পিএসসিতে রপ্তানির সুযোগ রেখে এক মাসের মধ্যে দরপত্রের উদ্যোগ

জাতীয় বিদ্যুত ও জ্বালানি

সুবর্ণবাঙলা অনলাইন ডেস্ক

সমুদ্রে তেল, গ্যাস অনুসন্ধানে উৎপাদন মালিকানা চুক্তি-পিএসসিতে রপ্তানির সুযোগ রেখে এক মাসের মধ্যে দরপত্র আহ্বান করবে সরকার।

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ জানিয়েছেন, অনুসন্ধানে বিদেশি কোম্পানি ও দেশের স্বার্থ দুটোর সমন্বয়ে এবার পিএসসি নির্ধারণ করা হয়েছে।

পিএসসিতে বিদেশি কোম্পানির সুবিধা কম থাকায় এর আগে কেউ অনুসন্ধানে আগ্রহ দেখায়নি। তাই এবারের পরিবর্তনকে ইতিবাচক বলছেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা।

ভারত ও মিয়ানমারের সাথে সমুদ্রসীমা নির্ধারনের পর সমুদ্রে তেল গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য একাধিক বিদেশি কোম্পানিকে কাজ দিলেও শেষ পর্যন্ত কাজ করেনি। পরে সরকার পিএসসি সংশোধন করে। এরই মধ্যে অর্থনীতি বিষয়ক মন্ত্রিসভা কমিটি তা অনুমোদনও করেছে।

সমুদ্রে অনুসন্ধানের জন্য এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের এক্সন মবিলসহ একাধিক বিদেশি কোম্পানি এরইমধ্যে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

জ্বালানি সচিব মো. খায়েরুজ্জামান জানিয়েছেন, একমাসের মধ্যে দরপত্র আহবান করা হবে। তিনি বলেন, ‘সর্বোচ্চ এক মাসের মধ্যে বিডিংয়ে যাওয়ার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা গ্রহণ করেছি। আমাদের অনুমান এবার যথেষ্ট পরিমাণ সাড়া পাওয়া যাবে। এরইমধ্যে আমরা তাদের আগ্রহের বিষয়ে আভাস পেয়েছি।’

এ বিষয়ে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ জানান, চুক্তি অনুযায়ী সমুদ্রে তেল গ্যাস পেলে সরকার তার পাওনা বুঝে নেবে। আর বিদেশি কোম্পানির অংশের তেল গ্যাস সরকার না কিনলে তখন তা রপ্তানি করতে পারবে।

নসরুল হামিদ বলেন, ‘রিাটার্ন অব ইনভেস্টমেন্টকে ধরে তারা একটা শেয়ার পাবে। সে গ্যাসে আমাদের প্রায়োরিটি। আমরা কিনতে চাইলে কিনবো। একটা প্রাইস ফিক্স করা আছে। ফরমুলা দেয়া আছে। যদি আমরা না কিনি তবে তারা বাইরে বিক্রি করবে। সব পিএসসিতেই এটা আছে।’

বিদেশি কোম্পানির জন্য সুযোগ বাড়িয়ে হলেও গ্যাস অনুসন্ধান জরুরি বলে জানান ভূতত্ত্ব বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক বদরুল ইমাম।

তিনি বলেন, ‘অন্যান্য দেশের ক্ষেত্রে যেরকম, সে অনুযায়ী কিছু পরিবর্তন করার দরকার ছিলো। আমার মনে হয় চেঞ্চটা কোনো কোনো ক্ষেত্রে বেশি হয়ে গেছে। তবে এটা ঠিক বেশি হওয়াটা একদিকে ভালো। আপনি ইনিশিয়ালি আইওসিদের এট্রাক্ট করে ফেলেন। এরপর আপনি শক্তি লাইনে যান। কিন্তু আপনি যদি তাদের নিয়ে আসতে চান, তাহলে শিথিল করে নিয়ে আসেন। তার পরে যখন একটা ডিসকোভারি হয়ে যাবে, তখন শর্ত শক্ত করে দেন।

এসব কাজ আমলাতান্ত্রিক জটিলাতা মুক্ত রাখা জরুরি বলেও মনে করেন তিনি।

আন্তর্জাতিক আদালতে ২০১২ সালে মিয়ানমার ও ২০১৪ সালে ভারতের সঙ্গে সমুদ্র সীমানা বিরোধ নিষ্পত্তির পর সর্বমোট ১ লাখ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গকিলোমিটারের বেশি সমুদ্র অঞ্চলের ওপর মালিকানা নিরঙ্কুশ হয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত সাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধান নিয়ে কার্যকর কোনো অগ্রগতি নেই।

২০১২ সালের পিএসসির মাধ্যমে কাজ করার সব আয়োজন এগিয়ে নেয়া হলেও চারটি বিদেশি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে তিনটি পরে চলে যায়।

২০১৯ সালে আরেকটি ‘মডেল পিএসসি’ তৈরি করা হলেও তা লাভজনক না হওয়ার শঙ্কা এবং নানা কারণে আন্তর্জাতিক কোম্পানিগুলো বঙ্গোপসাগরে গ্যাস অনুসন্ধানের কাজে আগ্রহী হয়নি।

গত ২৬ জুলাই অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি মডেল পিএসসি-২০২৩ অনুমোদন দেয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *