সুবর্ণবাঙলা প্রতিনিধি
বাগেরহাটের রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কর্মকর্তাকে ফাঁদে ফেলে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ এক নারীসহ ৮ প্রতারককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। প্রেমিকা টিনাকে সঙ্গে নিয়ে চক্র তৈরি করে নারীদের দিয়ে বিভিন্ন মানুষকে প্রেমের ফাঁদে ফেলত প্রতারক শাহীন শেখ।
মঙ্গলবার গভীর রাতে উপজেলার শ্রীফলতলা নামক স্থানে অভিযান চালিয়ে এদের গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত মোটরসাইকেল ও নগদ টাকা উদ্ধার করে পুলিশ। বুধবার বিকালে তাদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
আটককৃতরা হলেন- উপজেলার মো. শাহীন শেখ (২২), সুরাইয়া আক্তার টিনা (১৮), মো. রমজান শেখ (১৭), মো. আব্দুল্লাহ শেখ (২০), আসলাম মোল্লা আকাশ (২০), ইমন শেখ (১৭),ফেরদৌস হাসান জয় (১৭) ও সিয়াম (১৮)।
পুলিশ জানায়, প্রতারক শাহীন শেখ মোবাইল ফোন ব্যবহার করে কথিত প্রেমিকা টিনাকে সঙ্গে নিয়ে একটি প্রতারক চক্র গড়ে তোলে। তারা ওই নারী সদস্যকে দিয়ে বিভিন্ন লোককে প্রেমের ফাঁদ ফেলত। একপর্যায়ে তারা রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে কাজ করা পাওয়ার মেক লিমিটেড কোম্পানির ম্যানেজার আদিল মাহামুদকে ফাঁদে ফেলে। গত ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে কল দেয়। ওই সময় তাকে খুলনা মোংলা মহাসড়কের ভেকটমারী বেলাই ব্রিজের কাছে আসতে বলে।
আদিল মাহামুদ সেখানে গেলে তাকে বেঁধে মাহিন্দ্র গাড়িতে করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। এরপর তাকে হত্যার হুমকি দিয়ে মারপিট করে। একপর্যায়ে তার কাছে থাকা নগদ টাকা, মোটরসাইকেল, এটিএম কার্ড ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। এরপর তারা আদিলের বাড়িতে ফোন করিয়ে কয়েক দফায় বিকাশ ও রকেট অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে প্রায় ৮০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়।
এদিন গভীর রাতে তাকে চোখ বেঁধে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে ছেড়ে দিয়ে আরও ৬ লাখ টাকা দাবি করে। পরবর্তীতে গত ১৬ জানুয়ারি সকাল ৮টায় আদিল মাহামুদ ফয়লা গিয়ে মাহিন্দ্র চালককে চিনতে পেরে তার মাধ্যমে আসামিদের শনাক্ত করেন।
রামপাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সোমেন দাস বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আটক প্রতারক চক্র বিভিন্নভাবে ফেসবুকের মাধ্যমে টার্গেট করে প্রেমের ফাঁদে ফেলে সহজ-সরল মানুষদের কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায় করে আসছিল। আদিল মাহামুদের অভিযোগের সত্যতা পেয়ে প্রতারক চক্রের ৮ সদস্যকে আটক করা হয়েছে। তাদের আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। এছাড়া এই চক্রের ৩-৪ জন পলাতক রয়েছে। তাদের আটকের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে।