সুবর্ণবাঙলা মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি
বিকাশ প্রতারক চক্রের খপ্পরে পড়ে ৪৫ হাজার টাকা গচ্চা দিয়েছেন মানিকগঞ্জ পুলিশ সুপার কার্যালয়ে কর্মরত এক নারী উপপরিদর্শক (এসআই)।
ওই নারী পুলিশের দায়ের করা মামলার সূত্র ধরে বিকাশের কর্মকর্তা সেজে প্রতারক চক্রের চার সদস্যকে গ্রেফতার করেছে মানিকগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
শনিবার সকালে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় মাগুরার শ্রীপুর উপজেলা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- শ্রীপুর উপজেলার বরিশাট এলাকার মো. রাজু মোল্লা (৪১), একই এলাকার মফিজুর রহমান (৪০), তিতাস মিয়া (২৩) এবং একই উপজেলার বাড়ইপাড়া এলাকার খালিদ হাসান ওরফে মিঠু (৪০)।
মামলার এজাহার এবং জেলা ডিবির কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে কর্মরত রয়েছেন উপপরিদর্শক (এসআই) সঞ্চিতা মণ্ডল (৩২)। গত ৪ এপ্রিল বিকাল পৌনে ৪টার দিকে প্রতারক চক্রের এক সদস্য মোবাইল ফোন থেকে এসআই সঞ্চিতা মণ্ডলের নম্বরে কল করে বলেন, তার (সঞ্চিতা) বিকাশ নম্বরে ২৪ হাজার ৫০০ টাকা ভুলে পাঠিয়েছেন। প্রতারক চক্রের ওই সদস্য সেই টাকা তার বিকাশ নম্বরে পাঠানোর কথা বলেন। এরপর সঞ্চিতা তার বিকাশ নম্বর দেখে প্রতারককে জানান, তার বিকাশ নম্বরে কোনো টাকা যোগ হয়নি।
পরে ওই প্রতারক সঞ্চিতাকে বলেন, তার বিকাশ নম্বরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে, কিছুক্ষণ পর বিকাশের প্রধান কার্যালয় থেকে তাকে মোবাইলে কল করা হবে। এরপর বিকাল পৌনে ৫টার দিকে বিকাশের প্রধান কার্যালয়ের কর্মকর্তা পরিচয়ে সঞ্চিতাকে জানানো হয়, তার বিকাশ অ্যাকাউন্টটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
পরে প্রতারকের কথামতো বিকাশ অ্যাকাউন্ট সচল করতে তিনি মানিকগঞ্জ জেলা শহরের একটি এজেন্টের বিকাশ নম্বর থেকে প্রতারকের দেওয়া নম্বরে ২৪ হাজার ৫০০ টাকা পাঠান। প্রতারক চক্রের কথামতো তিনি আরও ২০ হাজার ৫০০ টাকা পাঠান। পরে আরও ২০ হাজার ৫০০ টাকা পাঠানোর কথা বললে প্রতারণার ফাঁদে পড়েছেন বলে তার সন্দেহ হয়।
এ ঘটনায় শুক্রবার সঞ্চিতা অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে মানিকগঞ্জ সদর থানায় মামলা করেন। এরপর নড়েচড়ে বসে পুলিশ। মামলার পর দিন শনিবার সকালে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় শ্রীপুর বাজার থেকে বিকাশ প্রতারক চক্রের ওই চারজনকে গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ।
জেলা ডিবির পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মোশাররফ হোসেন বলেন, গ্রেফতারকৃত আসামিরা সংঘবদ্ধ বিকাশ প্রতারক চক্রের সক্রিয় সদস্য। বিকাশ প্রতারণার বিষয়টি ‘টোপ’ নামে পরিচিত। দুপুরে গ্রেফতারকৃত আসামিদের আদালতে হাজির করা হলে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।