আবারও ড্রোন হামলা মস্কোয়

আন্তর্জাতিক

অনলাইন ডেস্ক

রাশিয়ার রাজধানী মস্কোর কেন্দ্রে দুটি ভবনে এবার ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন। সোমবার ভোরে ওই হামলায় একটি বহুতল ভবনের ওপরের অংশ ধ্বংস হয়ে গেছে। অন্য ভবনটিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া রাশিয়ার অধিকৃত ক্রিমিয়া দ্বীপে অন্তত ১৭টি ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন। এসব ড্রোনের কয়েকটি আঘাত হেনেছে গোলাবারুদ ডিপোতে। এদিকে, মস্কোর দুই ভবনে হামলাকে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড উল্লেখ করে এর কঠোর জবাব দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে মস্কো। খবর সিএনএন ও আলজাজিরার।

রোববার ইউক্রেনের ওডেসায় কৃষ্ণসাগর বন্দরে ভয়াবহ রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় একটি গির্জা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর প্রতিশোধ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। এর এক দিন পরই খোদ মস্কোতে হামলা হলো। তবে রুশ কর্তৃপক্ষের দাবি, প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে ওই ড্রোন দুটি ধ্বংস করা হয়েছে।

একটি ভিডিওতে দেখে যায়, গতকাল ভোরে মস্কোর আকাশে উড়ছে একটি ড্রোন। খানিক পরই তা আঘাত হানে লিখাচেভা অ্যাভিনিউতে একটি বহুতল বাণিজ্যিক ভবনে। সড়কের পাশের ভবনটির ওপরের কয়েক তলায় এ সময় আগুন ধরে যায়। রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখা যায় ধ্বংস্তূপ।

এ বিষয়ে মস্কোর মেয়র সের্গেই সোবিয়ানিন টেলিগ্রামে বলেন, হামলায় কোনো গুরুতর ক্ষয়ক্ষতি বা হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। ইউক্রেনকে দায়ী করে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, কিয়েভ সরকারের সন্ত্রাসী হামলার চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। দুটি ড্রোনই ধ্বংস করা হয়েছে।

হামলার বিষয়ে স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, তিনি ঘুমিয়ে ছিলেন। বিস্ফোরণের শব্দে তাঁর ঘুম ভাঙে। পলিনা নামের ওই ব্যক্তি বলেন, সব কিছু কাঁপতে শুরু করে। মনে হলো, পুরো বিল্ডিং ধসে পড়ছে। তিনি পাশের ভবনে ছিলেন।

এ ঘটনার পর রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বিবৃতিতে বলেছে, মস্কোতে ড্রোন হামলার জবাবে দেশটি কঠোর প্রতিশোধ নেবে। এই হামলার কোনো সামরিক অর্থ ছিল না। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে বিষয়টি দেখার আহ্বান জানানো হয়। ইউক্রেনের এ ধরনের হামলা পরিস্থিতিকে আরও খারাপ করতে পারে। তবে কিয়েভের কর্মকর্তারা এই দাবি অস্বীকার করেছেন।

একই দিন রাশিয়া অধিকৃত ক্রিমিয়ার দিকে ১৭টি ড্রোন উৎক্ষেপণের জন্য ইউক্রেনকে দায়ী করেছে রাশিয়া। ড্রোনগুলো বিমান প্রতিরক্ষার মাধ্যমে ভূপাতিত করা হয়েছে বলেও দাবি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের।

এদিকে, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন বলেছেন, রাশিয়া দখল করা এলাকার প্রায় ৫০ শতাংশই পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে ইউক্রেন। এখন কিয়েভ আরও বেশি পুনরুদ্ধারের কঠিন লড়াইয়ে অবতীর্ণ হয়েছে। গত রোববার সিএনএনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, পাল্টা আক্রমণ এখনএ প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। এটি পুরোপুরি শুরু হতে আরও কয়েক মাস লাগতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি এফ-১৬ যুদ্ধবিমান ইউক্রেন পাবে জানিয়ে এই মার্কিন কর্মকর্তা আরও বলেন, বিমানগুলো চালনায় প্রশিক্ষণ, স্মার্টভাবে ব্যবহার ও সংরক্ষণ নিশ্চিত করা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। অন্যদিকে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, কৃষ্ণসাগর শস্যচুক্তি অর্থ হারিয়েছে। তিনি বলেন, শস্যচুক্তির ধারাবাহিকতা এটির মানবিক উদ্দেশ্যকে ন্যায্যতা দেয়নি। চুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়ে রাশিয়ার শর্ত উপেক্ষা করা হয়েছে– এমন অভিযোগ তুলে গত সপ্তাহে চুক্তি থেকে বেরিয়ে যায় মস্কো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *