মিয়ানমারের সহযোগিতা না পেলে অন্য পন্থাও আছে: আইসিসি প্রধান কৌঁসুলি

আন্তর্জাতিক

সুবর্ণবাঙলা প্রতিবেদন

আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) প্রধান কৌঁসুলি করিম আসাদ আহমাদ খান বলেছেন, রোহিঙ্গা গণহত্যার বিচার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করা হবে। এক্ষেত্রে মিয়ানমারের সহযোগিতা না পেলে তাদের কাছে অন্য পন্থাও রয়েছে।

করিম খান কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করে তাদের কাছ থেকে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর নির্মম নির্যাতনের বর্ণনা শোনেন। সেখান থেকে ফিরে শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে এক প্রেস বিফিংয়ে এসব কথা বলেন।

মিয়ানমার সরকারের সহযোগিতা না পেলে তদন্ত কিভাবে এগিয়ে নেবেন- সাংবাদিকরা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটি তদন্ত শেষ করার পথে বাধা হয়ে দাঁড়াবে না। আমাদের কাছে কাজ করার অন্য উপায়ও রয়েছে। সিএনএন’র সঙ্গে তার সাক্ষাৎকারের কথা উল্লে­খ করে করিম খান বলেন, ইউক্রেনের মামলা এবং রোহিঙ্গাদের মধ্যে বড় পার্থক্য হলো ‘অ্যাক্সেস’। তিনি বলেন, আমাদের ইউক্রেনে প্রবেশাধিকার আছে, কিন্তু মিয়ানমারে নেই।

করিম খান রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসা করে বলেন, তার নেতৃত্বের কারণেই রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়া হয়েছে এবং আন্তর্জাতিক আইন এখন তাদের সমর্থন করছে। তিনি বলেন, এটি এমন একটি বিষয় যার জন্য বাংলাদেশের গর্ব করা উচিত।

তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে তাদের তহবিল বাড়ানোর আহ্বান জানান যাতে রোহিঙ্গারা দিনে তিনবেলা খেতে পারে। তিনি বলেন, এটা খুবই দুঃখজনক যে, মার্চ পর্যন্ত রোহিঙ্গা এবং তাদের শিশুদের দিনে তিনবেলা খাবার দেওয়া হলেও এরপর তারা দুবেলা বা তারও কম খাচ্ছে। তাদের দেওয়া হয় ৯ টাকা। যেখানে বাংলাদেশে একটা ডিমের দামও ১২ টাকা। তিনি বলেন, এ বিষয়টি আমাদের সবার গভীরভাবে চিন্তা করা উচিত। রোহিঙ্গাদের দায়িত্ব একা বাংলাদেশের নয়, এটি সমগ্র বিশ্বের উদ্বেগের বিষয় হওয়া উচিত।

আরেক প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, তদন্তের কারণে রোহিঙ্গাদের ক্যাম্পে টার্গেট করা হয়েছে এমন কোনো তথ্য তাদের কাছে নেই। তিনি বলেন, ২০১৯ সাল থেকে যখন তদন্ত শুরু হয়েছিল, এমন কোনো ঘটনা আমাদের নজরে আসেনি যে আইসিসির কারণে কোনো ব্যক্তিকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে। কেউ আমাদের কাছে নিরাপত্তা চায়নি।

আইসিসির পরিদর্শন চলাকালেই ক্যাম্পের ভেতরে একজন রোহিঙ্গাকে হত্যা করা হয়েছিল। এতে জল্পনা শুরু হয়েছিল যে, যারা আইসিসির কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলছেন তাদের টার্গেট করা হচ্ছে।

করিম খান বলেন, ক্যাম্পে সন্ত্রাসের কোনো স্থান নেই। কিন্তু রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা তার দায়িত্ব নয়। তিনি বলেন, জাতিসংঘ, বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ এবং অন্যান্য সংস্থা এ বিষয়ে কাজ করছে। তিনি আগামী বছরও বাংলাদেশে আসবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *