নববধূর রহস্যজনক মৃত্যু, পরিবারের দাবি ‘জিনে’ হত্যা করেছে

জাতীয় মফস্বল

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

তৌহিদ মিয়া ও খাদিজা

মেহেদীর রঙ মোছার আগেই রহস্যজনকভাবে নববধূ খাদিজার (১৮) জীবন প্রদীপ নিভে গেল। স্বামীর পরিবারের দাবি- বাথরুমে জিনে ওই নবধূকে হত্যা করেছে। উপজেলা সদরের থানাপাড়ার সোহেল মিয়া ও পাপিয়া দম্পতির দত্তক ছেলে দশম শ্রেণির ছাত্র তৌহিদ মিয়ার স্ত্রী খাদিজা। রোববার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে বাসার বাথরুম থেকে গলায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় খাদিজাকে উদ্ধার করা হয়। পরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনার পর হাসপাতালে মৃতদেহ ফেলে সোহেল মিয়া ও তার দত্তক ছেলে পালিয়ে যায়।

আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় সোহেল মিয়া মোবাইল ফোনে এ প্রতিনিধিকে জানান, এটা খুব স্বাভাবিক ঘটনা। খাদিজা তার ফুপাতো ভাইয়ের মেয়ে। মেয়েটির ঘাড়ে জিনের আছর ছিল। জিনেই তাকে হত্যা করে রেখে গেছে।

এদিকে খাদিজার বাবা ইলিয়াস মজমাদার জানান, অষ্টম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় তিন মাস আগে তার মেয়ে খাদিজার বিয়ে হয়। তার মেয়ের কোনো রোগ ছিল না। বিকালে মেয়ে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে ফোনে জানানো হয়। তিনি এই হত্যাকাণ্ডের সুষ্ট তদন্ত ও বিচারের দাবি জানান।

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, খাদিজা পাবনার ঈশ্বরদীর ইলিয়াস মজমাদারের মেয়ে। তিন মাস আগে পারিবারিকভাবে তাদের বিয়ে হয়।

প্রতিবেশীরা জানায়, কয়েক মাস আগে তৌহিদ তার এক সহপাঠিকে নিয়ে পালিয়ে যায়। বিষয়টি চাপা রেখে তিন মাস আগে পারিবারিকভাবে খাদিজার সঙ্গে বিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু তৌহিদ তার আগের প্রেমিকার সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলছিল। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রতিদিন দ্বন্দ্ব লেগেই থাকত।

খাদিজার দত্তক শাশুড়ি পাপিয়া খানম জানান, তার ছেলে ঘরে ঘুমিয়ে ছিল। এ সময় খাদিজা বাথরুমে গোসল করতে ঢোকে। দেরি দেখে তারা ডাকাডাকি করে কিন্তু ভেতর থেকে সাড়া না পেয়ে দরজা ভেঙে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়।

তৌহিদ জানান, সোমবার তাদের ঈশ্বরদী যাওয়া কথা ছিল। সারাদিন খাদিজা তার ঘরে শুয়ে ছিল। গোসলে যাওয়া কথা বলে বেরিয়ে যায়। পরে তাকে বাথরুম থেকে গলায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. সুস্মিতা সরকার জানান, খাদিজাকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্নের জন্য পুলিশকে জানানো হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *