সুবর্ণবাঙলা ডেস্ক
বাংলাদেশকে প্রবৃদ্ধি সহায়ক সংস্কারে মনোনিবেশ করার পরামর্শ দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। এজন্য কঠোর আর্থিক নীতিমালা প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশে আইএমএফ মিশনপ্রধান রাহুল আনন্দ। তিনি বলেছেন, একই সঙ্গে বৈদেশিক মুদ্রার চাপ কমাতে আরও নমনীয় বিনিময় হার ব্যবস্থা প্রয়োজন।
শুক্রবার ওয়াশিংটন থেকে ভার্চুয়ালি প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন। আইএমএফের নির্বাহী বোর্ডের প্রথম পর্যালোচনা শেষে ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারের ঋণের দ্বিতীয় কিস্তির প্রায় ৬৮৯ মিলিয়ন ডলার অনুমোদনের দুদিন পর তিনি এ কথা জানালেন।
ব্রিফিংয়ে রাহুল আনন্দ বলেন, আমি আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি, বেশিরভাগ কর্মসূচির লক্ষ্যমাত্রা ও সংস্কারে প্রতিশ্রুতি পূরণ করা হয়েছে। কঠিন সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিবেশ সত্ত্বেও সামগ্রিক কর্মসূচির কর্মক্ষমতা সন্তোষজনক হয়েছে।
এ প্রচেষ্টার জন্য সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, কোভিডের পর থেকেই মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ ভালো করছে। কিন্তু রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর সেই লাগাম ছুটে যায়। এরপর ব্যাংক সুদহারের সীমা তুলে নেওয়ার পর থেকে পরিস্থিতি বদলাচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংক এরই মধ্যে সুদহারের সীমা তুলে নিয়েছে। ফলে নতুন ঋণের ক্ষেত্রে সুদ এখন ১১ শতাংশের বেশি। এই কঠোর অবস্থা কিছুদিন বহাল রাখতে হবে। এটি আমাদের পরামর্শ ছিল। কিন্তু খেয়াল রাখতে হবে, এই চড়া সুদহারের সময় যেন আবার মূল্যস্ফীতি বেড়ে না যায়। অর্থাৎ মুদ্রানীতি আরও সঙ্কোচন করতে হবে বলে জানান রাহুল আনন্দ।
এ সময় বাংলাদেশকে সামনে এগিয়ে যেতে কয়েকটি ক্ষেত্রে মনোনিবেশ করতে হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। প্রথমত, কর রাজস্ব বৃদ্ধি ও অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমাতে হবে। তাহলে কর্তৃপক্ষ সামাজিক উন্নয়ন ও জলবায়ু খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে পারবে। ব্যয় দক্ষতা বৃদ্ধি ও আর্থিক ঝুঁকি কমাতে জনসাধারণের আর্থিক ও বিনিয়োগ ব্যবস্থাপনা বাড়ানোর প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকতে হবে।
দ্বিতীয়ত, আর্থিক নীতি কাঠামো আধুনিক ও নীতি সঞ্চালন উন্নত করতে হবে। তাহলে সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বাড়াবে। বিনিময় হার কাঠামো আধুনিক ও রিজার্ভ ব্যবস্থাপনা জোরদার করতে আরও সংস্কার বাহ্যিক স্থিতিস্থাপকতা বৃদ্ধি করবে।
তৃতীয়ত, ব্যাংকিং নিয়ন্ত্রণ, তদারকি ও সুশাসন জোরদারের মাধ্যমে আর্থিক খাতের দুর্বলতা মোকাবিলায় সংস্কারের দিকেও মনোনিবেশ করা উচিত।
আইএমএফের এশীয় ও প্যাসিফিক বিভাগ আয়োজিত এ সংবাদ সম্মেলনের আগে বাংলাদেশের ওপর কান্ট্রি রিপোর্ট প্রকাশ করে আইএমএফ। ওই রিপোর্টে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি, চ্যালেঞ্জ, সম্ভাবনা এবং করণীয় বিষয়ে বিস্তারিত পর্যালোচনা রয়েছে। ভার্চুয়ালি সংবাদ সম্মেলনে অন্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে বাংলাদেশে আইএমএফের প্রতিনিধি জয়েন্দু দেও সংযুক্ত ছিলেন।