নাম উল্লেখ করে আসামি করা হয় তৌহিদকে। রবিবার রাতে ময়নাতদন্ত শেষে শাহিদার লাশ ময়মনসিংহের বরিবয়ান গ্রামে দাফন করা হয়।

মুন্সীগঞ্জ গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক ইশতিয়াক রাসেল জানান, আসামি তৌহিদকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। সেখানে সে ১৬৪ ধারায় হত্যাকাণ্ডের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *