তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবী ও বাংলাদেশের নষ্ট বুদ্ধিবৃত্তিক সমাজ

খোলা কলাম

শাওন মাহমুদ

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবীদারদের কাছে যদি প্রশ্ন করাহয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার কি গণতাত্রিক? নিশ্চয়ই উত্তর হবে না। তা হলে কেন তারজন্য এত চিৎকার চেঁচামেচি। আর যদি উত্ত্র হ্যাঁ হয় তাহলে, সে সরকার কেন পাঁচ বছর মেয়াদি হবে না? এত গ্রহণ যোগ্য মানুষেরা মাত্র কয়েক মাসের জন্য ক্ষমতায় এসে আপনারা যারা রাজনীতি করেন সেই অবিশ্বাসীদের(যে জন্যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবী করে থাকেন) কেন দেশের টাকা নষ্ট করে ক্ষমতায় বসাবে? আমরা জানি, গনতান্ত্রীক সরকার গঠনের এক মাত্র পদ্ধতি হচ্ছে নির্বাচন। সেই নির্বাচনকে কিভাবে স্থায়ীভাবে বিতর্কহীন করা যায়, সে লক্ষ্যে কোনো দাবী বা, আলোচনা সমালোচনায় না এসে, কেন একটা অগনতান্ত্রীক পন্থার জন্য এত জোড়াজোড়ি? তথাকথিত বুদ্ধিজীবীদেরও এই বিষয় নিয়ে তেমন সরব দেখা যায়না। দুঃখজনক হলেও সত্য রাজনৈতিক দলগুলো সুদীর্ঘ সময় ধরে এ পযর্ন্ত একটাও জনস্বার্থসম্পৃক্ত বিষয় কিবা, দেশের স্বার্থসংশ্লীষ্ট বিষয় নিয়ে জনগনের সামনে শক্ত কেনো কর্মসূচি নিয়ে আসতে পারেনি। বিদেশে টাকা পাচার, রডের জায়গায় বাঁশের ব্যবহার অর্থাৎ সরকারী কাজের ক্ষেত্রে (ঠিকাদারের)অনিয়ম ইত্যাদি ইস্যু তাদের চোখে পড়েনি।কারণ হয়তো ঐসব লুটেরারা ক্ষমতার ভিতর-বাহিরের উভয়েরই।দ্বৈত নাগরীকদের রাজনৈতিক অধিকার নিয়ে কথা হয়না!

শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোরও কোনো পরামর্শ, পদ্ধতি নিয়ে ভাবনা চিন্তা দেখা যায়না। নির্বাচন কমিশন রাষ্ট্রের একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান্। নির্বাচন কালে এই স্থায়ী প্রতিষ্ঠানকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ন্যায় ক্ষমতাশালী কিভাবে করা যায়, সেই পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা, দাবীদাওয়া ইত্যাদি নিয়ে বিরোধীরা সরব হতে পারতেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় বিরোধীদের টার্গেট ঐ একটাই। অগণতান্ত্রীক পদ্ধতির মাধ্যমে নির্বাচন করিয়ে ক্ষমতায় আসা।

পর্দার আঁড়ালে ষড়যন্ত্র ও বিদেশি শক্তির উপর ভর করে ক্ষমতায় আসার পথ খোঁজা বাদ দিয়ে, বৃহৎ জনশক্তির উপর আস্থা না রাখতে পারলে তারা কি করে গনতন্ত্রে বিশ্বাসী হয় আমার বোধগম্য হয় না।

সব দলেরই কিছু তথাকথিত উকিল ব্যারিস্টার টকশোতে এসে পুরো দেশটাকে আদালতের কক্ষ মনে করেন এবং সে মোতাবেক কথা ও তর্কের মাধ্যমে মানুষের মনে গণতন্ত্রকে এমন দৃশ্যে পরনিত করেছেন যে, এখানে আপোষ বা সহনসীলতা বলতে কিছু নাই। কথার পৃষ্ঠে কথা বলে নিজেদের কুটবুদ্ধির প্রসংশা আদায় করাই মূল লক্ষ্য।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *