এত লাফান লাফায়েন না!

খোলা কলাম রাজনীতি

শাওন মাহমুদ

এত ভালো ভালোনা।পাকিস্তান সৃষ্টির পর থেকেইকো তাদের মুরুব্বি তোমরা।তাদের অর্থনৈতিক এবং গণতান্ত্রিক উভয় প্রকার উন্নতিই আমরাতো বটেই এমনকি বিশ্ববাসী খেছে!  আমরা এও জানি তোমাদের ভালোত্বের অন্তরালের খায়েস।ভেবেছো- তাহারা অনেক বেশি বিরোধে জড়িয়ে পড়েছে। হয়তো পূর্বে টোপ না গিললেও এবার নিশ্চয়ই গিলবে।তাছাড়া শেখের বেটি মুক্তি যুদ্ধের ঘাতকদের বিচারের মাধ্যমে ফাঁসিতে ঝুলিয়েছে তখনও আমাদের ফোনের মর্যাদা রাখে নাই। তাই ভালো ভাবে টাইট করে ধরতে হবে এবার।ভিসার বিষয়টি যেকোনো ভাবে সামনে আনতে হবে।এটি উভয় পক্ষের(দেশের রাজনৈতিক পক্ষ) জন্য কাজে করবে।শেখের বেটি ক্ষমতার বিনিময়ে রাজি না হলে, অপর পক্ষকেও এই একই প্রস্তাবের মাধ্যমে রাজি করাতে হবে। প্রয়োজনে রেজিম চেঞ্জ! জামাত, তালেবান ব্যাপার না।

আমরা জানি রোহিঙ্গারা কাদের চোখটিপনীতে বাস্তু হারা হয়েছে। কারা বা, কাদের প্রতিনিধি নেপিডোতে এসে কি বলে ছিলো। আমাদের পত্রপত্রিকায় তার সব মুদ্রিত আছে। এখনো চীনের মধ্যস্থতায় দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় তোমরা রেরে করে উঠো, একধরনের ব্যর্থ প্রয়াস দেখ্।আমরা এও দেখছি, পাকিস্তান মায়ানমারের কাছে অস্ত্র বিক্রি করেছে, করেছে ভারতও। ইঙ্তিটা কাদের ছিলো? সঙ্গে তারা রাশিয়াকেও ঐ অঞ্চলের প্রতি লোভাতুর বলিয়া প্রচার করে থাকে।আর এসমস্ত নিয়ে তোমরা এমন ভাব ধরে থাকো যেনো এতে কোনোও মাধাব্যাথা নাই! তোমরা কত্তো ভালো! তোমরা কি এমনি এমনি মিয়ানমারের ঐ অঞ্চল দখল করে বাংলাদেশের অংশ করতে বলে? শুধু তা-ই না এই ভালোর তেজে অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে সহায়তাও করতে চেয়েছো(!) রোহিঙ্গাদের সেদেশে পাঠানোর কথা কিছুদূর অগ্রসর হলেই জাতি সংঘের (মার্কিন পাতা সংঘ) কিছু শাখা প্রশাখার প্রধানদের মাথায় বাজ পড়ে।এই বুঝি সমাধান হয়েগেল, সঙে গেল আমার ভবিষ্যত! এদের সাথে হাড়-হাড্ডি পাওয়া এনজিওরাও সমঝোতার বিরোধীতা করতে থাকে। যখন দেখছো এই করতে করতে সময় বয়ে যাচেছ। চীন যদি সত্যি সত্যি সমস্যার সমাধান করে তাহলে এতদিনের ইনভেস্ট বঙ্গপসাগরে ভেসে যাবে।তাই, অত্যন্ত দৃষ্টিকটুভাবে একটা স্বাধীন দেশের রাজনীতিকে জড়িয়ে নিজেদের খায়েস পুরণের চালবাজি শুরু করেছো।বলি, এদেশের নির্বাচনের দিকে নজর না দিয়ে তোমাদের দেশের ট্রামকে সামলাও।

কিন্তু ওরা ভুলে যায়, ৭১-এর কথা। ভুলে যায় ঘাতকদের  ফাঁসির রায় কার্যকর করার কথা। ভুলেযায় দেশের নেতৃত্বে এখন শেখের বেটি। আরেকটি বিষয় স্মরণ রাখতে বলবো- এদেশীয় কিছু মার্কিন পদলেহীদের, যারা এদেশ নিয়ে লম্বা-চৌড়া কথা বল্লেও স্বপ্নে যাদের দেশ মার্কিন তাদেরকে। মনে রাখবেন ১৯৭১ সালে চীন এবং মার্কিন এই দুই পরাশক্তিই ছিলো পাকিস্তানের পক্ষে এবং আমাদের বিরুদ্ধে! এখন মার্কিনীদের অন্যায় ভাবে আরোপিত বিভিন্ন বিধি নিষেধের বিপক্ষে সরকার কথা বল্লেই শিয়ালের মত ঝাঁকবেঁধে চেঁচামেচি করে উঠেন  দেশকে সরকার বিপদের দিকে নিয়ে যাচ্ছে ইত্যাতি ইত্যাদি।

শেষ পযর্ন্ত প্রকাশ্যেই এলো তাদের খায়েস। তাদের সঙ্গ চুক্তি সই করতে হবে, কায়াডে ঢুকতে হবে(?)।যার উত্তর  না-এর ফল স্বরূপ  এই, তেরা-বাকা ভিসা নীতি। আমাদের সেন্টমার্টিনে বসে আমাদের মাখার উপর ছটা ঘুরাবে। আর আমাদের দেশের কিছু লুটেরা, ধনিকশ্রেণির ভিসার বিনিময়ে যুদ্ধাসন পাতবে আমার দেশে আমরা এটা চাইনা। তোমার মুলুকে আমরা যাবোনা যাবোনা সাফ কথা।

বর্তমান পরস্থিতি যে অবস্থা, তাতে বাংলাদেশের অতীত অভিজ্ঞতার আলোকে গুরুত্বপূর্ণ পণ্য আমদানীর ক্ষেত্রে বাংলাদেশের কোনো ভাবেই মার্কিণ কোনো কোম্পানির উপর সম্পূর্ণ নির্ভরশীল হওয়া ঠিক হবে না। কারণ মার্কিংন কোম্পানি গুলি  যেকোনেও সময় বাংলাদেশকে ৭৪ সালের অবস্থায় ফেলতে পারে। আমাদের মনে রাখরেত হবে যে, ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশে যে দুর্ভিক্ষ হয়েছিল তা ছিল মানব সৃষ্ট। আরও স্পষ্টভাবে বললে মার্কিণ সৃষ্ট।মার্কিন থেকে আসা খাদ্য ভর্তি জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে না এসে, চলে গিয়েছিল তৃতীয় কোনো এক দেশে। ফলে যা হবার তাই হয়েছিলো। সুতরাং সাবধান বাংলাদেশ সরকার। মনে রাখতে হবে মার্কিনীদের অপসন্দের দেশ কিউবায় (বাংলাদেশের মিত্র) শুধু মাত্র পাট রপ্তানির জন্যে তাদের সেই অমানবিক, ঘৃণ্য ও জঘণ্য কাজের ফলে আমাদের দেশের হাজার হাজার মানুষ খাদ্যাভাবে মৃত্যু বরণ করেছিলো।তখনও ওদের পরিকল্পনায় ছিলো রেজিম চেঞ্জ।তৈরি করেছিলো বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পটভূমি। গণতন্ত্রের মুরুব্বি এই মার্কিন তখন কিন্তু সামরিক ক্যূঁদেতা জিয়াকে নিক্সন, কিসিঞ্জার চোখ বন্ধ করে স্বীকৃতি দিয়েছিলো। মিলিয়ে দেখুন তখন কারা সরকারের বিরোধীতায় ছিলো আর এখন কারা?

[১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ সম্পর্কে কিছু ঐতিহাসিক তথ্যঃ

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেলো ও ব্রিটিশ গবেষক আলেকজান্ডার ওয়ালের কথায়, ‘ওই সময় বাংলাদেশ আন্তর্জাতিকভাবে বিচ্ছিন্ন ছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র খাদ্যসাহায্য বন্ধ করে দেয়। আর সেটা ছিল হেনরি কিসিঞ্জারের নিষ্ঠুরতম সিদ্ধান্ত।)’রেহমান সোবহান যখন দুর্ভিক্ষের জন্য খাদ্য রাজনীতিকে দুষছেন, তখন এমা রথচাইল্ড (১৯৭৬) লিখছেন যে, কিউবার সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক রদ না করা পর্যন্ত মার্কিন খাদ্যবাহী জাহাজ বাংলাদেশে না পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়।

১৯৭৪ সালের ৬ জুন কিসিঞ্জার এক তার বার্তায় লিখেছেন, কিউবায় পাট রপ্তানির সিদ্ধান্ত বাংলাদেশ অবজারভার-এ ১৯৭৪ সালের ৪ মে প্রকাশিত হয়। এ থেকেই আমরা বিষয়টি সম্পর্কে প্রথম জানতে পারি।]

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *